Thursday, March 23, 2023
বাড়িopinionতলে তলে দেউলিয়া হয়ে গেছে দেশ, ঋণের কিস্তি পরিশোধ করতে না পারায়...

তলে তলে দেউলিয়া হয়ে গেছে দেশ, ঋণের কিস্তি পরিশোধ করতে না পারায় সময় চাইতে মস্কো যাচ্ছে মন্ত্রী : শামসুল

Ads

ডলার সংকটের কারনে দেশের অর্থনীতিতে পড়েছে ব্যাপক প্রভাব এবং কমেছে রিজার্ভের অর্থ। মূলত প্রবাসী আয় এর প্রবাহ এবং রপ্তানি আয় কমে যাওয়ার কারনে এই সংকট দেখা যাচ্ছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই প্রসঙ্গে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন লেখক শামসুল আলম। নিচে সেটি তুলে ধরা হল –

তলে তলে দেউলিয়া হয়ে গেছে দেশ
ডলারের অভাবে বিদেশি ঋণের কিস্তি পরিশোধ করতে পারছে না! শ্রীলংকাতে এরকম দশার কথা শোনা গিয়েছিল

বিল পরিশোধ করতে না পারায় চট্টগ্রামে আসা রমজান মাসের খাদ্য সামগ্রী, বিদ্যুৎকেন্দ্রের কয়লা, বিপিসির জ্বালানী তেল সহ জরুরী পণ্যসমাগ্রী জাহাজ থেকে খালাস পারছে না, এটা পুরাতন খবর। আইএমএফ থেকে পাওয়া আধা বিলিয়ন ডলারের সুখ সুখ অনুভূতির মধ্যেই পাওয়া গেছে কয়েকটি সাংঘাতিক খবরঃ

১) রূপপুর নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্লান্টের ফিজিবিলিটি স্টাডির জন্য আনা রাশান ঋণের ৫০ মিলিয়ন ডলার সুদের শেষ কিস্তি ১০ মিলিয়ন পরিশোধ করতে পারছে না বাংলাদেশ, সময় চাইতে মন্ত্রী ইয়াফেস যাচ্ছে মস্কো।
২) পায়রা বিদ্যুৎ প্রকল্পের পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ-চায়না পাওয়ার কোম্পানির ১.৯৮ বিলিয়ন ডলার ঋণের চতুর্থ কিস্তির ৩৮৭.৩৯ মিলিয়ন ডলার সুদ পরিশোধে ব্যর্থ হয়েছে।

৩) পেট্রোবাংলায় এলএনজি সরবরাহকারি প্রতিষ্ঠান কাতার গ্যাস ও ওমান ট্রেডিং ইন্টারন্যাশনালের কাছে ড্যামারেজ ও এলএনজি রিগ্যাসিফিকেশান প্রতিষ্ঠান সামিট এলএনজি ও এক্সেলারেট এনার্জির সাথে ক্যাপাসিটি চার্জের অপরিশোধিত বিল পেমেন্ট ডিফল্ট হয়েছে।

৪) সার আমদানীর জন্য কোনো ডলার দিতে পারছে না সরকার।
৫) আরও অনেক পেমেন্ট ৮-৯ বার পর্যন্ত ডেফার্ড (বিলম্বিত) করা হয়েছে।

সার্বিকভাবে সরকারের আর্থিক অবস্থা মেটেও ভালো না। শ্রীলংকা-পাকিস্তানের ঋণ ডিফল্টের মত বাংলাদেশের সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো গত ছয়/সাত মাস ধরে নিয়মিত ডিফল্ট করে যাচ্ছে। ঋণ পরিশোধের জন্য সময় চেয়ে চেয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক এবং সরকার রিজার্ভের শেষাংশ রক্ষা করার চেষ্টা করছে। কিন্তু তারা বুঝতেই পারছে না, ঋণের কিস্তি ডিফল্ট হওয়ার ফলে অর্থনীতিতে বড় ধরণের বিপদ তৈরি করছে। যেমন, বিজনেস পোস্ট রিপোর্ট করেছে, পায়রা বিদ্যুৎ প্রকল্পের চাইনিজ পার্টনার China Machinery Import and Export Company (CMC)কে ঋণের দায় শোধ না করায় ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে, এবং চীনে তাদের ক্রেডিট রেটিং ডাউনগ্রেড হয়েছে। ফলে সিএমসি ঘোষণা দিয়েছে তারা আর বাংলাদেশে তাদের প্রতিশ্রুত বিনিয়োগ করবে না। ফলে ২ বিলিয়ন ডলার পায়রা বিদ্যুৎ প্রকল্পের ভবিষ্যৎ ঝুকির মুখে।

সিএমসির নিজস্ব ক্রেডিট রেটিং ডাউনগ্রেড হওয়াটা বাকি সকল বৈদেশিক বিনিয়োগকারীদের জন্য এমন সাংঘাতিক সিগনাল যে, তারা লাভের টাকা তো নিতেই পারবে না, বরং তাদের বিনিয়োগের ক্ষতির দায় থেকে রক্ষা পাবে না। ফলে যাদের বড় বিনিয়োগ আছে, এবং বিশেষ করে যাদের বৈদেশিক মুদ্রায় দায় দেনা পরিশোধ করতে হয়, তারা দেশ ছাড়া শুরু করেছে এমন খবর দিয়েছে বণিকবার্তা। দেখা যাচ্ছে, রিজার্ভ রক্ষা করতে পেমেন্ট বন্ধ করে বিনিয়োগ হারাতে হচ্ছে!

বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র থেকে জানা গেছে, বিদেশী উৎস থেকে নেয়া বিশাল পরিমানে স্বল্পমেয়াদি ঋণ পরিশোধ নিয়ে চলতি বছরের শুরু থেকেই চাপ ছিল। এ চাপের কারণেই দেশে ডলারের বাজার অস্থিতিশীল হয়ে ওঠে। ২০১৮ সালেই বেসরকারি খাতের প্রায় ১৮ বিলিয়ন ডলার ঋণের মেয়াদ পূর্ণ হয়েছে। সরকারি খাতেরও ৫ বিলিয়ন ডলার বিদেশী ঋণ মিলিয়ে ২৩ বিলিয়ন ডলার পরিশোধের চাপ বাংলাদেশের ইতিহাসে এর আগে কখনই তৈরি হয়নি। তবে এসব বিদেশী ঋণের বেশির ভাগই পরিশোধে ব্যর্থ হয়ে সময় বাড়িয়ে নিয়েছে।

মূলত বিদেশী ঋণের কিস্তি পরিশোধ, আমদানী বৃদ্ধি, এবং বিভিন্ন ভাবে বাংলাদেশ থেকে বিপুল পরিমানে ডলার বাইরে পাচার হওয়ায় রিজার্ভের বিশাল মজুদে ধস নেমেছে। চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের সাত মাসে (জুলাই-জানুয়ারি) রেকর্ড পরিমানে ৯২০ কোটি বা ৯.২ বিলিয়ন ডলার বিক্রি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক, যেখানে গত অর্থবছরের পুরো সময় রিজার্ভ থেকে ৭.৬২ বিলিয়ন ডলার বিক্রি করেছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। যাতে স্পষ্ট হয়, রিজার্ভের ডলার পাচার হয়ে গেছে।

Looks like you have blocked notifications!
Ads
[json_importer]
RELATED ARTICLES

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

Most Popular

Recent Comments