গতকাল বিমানবন্দর থেকে গ্রেফতর হয়েছেন ঢাকায় সিনেমার জনপ্রিয় চিত্র নায়িকা মাহিয়া মাহি, মূলত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে তাকে গ্রেফতার করা হয় যা নিয়ে উটেছে নানান আলোচনা এবং মিশ্র প্রতিক্রিয়া। এই প্রসঙ্গে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি স্টাস্টাস দিয়েছেন লেখক শামসুল আলম। নিচে সেটি তুলে ধরা হল –
#স্ক্রু_ঢিলা_ফুলিশ
গত দু-তিন দিন ধরে বাংলাদেশের সামাজিক মাধ্যমগুলি কতগুলো বেহুদা টপিক নিয়ে ব্যস্ত। দুবাইতে কোনো এক আরাব খানের (যে কিনা বাংলাদেশের এখন পুলিশ হত্যার আসামী) সোনার দোকান উদ্বোধন করতে কৃকেটার সাকিবের যাওয়া, সেই সোনার ব্যবসার আসল মালিক নাকি স্যাংশন-খাওয়া সাবেক আইজিপি বেনজির আহমেদ – আবার বেনজির সেটা নিয়ে স্টেটমেন্ট দেয় ‘আমি তারে চিনি না‘ —নানা রকম লেখালেখি চলছে! আরাব খান নাম ধারণকারী এই পুলিশ হত্যাকারী দেশত্যাগ করে ভারতীয় পাসপোর্ট নিয়ে দুবাই গমন করে বিশাল অর্থ সম্পদের মালিক হয়েছে, দেশে ঘুরেও যায়, আবার পুলিশ সবই জানে, কিন্তু অজ্ঞাত কারণে তাকে ধরেও না! এর সাথে আবার প্যাঁচ খেয়েছে সাবেক আইজিপি বেনজিরের সাথে পুলিশের সার্ভিং কিছু বিতর্কিত কারেক্টারের গুতোগুতি- যারা আবার নিজেরাই গুম, হত্যা, অন্যের সম্পদ দখল, হাইফাই ঘুস ও মুক্তিপণ সহ বড় বড় অপরাধের সাথে জড়িত। এসব অপকর্মও করছে আবার মিডিয়াতে এসে মোটা গলায় আওয়াজ তুলে পাবলিককে ধোকা দেয়ার চেষ্টা করছে! কেমন যেন সিনেমার ভিলেন-মস্তান-রংবাজ খেলা!
#ফুট_ফুটে_সুন্দর
আরাব-বেনজির আলোচনা ধামাচাপা দিতে হাজির করা হলো চিত্রনায়িকা মাহিয়ার মাহি ইস্যু! পুলিশের করা ডিএসএ মামলায় মাহিকে গ্রেফতার করে কোর্টে পাঠিয়ে বেইল নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানো হলো দুপুরে। আবার বিকালেই আরেক কোর্টে মুভ করে জামিন নিয়ে সন্ধ্যার মধ্যেই ছাড়া পেলেন এই অভিনেত্রী! বাংলাদেশের ইতিহাসে আইসিটি মামলায় কারাগারে যাওয়ার কয়েক ঘন্টার মধ্যে কেউ জামিন পায়নি! এটাও এক বিস্ময়কর অসম্ভব কারবার!
মাহিয়া মাহি অভিনয় শিল্পীর পাশাপাশি আওয়ামী লীগে জয়েন করে এবারের চাঁপাই নবাবগঞ্জের উপনির্বাচনে জোরালো প্রার্থী ছিলেন, সংসদে প্রায় চলেই গেছিলেন ওবায়দুল কাদেরের সাথে ঘনিষ্ট যোগাযোগের কারণে। তাদের অন্তরঙ্গ দৃষ্টি, ছবি বক্তব্য এসব নিয়ে অনেক ট্রল হয়েছে। তো এরকম একজন সরকার দলীয় পাওয়ারফুল নেত্রী-অভিনেত্রী হওয়ার পরও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে পুলিশ জেলে পাঠালো- বিষয়টা কি? কারণ ঐ আইনটা তো তৈরি করা হয়েছিল বিরোধী দলের জন্য।
বিষয়টা হলো এই যে, মাহিকে ধরেছে পুলিশ- মাহি আবার সেরের উপ্রে সোয়া সের দিয়ে জেল থেকে বেরিয়ে গেছে! বাপের উপ্রে তো বাপ আছে। সেই বাপেরা কি জানে, তারা পুলিশকে কী দানবে পরিণত করেছে? আজকে যদি মাহি সিনেমার নায়িকা না হতো, যদি আওয়ামী নেত্রী না হতো, যদি বিএনপির কেউ হতো, তাহলে ৯ মাস কেনো ১১ মাসের গর্ভবতী হলেও তার রেহাই ছিল না, লাগলে রিমান্ডের টেবিলে সন্তান প্রসব করতে হতো। এতে কোনো নিস্তার ছিল না।
মাহি পুলিশের বিরুদ্ধে কিছু স্বজনপ্রীতির অভিযোগ তুলেছে, তাতেই কি পুলিশ কমিশনার মোল্লা নজরুল দাঁত মুখ খিচিয়ে ওভাবে শায়েস্তার হুমকি দিতে পারে? পারে না। পুলিশের কর্মকান্ড পছন্দ না হলে সংক্ষুব্ধ কেউ অভিযোগ করতে পারে, নালিশ জানাতেই পারে। তা করলেও পুলিশকে নৈব্যক্তিক আচরণ করতে হবে- এটাই নিয়ম। কিন্তু এটা তো যেই সেই পুলিশ না, আওয়ামী দানব- এরা রাতে ভোট কেটে সরকার বানায়, তাই তাদের অসীম ক্ষমতা- মানুষ মারার ব্লাঙ্ক চেক হাতে, একটা কেনো শত শত মারলেও কোনো জবাবদিহিতা নেই- তাদেরকে শাস্তি পেতে হয় না।
এই আরাফ-মাহি ইস্যু এসব তৈরি করা হয়েছে বর্তমান ফ্যাসিস্ট সরকার যেভাবে সুপ্রিম কোর্টের ভোট কেলেঙ্কারির ভয়াবহ ইস্যুকে ধামাচাপা দিয়ে জনমতকে অন্যদিকে ব্যস্ত রাখার কৌশল ছাড়া আর কিছু নয়।
আমি একদম নিশ্চিত, ওবায়দুল কাদেররা যে দানব বানিয়েছেন, বাতাস যখন ঘুরতে দেখবে, এরাই আবার তাদের কোমড়ে দড়ি লাগাবে- ফ্রাংকেনস্টাইন তার চলন্ত উদাহরণ!