চট্টগ্রাম বন্দরে লুকোচুরি ১৫ বছর বয়সী কিশোর ফাহিম সেখানে খেলার এক পর্যায়ে সে কন্টেনার এর মধ্যে লুকিয়ে পরে এবং পরবর্তীতে সে মালেশিয়াতে নিজেকে আবিষ্কার করে। মূলত ওই কন্টেইনারের ভেতরে ঢুকেই তার চোখে ঘুম লেগে আসে। কিন্তু ঘুম ভাঙলে পাত্রের মুখ বন্ধ হয়ে যায়। শতবার চেষ্টা করেও সেখান থেকে বের হতে পারেননি। এক সপ্তাহ এভাবে না খেয়ে কাটিয়ে দিলেন। এরপর যখন তাকে মুক্তি দেওয়া হয়, তখন তিনি মালয়েশিয়ায় ছিলেন। সিনেমার গল্প মনে হলেও ফাহিমের ক্ষেত্রে এমনটাই হয়েছে।
১১ জানুয়ারি চট্টগ্রাম বন্দরে লুকোচুরি খেলছিল ফাহিম। যে কন্টেইনারে তিনি প্রবেশ করেন সেটি মালয়েশিয়া যাওয়ার কথা ছিল। আর এভাবেই সে নিজের অজান্তেই ৩৭০০ কিলোমিটার দূরের একটি দেশে পৌঁছে গেল। কনটেইনারে ঢোকার ছয় দিন পর ১৭ জানুয়ারি ফাহিম বের হতে পারেন।
বাংলাদেশী জাহাজ থেকে কন্টেইনার আনলোড করার সময় মালয়েশিয়ার ক্লাং বন্দরের কর্মীরা তাকে উদ্ধার করে। এখন তাকে সেখানে একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সুস্থ হলে তাকে বাংলাদেশে পাঠানোর কথা রয়েছে।
জানা যায়, কন্টেইনার থেকে মালামাল খালাস করার সময় ফাহিম বের হয়। তাকে দেখে হতবাক বন্দর কর্মীরা। তিনি স্থানীয় ভাষা বলতে বা বুঝতে পারতেন না। তাই তার সঙ্গে কথা বলতে পারেননি বন্দর শ্রমিকরা। ওই কন্টেইনারে একটি মানব পাচারকারী চক্র তাকে পাচারের চেষ্টা করেছিল বলে তাদের সন্দেহ। তারা সঙ্গে সঙ্গে মালয়েশিয়া পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ এসে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারে, সেক্ষেত্রে মানব পাচার বা অন্য কোনো অপরাধ জড়িত নয়। ভুল করে পাত্রে আটকে যায় কিশোর। এরপর থেকে ৬ দিন আটকে ছিলেন। তিনি ভিতর থেকে সাহায্যের জন্য চিৎকার করেছিলেন, কিন্তু বাইরের কেউ তার আওয়াজ শুনতে পাননি।
খাবার বা পানি ছাড়া কীভাবে তিনি ৬ দিন বেঁচে ছিলেন তা এখনও সবার কাছে রহস্য। পরে তাকে অ্যাম্বুলেন্সে করে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তার চিকিৎসা চলছে। তিনি ডিহাইড্রেশনে ভুগছেন বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। তাকে দেশে ফিরিয়ে আনতে মালয়েশিয়া কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে।