দেশের কুড়িগ্রামে ঘটে গেছে একটি অনাকাঙ্খিত ঘটনা। জানা যায় কুড়িগ্রাম রৌমারী উপজেলায় টাকার দাবিতে এক নারীকে প্রকাশ্যে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ উঠেছে এক সেখানকার সুপরিচিত এক আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে।এ সময় এলাকাবাসীর ক্ষোভের মুখে নিজেকে বাঁচাতে পানিতে ঝাঁপ দেন তিনি। পরে স্থানীয়রা তাকে পানি থেকে বের করে মারধর করে।
শনিবার (১০ সেপ্টেম্বর) বিকেলে উপজেলার যদুরচর ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের সভাপতি শাহা আলম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এর আগে শুক্রবার (৯ সেপ্টেম্বর) রাতে উপজেলার যাদুরচর ইউনিয়নের সয়দাবাদ বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ওই নেতাসহ তিনজনকে থানায় নিয়ে যাওয়ার কথা বলে আটক করে। তবে থানায় না নিয়ে পথেই ছেড়ে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
অভিযুক্তের নাম সুরুজ্জামান মিয়া। তিনি রৌমারী উপজেলা আওয়ামী লীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক।
প্রত্যক্ষদর্শী ও উপজেলা আওয়ামী লীগের জাদুরচর ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সভাপতি শাহা আলম জানান, বগুড়ার এক নারী উপজেলা আওয়ামী লীগের ধর্মবিষয়ক সম্পাদক সুরুজ্জামানের কাছ থেকে ১৫ লাখ টাকা নেওয়ার দাবি করেন। সায়দাবাদ বাজারে আবদুর রশিদের দোকানে বৈঠক হয়। বৈঠক চলাকালে নেত্রী হঠাৎ পালানোর চেষ্টা করলে সুরুজ্জামানের সামনে দাঁড়ান ওই নারী। এ সময় সুরুজ্জামান ওই নারীর মাথায় ঘুষি ও ধাক্কা দিয়ে পালানোর চেষ্টা করেন। এ সময় নারী নির্যাতনের এমন দৃশ্য দেখে স্থানীয় জনতা ওই নেতাকে ধাওয়া দিলে তিনি পানিতে ঝাঁপ দেন। পরে বিক্ষুব্ধ জনতা সেটিকে পানি থেকে বের করে ধুয়ে দেয়। এ সময় বিক্ষুব্ধ জনতার কাছ থেকে ওই নেতাকে সরিয়ে নেন ৫ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি শাহ কামাল।
যদুরচর ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি শাহা কামাল জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে সুরুজ্জামানকে পানিতে ডুবে থাকতে দেখেন। পরে আমরা তাকে উদ্ধার করি। এ সময় তার পাঞ্জাবি ও লুঙ্গি ছিঁড়ে যায়। এ সময় স্থানীয়দের মাধ্যমে জানতে পারি সে এক নারীকে ধাক্কা দিয়েছে। সেখানেই জ্ঞান হারান ওই মহিলা। এতে লোকজন ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে ধাওয়া করলে তিনি পানিতে ঝাঁপ দেন। পরে ওই নারীসহ সুরুজ্জামানকে থানায় পাঠানো হয়।
নির্যাতিত নারী লাভলী বেগম বলেন, ঢাকায় সুরুজ্জামান চাচার সঙ্গে দেখা হয়। তিনি নিজেকে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রীর বড় ভাই হিসেবে পরিচয় দেন। আমরা তাকে ২০১৯ সালে আমার ট্রান্সফার এবং আমার চাচাতো ভাইয়ের চাকরির জন্য ১৫ লাখ টাকা দিই। কিন্তু সে সেই টাকা দিচ্ছে না, উল্টো কিন্তু তিনি সেই টাকা না দিয়ে, আমাকে দিনের পর দিন ঘোরাচ্ছেন। টাকা ফেরত নিতে এ পর্যন্ত সাত-আটবার তার কাছে এসেছি। কিন্তু তিনি শুধু তালবাহনা করেন টাকা না দিয়ে। শুক্রবার রাতে তাকে সায়দাবাদ বাজারে দেখা পেয়ে টাকা ফেরত চাইলে তিনি আমার গায়ে হাত তোলেন। এ সময় আমি অসুস্থ হয়ে পড়ি। পরে সাধারণ মানুষ ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে ধাওয়া করেন।
এ দিকে এই ঘটনা নিয়ে এখন তোলপাড় চলছে সেখানে। সকলেই এমন একজন মানুষের বিচার চেয়েছেন। এ দিকে দলের নেতার এমন একটি কান্ড নিয়ে বেশ হতবাক হয়েছেন সেখানকার আওয়ামীলীগ নেতারাও। জানা গেছে তারা ওই নেতার বিরুদ্ধে নেবেন ব্যবস্থা।