এবার বরগুনার তালতলীতে ঘটেছে একটি দুঃখজনক ঘটনা। সামাজিক যোগযোগ মাধ্যমে এর ছাত্রীর ভিডিও ভাইরাল করেছে এক যুবক যার কারনে ওই ছাত্রীর মা নিজেই না ফেরার দেশে চলে গেছে। শনিবার দুপুরে ওই ছাত্রী ও তার বাবা থানায় হাজির হয়ে এ অভিযোগ করেন। এর আগে গত বৃহস্পতিবার দুপুরে ব্যাটারির এসিডের পানি পান করে ওই ছাত্রীর মা
মেয়েটির পরিবার সূত্রে জানা যায়, উপজেলার সোনাকাটা ইউনিয়নের লাউপাড়া এলাকার আসাদুল (২৫) বিভিন্ন সময় অষ্টম শ্রেণির এক স্কুল ছাত্রীকে (১৩) বিরক্ত করত। একসময় আসাদুল মেয়েটির মায়ের মোবাইল ফোনে কল করতে থাকে। এক পর্যায়ে মেয়েটি ফোনে কথা বলে। পরে ভিডিও কলে কথা বলেন। মেয়েটির মাকে ভিডিও কলে কথা বলার বিষয়টি বলে দেয়ার হুমকি দিয়ে আসাদুল ওই ছাত্রীকে পোশাক খুলে ভিডিও কল করার কথা বলে । পরে মেয়েটি সেই অনুযায়ী আসাদুলের সঙ্গে ভিডিও কলে কথা বলে। আসাদুল সেই ভিডিও কল রেকর্ড করেন।
গত ৮ মার্চ আসাদুল ভিডিওটি মেয়েটির মা জোসনা বেগমকে ভিডিও দেখিয়ে ৫০ হাজার টাকা দাবি করেন। এই টাকা একদিনের মধ্যে পরিশোধ না করলে ভিডিওটি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল করার হুমকি দেন তিনি। একদিন পরে, ভিডিওটি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয় এবং বিনা পারিশ্রমিকে বিভিন্ন মানুষের কাছে পৌঁছে যায়। বৃহস্পতিবার (৯ মার্চ) সকালে বিষয়টি জানাজানি হলে মা জোসনা বেগম (৩৫) ব্যাটারির এসিডের পানি পান করেন। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান তিনি আর নেই। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী মেয়ে বলেন, ‘আসাদুল আমাকে প্রতিনিয়ত হয়রানি করতো। একবার তার সাথে কথা বলি। পরে তারা আমাকে ব্ল্যাকমেইল করে এবং ভিডিও কলে পোশাক খুলে কথা বলতে বাধ্য করে। ভিডিও রেকর্ড করে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে মায়ের কাছে ৫০ হাজার টাকা দাবি করে সে। টাকা না দিলে ভিডিও ভাইরাল হয়ে যায়। এই লজ্জায় আমার মা না ফেরার দেশে গেছে । এর সুষ্ঠু বিচার চাই। বিচার না পেলে আমিও না ফেরার দেশে যাব।
মেয়ের বাবা বলেন, ‘আমি ঢাকায় চাকরি করি। স্ত্রীর না ফেরার দেশে যাওয়ার খবর পেয়েছি। আজ শনিবার বিষয়টি জানতে পেরে থানায় মামলা করতে এসেছি। আমার কাছেও সেই ভিডিও আছে। ঘটনার বিচার চাই।
এদিকে ওই ছাত্রীর ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার ঘটনার ব্যাপারে তালতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী সাখাওয়াত হোসেন তপু বলেন, আমি এখনো কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বরিশালে একটি না ফেরার দেশে যাওয়ার মামলা হয়েছে।