বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাবর্তনে অংশ নিতে দেখা যায় রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদকে। তারই ধারাবাহিকতায় শনিবার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫৩তম সমাবর্তন অনুষ্ঠানে সভাপতির ভাষণে রাষ্ট্রপতি মো: আবদুল হামিদ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি কাজে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে।
রাষ্ট্রপতি হামিদ বলেন, “শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা ও গবেষণার জন্য উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করুন… যাতে তাদের বিদেশে যেতে না হয়।” উপাচার্যের নেতৃত্বে এবং ছাত্র শিক্ষকসহ সংশ্লিষ্ট সবার সহযোগিতায় প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয় গবেষণা ও উচ্চশিক্ষার কেন্দ্রে পরিণত হবে।
তিনি বলেন, নানা বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের কারণে সমাজে শিক্ষকদের সম্মান ক্রমেই সংকুচিত হচ্ছে। গুটিকয়েক অসাধু লোকের কর্মকান্ডে যেন সমগ্র শিক্ষক সমাজের মর্যাদা ক্ষুন্ন না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
রাষ্ট্রপতি বলেন, কিছু শিক্ষক বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকরিকে ঐচ্ছিক দায়িত্ব মনে করেন। তারা প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে খণ্ডকালীন কোর্স বা ক্লাস নিতে পছন্দ করে।
আবদুল হামিদ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষকই মেধাবী ও সেরা ছাত্র ছিলেন। “আমি বিশ্বাস করি আপনি যে কোনও ক্ষেত্রে সাফল্যের স্বাক্ষর রাখতে সক্ষম হবেন।”
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কর্মদক্ষতা ও যোগ্য নেতৃত্বে কয়েকদিনের মধ্যেই ‘স্মার্ট’ হবে ডিজিটাল বাংলাদেশ
‘বাংলাদেশ’ উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘কিন্তু এই ডিজিটাল যুগেও প্রায়ই অভিযোগ শোনা যায় যে শিক্ষার্থীরা ভর্তি প্রক্রিয়া থেকে শুরু করে সার্টিফিকেট প্রদান পর্যন্ত বিভিন্ন পর্যায়ে অবহেলা ও হয়রানির শিকার হচ্ছে।’
আবদুল হামিদ বলেন, একসময় প্রাচ্যের অক্সফোর্ড হিসেবে পরিচিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতি জাতির প্রত্যাশা অনেক বেশি এবং তা পূরণে বিশ্ববিদ্যালয়কে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে।
গ্র্যাজুয়েটদের অভিনন্দন জানিয়ে তিনি বলেন, স্নাতকরা যেন সমাবর্তন ও সার্টিফিকেটের মধ্যে সীমাবদ্ধ না থাকে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। দেশ ও জনগণের কল্যাণে সর্বদা নিজেকে নিয়োজিত রাখতে হবে। রাষ্ট্রপতি আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে প্রতিটি স্নাতক ডিগ্রিধারী সত্য ও ন্যায়ভিত্তিক সমাজ গঠনে নিজ নিজ অবস্থান থেকে আরও কার্যকর অবদান রাখবেন।
সমাবর্তন বক্তা নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ড. জ্যান থিয়েলকে স্বাগত জানিয়ে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, আপনার উপস্থিতি তরুণ গ্র্যাজুয়েটদের মানবজাতি ও সমাজের কল্যাণে কাজ করতে সমৃদ্ধ ও অনুপ্রাণিত করবে।’
ভাষণের শুরুতে রাষ্ট্রপতি গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, মহান মুক্তিযুদ্ধ ও ভাষা আন্দোলনসহ বিভিন্ন গণতান্ত্রিক আন্দোলনে জীবন উৎসর্গকারী জাতীয় চার নেতাকে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড.মো.আখতারুজ্জামান, উপাচার্য (প্রশাসন) প্রফেসর ড.মুহম্মদ সামাদ ও উপাচার্য (শিক্ষা) প্রফেসর ড.এএসএম মাকসুদ কামাল প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।