Monday , June 17 2024
Home / Countrywide / আনার হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী কে এই শাহীন

আনার হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী কে এই শাহীন

ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনার (৫৭)-কে অনেক আগেই হত্যার পরিকল্পনা করা হয়েছিল। সেই অনুযায়ী মূল পরিকল্পনাকারী এমপির বন্ধু ও ব্যবসায়িক অংশীদার আকতারুজ্জামান শাহীন কলকাতার নিউ টাউনের সঞ্জীবনী গার্ডেনে একটি ট্রিপলেক্স ফ্ল্যাট ভাড়া নেন। তিনি কিছু সন্ত্রাসীর সাথে চুক্তি করেছিলেন যারা আগে থেকেই ভারতে অবস্থান করছিল। এরপর বাংলাদেশ থেকে ওই ফ্ল্যাটে নিয়ে যান মূল কিলার চরমপন্থি নেতা আমানুল্লাহকে। যেখানে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয় তাকে।

তদন্তকারী ডিবি জানায়, হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী আকতারুজ্জামান ওরফে শাহীন। তিনি এমপি আনারের বন্ধু ও ব্যবসায়িক অংশীদার। আকতারুজ্জামান যুক্তরাষ্ট্রের বাসিন্দা এবং যুক্তরাষ্ট্রের পাসপোর্টধারী। তার বাড়ি ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুরে। তিনি কোটচাঁদপুর পৌর মেয়র শহীদুজ্জামান সেলিমের ছোট ভাই।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, মার্কিন পাসপোর্টে তার নাম মোঃ আকতারুজ্জামান, পাসপোর্ট নম্বর USA 566833197। ঝিনাইদহের স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, এই শাহীন আন্তর্জাতিক স্বর্ণ চোরাচালানের চক্রের সঙ্গে জড়িত। তিনি এমপি আনারের ঘনিষ্ঠ ছিলেন এবং তারা একসঙ্গে সীমান্ত চোরাচালান চক্র নিয়ন্ত্রণ করছিলেন।সর্বশেষ গত ১০ মে কলকাতা থেকে শাহীন বাংলাদেশে এসে কোটচাঁদপুরে যান।

গোয়েন্দা ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শাহীনের সোনার বড় চালান নিয়ে এমপি আনারের সঙ্গে বিরোধ চলছিল। এমপি ওই চালানের টাকা শাহীনকে দেননি। এটা নিয়ে দীর্ঘ ঝামেলার পর মূলত কলকাতায় অন্যান্য পার্টনারের সঙ্গে মীমাংসার জন্য যান এমপি আনার। মূলত তাকে এক নারী দিয়ে ফাঁদে ফেলে কলকাতায় নেওয়া হয়।

স্থানীয়রা জানান, শাহিন অন্তত ২০ বছর আগে যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী ভাই মনিরুজ্জামানের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবাসী হন। সেখানে বসেই দেশের স্বর্ণ ও অস্ত্র ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করছিলেন তিনি। কোটচাঁদপুরের কাছে এলঙ্গী গ্রামে তার একটি বাগানবাড়ি রয়েছে।দেশে এলে সেখানে বসত মদের আসর। সেখানেই পরিকল্পনা হতো স্বর্ণ ও অস্ত্র কারবারের।

আনারকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে বলে প্রমাণ পেয়েছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ। কিন্তু তার লাশ এখনো পাওয়া যায়নি। ঘটনার তদন্ত করছে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। সিআইডির মহাপরিদর্শক অখিলেশ চতুর্বেদী বলেন, আমরা কিছু সুনির্দিষ্ট তথ্য পেয়েছি, যার ভিত্তিতে ধারণা করা হচ্ছে তাকে হত্যা করা হয়েছে।

তিনি বলেন, পূর্ব কলকাতার নিউ টাউন অঞ্চলে যে ফ্ল্যাটে আনোয়ারুল আজিম আনার উঠেছিলেন, সেটি পশ্চিমবঙ্গ সরকারের আবগারি দপ্তরের কর্মকর্তা সন্দীপ কুমার রায়ের। সন্দীপের কাছ থেকে ফ্ল্যাটটি ভাড়া নিয়েছিলেন আক্তারুজ্জামান নামের এক ব্যক্তি। আকতারুজ্জামানই ওই ফ্ল্যাটে আনোয়ারুল আজিমের থাকার ব্যবস্থা করেছিলেন কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

গতকাল কলকাতার নিউ টাউনের অভিজাত আবাসিক এলাকা সঞ্জীবনী গার্ডেনের ফ্ল্যাটে তল্লাশি চালায় পুলিশ। সেখানে কী ধরনের জিনিসপত্র পাওয়া গেছে বা রক্তের দাগ পাওয়া গেছে কি না সে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কিছু বলেননি অখিলেশ চতুর্বেদী। তিনি বলেন, পুলিশের ফরেনসিক বিভাগ তদন্তের কাজ শুরু করেছে। তদন্তে অগ্রগতি হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

অখিলেশ চতুর্বেদী বলেন, আনোয়ারুল আজিমকে হত্যা করে দেহ খণ্ড খণ্ড করে ফেলা হয়েছে কি না, সে বিষয়েও কিছু বলতে চাননি সিআইডি প্রধান।

About Nasimul Islam

Check Also

মসজিদের ইমামের কোনো দোষ নেই, জবির সেই আলোচিত ছাত্রী

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) কেন্দ্রীয় মসজিদের ইমাম মো. ছালাহ উদ্দিনকে এক ছাত্রীকে ঘিরে বিতর্কিত ঘটনার জের …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *