মেয়ের বিয়ের জন্য আইসিবি ইসলামী ব্যাংকের নারায়ণগঞ্জ শাখায় জমা রাখা ১১ লাখ টাকা তুলতে পারছেন না আশিস কুমার পাল। তিনি বারবার চেক নিয়ে ব্যাঙ্কে গেলেও নগদ টাকা না থাকায় তা ফেরত দেওয়া হয়।
আইসিবি ইসলামিক ব্যাংকের নারায়ণগঞ্জ শাখা থেকে টাকা তুলতে না পেরে অবশেষে ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে আসেন আশীষ কুমার পাল। এখানে এসেও টাকা তোলার কোনো ব্যবস্থা করতে পারেননি।
ভারাক্রান্ত মন নিয়ে আশীষ কুমার পাল বলেন, আমি নারায়ণগঞ্জ শাখায় গিয়েছিলাম কিন্তু সেখানে চেক নিয়ে গেলে বারবার অসম্মান করে। টাকা না থাকায় তারা আমাদের ফিরিয়ে দিয়েছে। আগামী মাসে আমার মেয়ের বিয়ে। টাকা জোগাড় করতে না পারলে মেয়ের বিয়ে ভেঙ্গে যাবে।
একইভাবে বাবুবাজার শাখার শিরিন সুলতানা ব্যাংকে জমা থাকা ২০ লাখ টাকা তুলতে পারছেন না। ব্যাংকে গেলে নগদ টাকা না থাকায় তাকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। টাকার জন্য তিনি আইসিবি ইসলামী ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়েও যান।
শিরিন সুলতানা ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, এখন আমার আত্মহত্যা ছাড়া উপায় নেই। মানুষ নানা সমস্যার কারণে ব্যাংকে টাকা জমা রাখে। কিন্তু আজ দুই মাস ধরে তারা আমাকে ঘুরাচ্ছে। আমার টাকা ফেরত দিচ্ছে না। এখন আমি কী করব সেটি ভেবে পাচ্ছি না।
এ প্রসঙ্গে আইসিবি ইসলামী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুহাম্মদ শফিক বিন আবদুল্লাহ বলেন, সম্প্রতি গ্রাহকদের মধ্যে ইসলামী ব্যাংক নিয়ে নেতিবাচক আলোচনা চলছে। এ কারণে গত চার মাসে গ্রাহকরা তুলে নিয়েছেন ৫২ কোটি টাকা। এ কারণেই ব্যাংকে তারল্য সংকট রয়েছে বলে তিনি দাবি করেন।
তিনি বলেন, যখনই ইসলামী ব্যাংক নিয়ে নেতিবাচক কথা শুরু হয়েছে, গ্রাহকরা তাদের আমানত তুলে নিতে শুরু করেছেন। কিন্তু আমরা ইসলামি গ্রুপের অংশ না। আমরা স্বাধীন ব্যাংক।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের শেষের দিকে আইসিবি ইসলামিক ব্যাংক ১ হাজার ৮২৩ কোটি টাকার মূলধন ঘাটতিতে পড়ে। ব্যাংকটির ৭৯০ কোটি ৪০ লাখ টাকা ঋণের ৮৭ শতাংশই খেলাপি। গুরুতর তারল্য সংকটে পড়ে গত ৩১ জানুয়ারি বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে জামানতমুক্ত তারল্য সহায়তা হিসাবে ৫০ কোটি টাকা চেয়েছিল আইসিবি ইসলামিক ব্যাংক। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে ইতোমধ্যে ব্যাংকটির ৪২৫ কোটি টাকা দেনা থাকায় আবেদনের দুই সপ্তাহ পর তা প্রত্যাখ্যান করা হয়।