সম্প্রতি কাতারভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম আল জাজিরায় একটি সাক্ষাৎকার দিয়েছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং সেই সাক্ষাৎকারে তিনি নানা বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই প্রসঙ্গ নিয়ে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন লেখক সাহাবুদ্দিন আহমেদ সুজন। নিচে সেটি তুলে ধরা হল
আল জাজিরার সাংবাদিক নিক ক্লার্ক “শেখ হাসিনাঃ গণতন্ত্রের ডিফেন্ডার অথবা আক্রমণকারিনী শিরোনামে একটি সাক্ষাৎকার নিয়েছেন”।২৬ মিনিটের সাক্ষাৎকারের শিরোনামের সাথে সাক্ষাৎকারের বিষয়বস্তু কোনভাবেই মিলাতে পারছিলাম না। কিন্তু ভেলকি টা দেখলাম জাস্ট ২০ মিনিট পরেই। প্রশ্ন বানে জর্জরিত করলেন ভোটাধিকার হরণ, মানবাধিকার লঙ্ঘন, ইনজাস্টিস, গু/ম আর খু/নের মত জঘন্য অপরাধগুলো তুলে এনে।
নিক ক্লার্ক ভদ্র ভাষায় ওনাকে স্বৈরশাসক বলে সম্বোধন করেছেন। কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে উনি ফিরে গেছেন সেই আদি যুগে। শাক দিয়ে কি আর মাছ ঢাকা যায়?
আধো আধো ইংরেজিতে প্রথম ২০ মিনিট সত্য মিথ্যার মাধুরী মিশিয়ে চালিয়ে গেলও এ পর্যায়ে ক্রমেই ঘামতে শুরু করলেন। উপায়ান্তর না পেয়ে চলে গেলেন চিরাচরিত ৭৫ এ।
যাইহোক, নিক ক্লার্কের লাস্টের প্রশ্নটা খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। সাংবাদিক ওনাকে প্রকারান্তে মিথ্যাবাদী অসৎ ব্যক্তি হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। জোর দিয়ে বলেছেন হোয়াট ডু ইউ থিংক অনেস্টলী হি (মুজিব) উড মেকআপ ইওর লিডারশিপ? একজন প্রধানমন্ত্রীকে প্রশ্ন করার আগে অনেস্টলি বলে এইভাবে প্রশ্ন করা বিরল!
সাংবাদিক উনার ভোটারবিহীন নির্বাচনের কথা খুব জোর দিয়ে বলেছেন। উনি বলেছেন আগামী নির্বাচন ও কি একইভাবে করতে চায় কিনা? এ লজ্জা কোথায় রাখি?
রোহিঙ্গা বিষয়ে প্রশ্নে উনি স্বীকার করে নিয়েছেন বাংলাদেশের মানুষ অবর্ণনীয় কষ্টে আছে।
ইন্টারভিউ এর প্রথম দিকে উনি স্বীকার করে নিয়েছেন বাংলাদেশ জাতিসংঘের ঘোষিত লিস্ট ডেভেলপড দেশের একটি। তাহলে ঘটা করে দেশের গরীব মানুষের ট্যাক্সের টাকায় শত শত কোটি টাকা কেন নষ্ট করা হলো মধ্যম আয়ের দেশ উদযাপন করার জন্য?সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে উনি বলেছেন আমাদের উন্নয়নের কি প্লেয়ার হচ্ছে খাদ্য, শিক্ষা এবং চিকিৎসা ক্ষেত্রে উন্নয়ন। মানুষ কিভাবে এত মিথ্যা কথা বলে?
বাংলাদেশ 2020- 21 অর্থবছরে ৭.৫ মিলিয়ন টন খাদ্য আমদানি করেছে যা বিগত ১০ বছরের ভিতরে সর্বোচ্চ। প্রথম আলোর তথ্যমতে সেই রেকর্ড ভঙ্গ করে গত বছর বাংলাদেশ ১০.৫ মিলিয়ন টন খাদ্য আমদানি করেছে। শুধু ভোজ্য তেল আমদানিতেই ব্যয় হয়েছে ২৪০ বিলিয়ন টাকা। ৮.৫ বিলিয়ন ব্যয় হয়েছে চউল আমদানিতে আর ১৮.৫ বিলিয়ন ব্যয় হয়েছে গম আমদানিতে।
বিশ্ব খাদ্য প্রোগ্রামের এক তথ্য বলছে বাংলাদেশের গড়ে ৬৮ শতাংশ মানুষ খাদ্য ক্রয় করতে হিমশিম খাচ্ছে। যার সংখ্যা ৭৫ শতাংশ সিলেট এবং বরিশালে।
শিক্ষা ক্ষেত্রে বাংলাদেশ এমন উন্নতিই করেছে যে বিশ্বের ৮ শত বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিতর বাংলাদেশের কোন বিশ্ববিদ্যালয় খুঁজে পাওয়া যায়নি। মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় জিপিএ ফাইভ পাওয়া অধিকাংশ শিক্ষার্থী “আমি জিপিএ 5 পেয়েছি” এর ইংরেজি অনুবাদ করতে পারে না। মাধ্যমিক পর্যায়ের পাঠ্য বইতে হিন্দুত্ববাদ ঢুকাতে ঢুকাতে সেটা বিজ্ঞান বা সমাজ বই নাকি আর এস এস বা বিজেপির কোন চটি পদাবলী সেটা বোঝার কোন উপায় নেই।
গত ১৪ বছরে চিকিৎসা ক্ষেত্রে যে হরিলূট হয়েছে তা বলাই বাহুল্য। বাংলাদেশ প্রাইভেট মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের তথ্যমতে বাংলাদেশের মতো একটা গরীব দেশ থেকে গত এক বছর ৫ লক্ষ মানুষ বাইরে গেছে শুধু চিকিৎসার জন্য। যেখানে ব্যয় করেছে ৩৩ হাজার কোটি টাকা, তার মানে একটা পদ্মা সেতুর সমমানের অর্থ। এই পাঁচ লক্ষের ৫৫ ভাগ মানুষ যায় ইন্ডিয়ার মতো একটি দরিদ্র দেশে।যাই হোক, পিনাকি দার ( Pinaki Bhattacharya – পিনাকী ভট্টাচার্য )ভিডিও আসার আগেই আমি বুঝে আপডেট দিয়ে দিলাম।