দীর্ঘদিন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার তেমন কোন খবর পাওয়া যাচ্ছিলো না তবে এবার হটাৎ আলোচনায় উঠে আসছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। তবে তিনি দুর্নীতির মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়ে সরকারি সিদ্ধান্তে সাজা স্থগিত করে এখন কারাগারের বাইরে গুলশানের একটি বাসায় অবস্থান করছেন। এরপর হঠাৎ করেই তাকে নিয়ে আলোচনা হয়।
ফৌজদারি অপরাধে সাজাপ্রাপ্ত একজন কারাগারে দণ্ডিত ব্যক্তির রাজনীতিতে কোনো প্রকাশ্য ভূমিকা থাকা উচিত নয়, তবে তার সাজা কোনো শর্তে স্থগিত করা উচিত কিনা তা নিয়ে বিএনপি নেতারা মাঝে মাঝে বিতর্ক করেন। রাজনৈতিক আলোচনায় এমন প্রশ্ন সামনে আনা হয়- তার অনুপস্থিতিতে বিএনপির শীর্ষ নেতা কে হবেন, দল ক্ষমতায় এলে কে হবেন সরকারপ্রধান ইত্যাদি।বিএনপির চলমান আন্দোলনে সম্প্রতি গুঞ্জন উঠেছিল। যে ‘১০ ডিসেম্বরের পর খালেদা জিয়ার নির্দেশে দেশ চলবে’।
গত বৃহস্পতিবার আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম খালেদা জিয়াকে কারাগার থেকে দেশে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে তার বক্তব্যে বলেন, তিনি রাজনীতি করবেন না বলে মুচলেকা দিয়েছেন।
ওইদিনই শেখ সেলিমের বক্তব্য গণমাধ্যমে মিথ্যা বলে জোরালোভাবে দাবি করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। দুই দলের পাল্টাপাল্টি বক্তব্যে আবারো সক্রিয় হয়ে উঠেছে রাজনীতির মাঠ। খালেদা জিয়ার নেতৃত্ব নিয়ে চলছে নানা হিসাব-নিকাশ।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের গতকাল সাংবাদিকদের বলেন, ‘পত্রিকায় দেখেছি আমাদের দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম একজন দায়িত্বশীল ব্যক্তি। তার কাছে নিশ্চয়ই এর প্রমাণ আছে। তার মতো লোক প্রমাণ ছাড়া কিছু বলবে- সেটাও বিশ্বাস করা যায় না।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল গতকাল বলেছেন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে আওয়ামী লীগ ভয় পায়। তার জনপ্রিয়তায় ভীত হয়ে দল তাকে মিথ্যা অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করে। খালেদা জিয়া রাজনীতি করবেন না- এমন কোনো মুচলেকা দেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না। শেখ সেলিমের বক্তব্য সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও বানোয়াট।
খালেদা জিয়ার আইনজীবী জয়নাল আবেদীন গতকাল বলেছেন, ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ ধারায় জামিনের কোনো বিধান নেই, যেটি সরকার এই সিদ্ধান্ত দিয়েছে। তিনি বলেন, ‘আসলে আমরা খালেদা জিয়ার জামিনের জন্য অনেকবার আদালতে আবেদন করেছি। কিন্তু আদালত জামিন দেননি। এরপর আমরা সরকারের হাতে থাকা ৪০১ ধারায় জামিনের আবেদন করি। ১৪৪ ধারায় স্থগিত সাজা দিয়ে তাকে ছেড়ে দেয় তারা। এখানে রাজনীতি না করার প্রশ্নই আসে না। এটা শেখ সেলিমের রাজনৈতিক বক্তব্য।
উল্লেখ্য, বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া দুর্নীতির দুই মামলায় মোট ১৭ বছরের সাজাপ্রাপ্ত হন। ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি তিনি কারাবন্দি হন। সরকারের নির্বাহী আদেশে ছয় মাসের জন্য শর্তসাপেক্ষে মুক্তি দেওয়া হয়। এরপর প্রতি ছয় মাস অন্তর তার সাজা স্থগিত করা হয়। এবারও হয়েছে ছয়বার।