Saturday , June 22 2024
Home / Countrywide / মসজিদের ইমামের কোনো দোষ নেই, জবির সেই আলোচিত ছাত্রী

মসজিদের ইমামের কোনো দোষ নেই, জবির সেই আলোচিত ছাত্রী

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) কেন্দ্রীয় মসজিদের ইমাম মো. ছালাহ উদ্দিনকে এক ছাত্রীকে ঘিরে বিতর্কিত ঘটনার জের ধরে মৌখিকভাবে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

গত ১৮ মে, জবি রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের প্রথম বর্ষের এক ছাত্রী শারীরিক অসুস্থতায় মসজিদের নারী শিক্ষার্থীদের নামাজের স্থানে ঘুমিয়ে পড়েন। মসজিদের মুয়াজ্জিন তালা লাগাতে গেলে ছাত্রীকে দেখতে পান এবং ইমামকে জানান। দুই পাহারাদার ছাত্রীকে বের হয়ে যেতে বলেন। ইমাম ঘটনাস্থলে এসে প্রক্টরকে ফোন করেন। ছাত্রী ইমামকে জানান যে তিনি বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের আবাসিক হোস্টেলে থাকেন। এরপর ইমাম হলের হাউস টিউটর সাজিয়া আফরিনের সাথে কথা বলে ছাত্রীকে হলে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন।

এই ঘটনায় মসজিদে দায়িত্ব অবহেলার অভিযোগ তুলে ইমামকে মৌখিকভাবে অব্যাহতি দেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ঘটনা তদন্তে ৫ সদস্যের কমিটিও গঠন করা হয়।

এই ঘটনা সম্পর্কে ওই ছাত্রী গনমাধ্যমকে বলেছেন, সেদিন রাতে আমি এশার নামাজের মধ্যে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। রাত সাড়ে ১০টার দিকে ঘুম ভাঙে৷ লাইট অফ থাকায় ডাকাডাকি করি। এর মধ্যেই দুজন পাহারাদার আসেন। তাদের কাছে বলি, নামাজের মধ্যে কখন যে ঘুমিয়ে গেছিলাম বুঝতে পারিনি। পাহারাদাররা আমাকে বের করেন। একটু পর ইমাম আসেন। তিনি প্রক্টরকে ফোন দেন। আমিও তার সঙ্গে কথা বলি। এরপর হাউস টিউটরের সঙ্গে ফোনে কথা বলি। উনি আমাকে হলে চলে আসতে বলেন। এতে ইমামের তো কোনো দোষ নেই। উনি খুব ভালো মানুষ। তিনি মসজিদের ভেতর প্রবেশই করেননি।

এ বিষয়ে মসজিদের ইমাম মো. ছালাহ উদ্দিন যুগান্তরকে বলেন, আমার কাজ মসজিদে নামাজ পড়ানো। কোথায় কে ঘুমিয়ে রয়েছে, সেটা দেখা আমার দায়িত্ব না। তাই নামাজ পড়িয়ে বাসায় চলে এসেছি। পরে রাত সাড়ে ১০টার দিকে মুয়াজ্জিন ফোন দিয়ে বিষয়টি জানান আমাকে। এরপর মসজিদের ভেতরে একজন মেয়ে শিক্ষার্থী অবস্থান করছেন জেনেই আমি প্রক্টরকে ঘটনাটি জানাই। আমি এসে প্রক্টরের সঙ্গে ওই ছাত্রীকে ফোনে যোগাযোগ করিয়ে দিই। ওই ছাত্রী তখন বলেন, তিনি একা ছাত্রী হলে চলে যেতে পারবেন। এরপর তিনি হলে চলে যান। এর ১০ দিন পর গতকাল (সোমবার) শুনি আমার বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি হয়েছে।

দর্শন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও ছাত্রী হলের হাউস টিউটর সাজিয়া আফরিন সেই রাতের ঘটনা সম্পর্কে বলেন, ‘হ্যাঁ, সে (ছাত্রী) আমাকে ফোন দিয়েছিল। আমাকে ঘুমিয়ে পড়ার বিষয়টি বলে। তার সঙ্গে কথা বলে বুঝতে পারি, সে হলে নতুন হওয়ায় ভয় পাচ্ছিল। পরে আমি তাকে হলে ফেরার ব্যবস্থা করে দিই। নিরাপত্তাকর্মীরা তাকে হলে দিয়ে আসেন।’ ওই ছাত্রী তখন অসুস্থ ছিল। তাই হয়তো ঘুমিয়ে পড়েছে। কারো বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ করেছিল কিনা- এমন প্রশ্নের উত্তর তিনি বলেন, ‘না, সে কোনো অভিযোগ দেয়নি’।

এদিকে ইমামের অব্যাহতি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে তুমুল সমালোচনা শুরু হয়েছে। শিক্ষার্থীদের দাবি, ঘটনার সূত্রপাত ১৭ মার্চ। ওই দিন জাতীয় শিশু দিবস ও জবি আইন বিভাগের শিক্ষার্থী ফাইরুজ অবন্তিকার মৃত্যুতে তার আত্মার মাগফেরাত কামনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে দোয়া ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। উপাচার্য সাদেকা হালিম মসজিদের মিম্বরের পাশে নারী-পুরুষ সবাইকে একত্রিত করে বক্তৃতা করেন। এ সময় মসজিদে নারী-পুরুষ একসঙ্গে বসা ইসলামী ধর্মীয় বিধি-বিধান লঙ্ঘন করে বলে প্রতিবাদ করেন ইমাম। এ ঘটনার কারণে ইমামকে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে বলে মনে করছেন শিক্ষার্থীরা।

About Nasimul Islam

Check Also

শিক্ষাক্রমে ব্যাপক পরিবর্তন: এসএসসিতে ২ বিষয়ে ফেল করলেও ভর্তি হওয়া যাবে কলেজে

নতুন কারিকুলামের মূল্যায়ন পদ্ধতিতে বড় ধরনের পরিবর্তন আনছে সরকার। নতুন শিক্ষাক্রমে এসএসসি পরীক্ষা শুরু হবে …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *