Friday, March 24, 2023
বাড়িopinionবাংলাদেশে সংবাদপত্রের ফ্রিডম আছে কি না জানতে মার্কিনিদের নেতৃত্বে নয়টি দেশের একটি...

বাংলাদেশে সংবাদপত্রের ফ্রিডম আছে কি না জানতে মার্কিনিদের নেতৃত্বে নয়টি দেশের একটি কোয়ালিশন তৈরি : শামসুল

Ads

এবার বাংলাদেশের সংবাদপত্রের স্বাধীনতা আছে কিনা সেটা খতিয়ে দেখার জন্য চেষ্টা করছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইতিমধ্যে তারা একটি কোয়ালিশন তৈরী করেছে এই বিষয়টি জানার জন্য। সামাজিক যোগাযোগ মাধম্যে এই বিষয়টি নিয়ে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন লেখক শামসুল আলম। নিচে সেটি তুলে ধরা হল-

বাংলাদেশে সংবাদপত্রের ফ্রিডম আছে কি না, সেটা মনিটর করতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে নয়টি দেশের একটি কোয়ালিশন তৈরি করেছে, এটা যে কত বড় মেসেজ, আমি নিশ্চিত, বাংলাদেশের তথ্য মন্ত্রণালয় এমনকি যারা চ্যাটাং চ্যাটাং কথা বলে, যারা উন্নয়নের গীত গান, তাদের মাথায় ঢুকেছে বলে মনে হয় না। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যদি আমাদের গার্মেন্ট নেয়া বন্ধ করে দেয় তাহলে না খেয়ে থাকবে এদেশের মানুষ। মানুষ বিপদে পড়লে এদেশের আওয়ামীলীগ কি বিপদে পড়বে না? আপনার পাশের বাড়িতে আগুন লাগলে আপনি কি নিরাপদে থাকবেন? বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে এভাবেই সিরিয়াস কিছু কথা বলে ফেলেছেন সাবেক সেনা কর্মকর্তা ও ডিফেন্স জার্নালের সম্পাদক বিশিষ্ট সাংবাদিক লেফটেন্যান্ট (অব.) আবু রুশদ!

এ দেশের সাংবাদিকরা লিখতে গেলে, আমরা কোনো কথা বলতে গেলে আপনাদের গোয়েন্দা সংস্থা ফোন করে হুমকি ধামকি দেয়! কেন রে ভাই এই গোয়েন্দা সংস্থা কি এদেশের জনগণের পয়সায় চলে না? এভাবে আর কতকাল চালাবেন? তথ্য সুরক্ষার জন্য আবার আইন বানাচ্ছেন কেনো? এইরকম আইন তো আছে উত্তর কোরিয়ায়, বার্মায়, সিরিয়ায়, ভেনিজুয়েলায়, রাশিয়ায়- আপনারা কি সে রকম দেশ বানাতে চান? সাংবাদিকদের মুখ বন্ধ করতে ডিজিটাল সিকিউরিটি এক্ট করেছেন। আমাদের সাংবাদিকরা লিখতে পারে না, তাদেরকে ধরে নিয়ে গেছেন কভিডের মধ্যেও। কি আপনাদের সমালোচনা করা যাবে না? আপনি বলছেন অশালীন ভাষায় কথা বলছে, তাই নিয়ে গেছেন! কিন্তু খালেদা জিয়ার নামে যখন সারাদিন আজেবাজে কথা বলেন, তখন কি কই যায় আপনাদের সেই আইন? কেনো বেগম খালেদা জিয়া কি এদেশের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন না? সেটা কিন্তু করা হচ্ছে না ! তার মানে শুধু একচেটিয়া হচ্ছে- সরকার এবং উন্নয়ন- এই দুটো দিয়ে আমাদেরকে ভুলানোর চেষ্টা হচ্ছে।

এই কথাগুলো আগে আমরা বলতাম, এখন বিদেশীরা বলতেছেন, তাও আপনাদের কানে পানি যাচ্ছে না? একসময় আমরা বাংলাদেশের সংবাদপত্রের স্বাধীনতা নিয়ে গর্ব করতাম, এখন আর সেটা পারা যাচ্ছে না। এখন শুধু মামলা দেন না, এখন আমাদেরকে হিউমিলেট করেন, অপমান করেন! কেনরে ভাই, আপনাদের ঘরে কি মা বোন নাই? নাকি আপনারাই কেবল অফিসার, আর কেউ কখনও ছিল না?গোয়েন্দা সংস্থা দিয়ে সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করছেন, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করছেন! মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন এই কথাগুলিই বলছে! আপনি যদি গুরুত্ব না দেন, শেষে একসময় বাংলাদেশের লোক না খেয়ে থাকবে।এখনও আপনাদের হুশ হচ্ছে না, খালি বিএনপি কোথায় আছে খোঁজেন, তৃণমূল বিএনপি বানান, এটা বানান সেটা বানান, তখন টাকা পয়সা আসে কোত্থেকে? এই বিষয়গুলো বড় জটিল হয়ে গেছে।

এখানকার গার্মেন্টস প্রোডাক্টগুলি আমেরিকার ওয়ালমার্ট সহ যুক্তরাষ্ট্রের বড় বড় কোম্পানিগুলো কিনে বাজারজাত করে। তাছাড়া সেখানে লাখ লাখ বাংলাদেশি থাকে, দেশ নিয়ে তাদের আবেগ অনুভূতিকে তারা মূল্য দেয়, এর বাইরে বাংলাদেশে মানবাধিকার পরিস্থিতি খারাপ হওয়ার কারণে প্রতি বছর তারা হাজার হাজার মানুষকে আশ্রয় দেয়, তাই বাংলাদেশের সমস্যাগুলো নিয়ে তাদের মাথাব্যথা আছে।

আমাদের দেশের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি, রাষ্ট্র ব্যবস্থা, রাজনৈতিক অবস্থা, আমাদের শাসনব্যবস্থা, আমাদের সামনের নির্বাচন, আমাদের গণতন্ত্র, মানবাধিকার, মত প্রকাশের স্বাধীনতা- এসব তাদের প্রায়োরিটি। আর যুক্তরাষ্ট্র যে বার্মা আইন পাশ করেছে, তার আওতায় মায়ানমারের ইস্যুর মধ্যে বাংলাদেশ এটার মধ্যে পড়ে যেতে পারে, এই ফলআউটের শিকার হতে পারে, এ নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কি চিন্তা করছে সেই বিষয়গুলো এই সফরের সাথে থাকছে। বার বার তারা আমাদেরকে বোঝাতে চাচ্ছে যে, মার্কিন প্রশাসন আমাদের দেশে গণতন্ত্র এবং মানবাধিকার বিষয়কে সর্বোচ্চ প্রাধান্য দেয়। তারা বাংলাদেশকে বার বার সিগন্যাল দিচ্ছে- তোমরা বিষয়গুলো ঠিক করো।এসব কথা তারা সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বা রাজনীতিবিদদের কানে বার বার দিচ্ছে, কিন্তু তারা তো সরাসরি বলবে না যে, তোমরা এটা না করলে আমরা ওটা করব। কিন্তু আমাদের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ হয়তো সেগুলো বুঝছেন না বা আমার জনগণকে জানতে দিচ্ছে না।

ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের যে দূতাবাস আছে, তারা গত ৬ তারিখে নিজস্ব আয়োজনে একটা সেমিনারের ব্যবস্থা করেছে “অনলাইন স্বাধীনতা ও ব্যবসায় বিনিয়োগ”। তাতে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতের সাথে বৃটিশ হাইকমিশনারও যুক্ত ছিল, তাতে কয়েকটা গুরুত্বপূর্ণ কথা বলেছেন সেটা হচ্ছে, উন্নয়ন এবং নিরাপত্তা কখনোই গণতন্ত্র এবং মানবাধিকারের উপর স্থান পেতে পারেনা। অথচ এদেশের সরকার এবং সরকারপন্থী বুদ্ধিজীবী সাংবাদিক ও চামচারা একটা ঢোল ক্রমাগত বাজাচ্ছেন। সেটা হলো উন্নয়ন আর উন্নয়ন! এখানে একটি রাস্তা হচ্ছে, ওখানে একটি আন্ডারগ্রাউন্ড টানেল হচ্ছে, ওখানে একটা রেললাইন হচ্ছে, কক্সবাজারের একটা রেল স্টেশন নাকি ইউরোপের মতো- এরকম হাইপ তৈরি করার চেষ্টা করছে।

মানুষ কথা বলতে পারবে কম, বিরোধিতা করতে পারবে কম, গণতন্ত্র পাবে কম, মতপ্রকাশকে বিরোধিতাকে তারা কন্ঠরোধ করে, ডান্ডাবাজি করে উন্নয়নের জয়গান করে তারা দেশ চালাবে। তারা কিন্তু টেকসই উন্নয়নের দিকে যায় না, যেখানে নারী ও শিশু মৃত্যুহার কমবে, শিক্ষার ব্যবস্থা ভালো থাকবে, সুপেয় পানির ব্যবস্থা থাকবে, নূন্যতম অন্ন বস্ত্র বাসস্থানের ব্যবস্থা থাকবে এবং আমাদের রাষ্ট্রটা দুর্নীতির বাইরে একটা সুন্দরভাবে চলবে। এই পথে যাচ্ছে না তারা। এখানে সরকারের লোকেরা ভালো আছে, যারা সরকারের বেতন পায় তারা ভালো আছে, যারা ঘুষ খায় তারা ভালো আছে, যারা চোরাই ব্যবসা করে তারা ভালো আছে, যারা বিদেশে টাকা পাচার করে তারা ভালো আছে!

 

কিন্তু সাধারণ মানুষ কেউ ভালো নাই। দেশের সরকার এবং সরকারের সংস্থাগুলো এদেশের বিরোধী দলকে শত্রু বানিয়ে ফেলেছে। এখানে একটা সাধারণ মানুষ বা বিরোধী দলের লোক যদি একটা চাকরি পেতে রিটেন ভাইবায় টিকে যায় তখন নিরাপত্তা ছাড়পত্রের নামে গোয়েন্দা সংস্থার রিপোর্ট করতে যায়, ওই প্রার্থীর ১৪ গুষ্টিতে কেউ বিএনপি জামাত আছে র্কিনা খুঁজে বের করে. যদি কেউ করে থাকে তাহলে আর ওই প্রার্থী চাকরি পাবে না। এটা কোন দেশ? বিএনপি কি দেশের শত্রু নাকি, বিএনপি কি কোনো নিষিদ্ধ দল নাকি, নাকি শহীদ জিয়া এদেশের সন্তান ছিলেন না? এটা কেমন কথা? এই দেশ যেভাবে চালাচ্ছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সিরিয়াস অবজারবেশন আছে, এই কথাগুলি তারা জোরেশোরে বলছে।

বাংলাদেশে একই পরিবারে আওয়ামী লীগ করে, বিএনপি করে, জামাত করে, জাসদ করে, জাতীয় পার্টি করে, এমনকি ইসলামী দলও করে, সবাইকে নিয়া সমাজে একটা সহাবস্থান ছিল। কিন্তু এই সরকার এমন একটা অবস্থা তৈরি করছে যে পরিবারের মধ্যে গন্ডগোল বাধিয়ে দিয়েছে, সমাজের মধ্যে গন্ডগোল এবং আত্মীয়তার মধ্যে গন্ডগোল লেগে যাচ্ছে- এটা কেমন কথা? যতই উন্নয়ন উন্নয়ন বলে চিৎকার করেন না কোনো, আমি কি সরকারি চাকরি করতে পারবো না, আমি কি ব্যবসা করতে পারব না? অথচ আপনার দলীয় চামচারা চাঁদাবাজি করবে, টেন্ডারবাজি করবে, আর আপনার পাশের বাড়ির লোকটা যে না খেয়ে আছে বাসা ভাড়া দিতে পারছে না, সংসার চালাতে পারতেছে না- তার কি হবে? আমাদের গোয়েন্দা সংস্থা সরকার বা বুদ্ধিজীবী কেউই এগুলো মাথায় নিচ্ছে না! তাদের শুধু একটাই আওয়াজ… উন্নয়ন হচ্ছে তো! কিন্তু ১৮০০ কোটি টাকার একটা রেললাইন প্রজেক্ট আঠারো হাজার কোটি টাকা হলো কি করে, সেই খোঁজটা কিন্তু কেউ নিচ্ছে না। বাংলাদেশে এইভাবে দুর্নীতি চলছে, অথচ সব জায়গায় খালি বিএনপি জামাত খোঁজো? উন্নয়ন করতে গিয়া জাতিকে কি কস্টিং দিতে হচ্ছে সেই খোঁজ কেউ নিচ্ছে না এইভাবে উন্নয়নের নামে যে দুর্নীতির রাজত্ব চলছে, তার দেখার কেউ নাই।

আপনার হাতে এখন ডলার নাই আপনি চিনি আমদানি করতে পারছেন না, সার আমদানি করতে পারছেন না, খাদ্য আমদানি করতে পারতেছেন না, জ্বালানী আনতে পারছেন না, ওষুধ আমদানি করতে পারতেছেন না তাই জরুরী চিকিৎসা সেবা বন্ধ, অথচ আপনি উন্নয়ন উন্নয়ন আওয়াজ তুলে জাতিকে আর কতকাল ঘুম পাড়িয়ে রাখবেন? বাংলাদেশের জনগণকে খাবার দিতে পারতেছেন না, অথচ আপনার অফিসাররা বিদেশে বিলাসিতা করতে যায় এটা কেমন কথা? এটা কোন ধরনের রাষ্ট্র চালাচ্ছেন। আইয়ুব খানের সময় এই রকম উন্নয়ন উন্নয়ন আওয়াজ করতো, অথচ গণতন্ত্র ছিলনা, তখন ১১% গ্রোথ ছিল, অথচ শেষ পর্যন্ত পাকিস্তান ভেঙে গেছে! পাকিস্তানের পাশাপাশি একই দিনে ভারত তৈরি হয়েছে, কিন্তু ভারত টিকে আছে।

বাংলাদেশে একের পর এক মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা আসছেন- সতর্ক করতে। যেই আসুক না কেন জিনিসগুলো কিন্তু ওই একই জায়গায় জায়গায় ঘুরপাক খাচ্ছে। বাংলাদেশের গণতন্ত্র, মানবাধিকার, মত প্রকাশের স্বাধীনতা এবং শ্রম বিষয়ক সমস্যাগুলি নিয়ে এদেশের সরকারের সাথে কথা বলতে আসেন। পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্যে চাপ দিয়ে থাকে।
( সব ঠিকমত লিখতে পারলাম না, ভুলভ্রান্তিও হতে পারে, দয়া করে শুনে নিবেন)

Looks like you have blocked notifications!
Ads
[json_importer]
RELATED ARTICLES

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

Most Popular

Recent Comments