বহির্বিশ্বে সংকটের কারনে নানা ভোগান্তিতে পড়ছে বিশ্বের উন্নয়নশীল দেশগুলো তারই ধারাবাহিকতায় দেখা যাচ্ছে বাংলাদেশেও এই প্রভাব বিস্তার করছে। সেই সাথে দেখা যাচ্ছে বিভিন্ন দিক দিয়ে বেশ সংকটের মুখে পড়েছে দেশ বিশেষ করে জ্বালানি সংকট বর্তমানে বাংলাদেশে ব্যাপকভাবে রয়েছে। তবে খুব তাড়াতাড়ি সংকট কেটে যাবে বলে জানাচ্ছে সরকার
আগামী বছর পাইপলাইনের মাধ্যমে ভারত থেকে জ্বালানি তেল আমদানি শুরু হতে পারে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রবিবার (২০ নভেম্বর) সকালে আসাম বিধানসভার স্পিকার বিশ্বজিৎ দাইমারি গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রী এ আশাবাদ ব্যক্ত করেন। বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশ পাইপলাইনের মাধ্যমে ভারত থেকে তেল আমদানি করতে চায়। আশা করছি, আগামী বছর শুরু করা যাবে। ১৩০ কিলোমিটার দীর্ঘ ভারত-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ পাইপলাইন প্রকল্পের লক্ষ্য ভারত থেকে বাংলাদেশে তেল পণ্য রপ্তানি করা। দুই দেশের সীমান্ত হাট পুনরায় চালু করা হবে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনার সময় বন্ধ থাকায় বাংলাদেশ ও ভারতের সীমান্ত হাটগুলো দুই দেশের সীমান্ত রেখার বিভিন্ন স্থানে পুনরায় চালু করা হবে।
চার সদস্যের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন বিশ্বজিৎ দাইমারী। উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলোর ৩২ সদস্যের আইনসভার অংশ হিসেবে প্রতিনিধি দলটি বাংলাদেশ সফর করছে। প্রধানমন্ত্রী এই সফরের জন্য প্রতিনিধিদলকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, বাংলাদেশ সবসময়ই প্রতিবেশীদের সঙ্গে সুসম্পর্ক উন্নত করতে চায়। ভারতের সঙ্গে ছিটমহল বিনিময়ের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, দুই প্রতিবেশী দেশ আলোচনার মাধ্যমে অনেক বিরোধ নিষ্পত্তি করেছে।
আঞ্চলিক সহযোগিতার ওপর গুরুত্বারোপ করে শেখ হাসিনা বলেন, প্রতিবেশী নেপাল, ভুটান এবং ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য আসাম ও ত্রিপুরা পারস্পরিক সুবিধার জন্য চট্টগ্রাম বিমান ও সমুদ্র বন্দর এবং সৈয়দপুর বিমানবন্দর ব্যবহার করতে পারে। ১৯৬৫ সালের যুদ্ধের সময় বন্ধ হয়ে যাওয়া কানেক্টিভিটি রুটের কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, রুটগুলো পর্যায়ক্রমে চালু করা হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামী ও উদ্বাস্তুদের আশ্রয় দেওয়ার ক্ষেত্রে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য এবং পশ্চিমবঙ্গের অবদানের কথা কৃতজ্ঞতার সাথে স্মরণ করেন। আসাম অ্যাসেম্বলির স্পিকার বলেন যে তাদের বাংলাদেশ সফরে খুব ভালো অভিজ্ঞতা হয়েছে। প্রতিবেশী দেশগুলোর সহযোগিতায় আসামের মানুষ উপকৃত হবে। প্রতিনিধি দল এ অঞ্চলে বাণিজ্যের পাশাপাশি জনগণের মধ্যে যোগাযোগ বাড়ানোর ওপর জোর দেয়।
বিশ্বজিৎ দাইমারি বলেন, আসাম কৃষি খাতে বাংলাদেশি বিশেষজ্ঞদের সহযোগিতা চায়। কারণ এ খাতে বাংলাদেশের ব্যাপক অভিজ্ঞতা রয়েছে। ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ তুলে ধরে তিনি বলেন, বাংলাদেশের সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়ায় ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে এখন শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বিরাজ করছে।
প্রতিনিধি দলটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে বাংলাদেশের অভূতপূর্ব উন্নয়নের প্রশংসা করেন। এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. আহমদ কায়কাউস।
উল্লেখ্য, কিছু মাস আগে বাংলাদেশে হটাৎ করেই জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানো হয়েছিল এবং সেখানে কারন হিসেবে বলা হয়েছিল বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম বেড়ে যাওয়ার কারণেই এই মূল্যবৃদ্ধি হয়েছে।