মামলার খোঁজ-খবর নিতে বেশ কয়েকবার থানায় আসার সুবাদে কুমিল্লায় এক প্রবাসীর স্ত্রীকে দীর্ঘদিন ধরেই খারাপ প্রস্তাব দেয়ার অভিযোগে উঠেছে পুলিশের দুই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। আর এ ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই গোটা এলাকাজুড়ে বইছে বেশ শোরগোল। এদিকে জানা গেছে, অনৈতিক প্রস্তার ও নির্যাতনের অভিযোগে মেঘনা থানার ওসি মো. ছমি উদ্দিনের ওসি ছমি উদ্দিনকে প্রধান আসামি এবং উপপরিদর্শক (এসআই) মোশারফ হোসেনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেছেন ভুক্তভোগী ঐ নারী।
কুমি’ল্লার নারী ও শি’শু নি”র্যা”ত’ন দমন ট্রাইব্যুনাল-৩ এর বিচারক মোয়াজ্জেম হোসেন মামলাটি তদন্তের জন্য সহকারী পুলিশ সুপার পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলায় ভুক্তভোগী নারী উল্লেখ করেন, জমি সংক্রান্ত বিরোধের মামলার বিষয়ে খোঁজখবর নিতে তিনি একাধিকবার থানায় গিয়েছিলেন। এর ভিত্তিতে ওসি ছমি উদ্দিন ও এসআই মোশাররফ প্রায়ই তাকে ফোন করতেন। একপর্যায়ে ওসি ছমির তাকে মেঘনা রিসোর্টে সময় কাটানোর প্রস্তাব দেন। এসআই মোশাররফও প্রায়ই ফোন করে অনৈতিক প্রস্তাব দিতেন। তারা ফোন ও হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে কল করত। ওই নারীর অভিযোগ, প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় দুজনেই তার ওপর ক্ষুব্ধ ছিলেন।
অভিযোগে বলা হয়, গত ২৬ আগস্ট ওই নারীর বোনের স্বামীকে গ্রেপ্তার করতে যান ওসি ছমি উদ্দিন ও এসআই মোশাররফ। ওই দিন মামলার ওয়ারেন্ট দেখতে চাইলে এসআই মোশাররফ তাকে থানায় নিয়ে আসেন। পরে রাত সাড়ে ৯টার দিকে তাকে ওসির কক্ষে নিয়ে যাওয়া হয়। এ সময় ওসি রুমের দরজা বন্ধ করে তার সঙ্গে দু’র্ব্য’বহার করেন এবং চিৎকার করলে তাকে নানান হু’মকি দেন। ওসিকে বাধা দিতে গেলে তাকে চ’ড়, থা’প্প’ড় ও লা”থি ‘মা”রা’ হয়। এসময় ওই নারী চিৎকার শুরু করলে এসআই মোশাররফ তার গ”লা চে”পে ধরে’ন। পরে দুই পুলিশ কর্মকর্তা তাকে আবারও অ’নৈ’তি’ক প্র’স্তাব দেন। কিন্তু তিনি রাজি হননি।
ভুক্তভোগী ওই নারী অভিযোগে উল্লেখ করেছেন যে তার ফোন রিসেট করা হয়েছে। যাতে পুলিশ কর্মকর্তাদের প্রমাণ এতে না থাকে। এ ছাড়া তার বিরুদ্ধে সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগ এনে মামলা করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। আট দিন কারাগারে থাকার পর জামিনে বেরিয়ে এসে মামলার প্রস্তুতি নেন এবং মামলা করেন।
এ ব্যাপারে আসামি মেঘনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ছমি উদ্দিন বলেন, ওই নারী খুবই ক্ষুব্ধ। আমরা আসামিকে গ্রেপ্তার করতে গেলে সে ওয়ারেন্ট চায়। পরোয়ানা দেখিয়েও তিনি আমাদের আসামি আনতে দেননি। পরে সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। তার অভিযোগ মিথ্যা ও বানোয়াট।
এসআই মোশাররফ বলেন, তিনি যা করেছেন তার ভিডিও রেকর্ড আমাদের কাছে আছে। আমরা তাকে একজন মহিলা কনস্টেবলের সাথে ধরেছি। আমি তাকে কোনো অনৈতিক প্রস্তাব দেইনি। সে খুবই উগ্র। মামলায় তিনি মিথ্যা অভিযোগ করেছেন।
এ বিষয়ে কুমিল্লার পুলিশ সুপার আব্দুল মান্নানের সঙ্গে কথা হলে তিনি সংবাদ মাধ্যমকে নিশ্চিত করে জানান, ইতিমধ্যে এ অভিযোগের ব্যাপারে তিনি অবগত হয়েছেন। তবে এখন পর্যন্ত কোর্ট থেকে কোনো কাগজপত্র পাননি বলেও জানিয়েছেন তিনি।