গত ৭ তারিখে শীতলক্ষ্যা নদী থেকে বাংলাদেশ প্রকৌশল প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় বুয়েট শিক্ষার্থী ফারদিন নূর এর মরদেহ উদ্দার করা হয়েছে। এদিকে ফারদিনের পর গত পাঁচ দিনে পাশের বুড়িগঙ্গা নদী থেকে অজ্ঞাত দুই যুবকের লা’শ উদ্ধার করেছে নৌ পুলিশ। অন্যদিকে, প্রযুক্তি বিশ্লেষণ করে তদন্তকারীরা জানতে পারে, ৪ নভেম্বরের আগে ১ ও ২ নভেম্বর দুবার চনপাড়া এলাকায় যায় ফারদিন। আর ৪ নভেম্বর ফারদিনের সঙ্গে আরও এক যুবক ছিল। ফারদিন নিখোঁজ হ’য়ে লা”শ উদ্ধারের পরও যুবকের হদিস পাওয়া যায়নি।
ফারদিনের লাশ উদ্ধারের দুই দিন পর নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় সরকারি তেল ডিপো যমুনা অয়েল কোম্পানি ঘাট সংলগ্ন বুড়িগঙ্গা নদী থেকে এক যুবকে’র গ”লা”নো লা’শ উদ্ধার করেছে নৌ পুলিশ।আ’ঘা’তে’র চি’হ্ন এবং সে’লাই’য়ে’র দা’গ থাকা মৃ’ত’দে’হ’টি পচে যাওয়ায় শনাক্তের নমুনা রেখে এক দিন পর দাফন করা হয়। সবশেষ গতকাল শনিবার ফতুল্লার পাগলা পানগাঁও এলাকায় বুড়িগঙ্গা নদীতে কচুরিপানার সঙ্গে ভাসমান অবস্থায় আরেক অজ্ঞা’তপরিচয় যুবকে’র লা’শ উ’দ্ধার করে নৌ পুলিশ।
সূত্র জানায়, ফারদিনের সঙ্গে থাকা যুবকের সন্ধান না পাওয়া, ৪ নভেম্বর রাতে চনপাড়ায় মারধরের ঘটনা এবং বুড়িগঙ্গায় দুই যু’বকে’র লা’শ ভাসানোর ঘটনায় নানা প্রশ্ন উঠেছে। এসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজছে নৌপুলিশ ছাড়াও তদন্তকারী ইউনিটগুলো।
এদিকে চনপাড়া এলাকায় অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে সক্রিয় তিন যুবককে সন্দেহভাজন হিসেবে নজরদারিতে রেখেছে তদন্তকারীরা। বরিশাল থেকে রায়হান নামে এক যুবককে আটক করা হয়েছে। নূর জামাল নামে আরেক যুবককেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে বলে সূত্র জানায়।
বুয়েট ছাত্র ফারদিন মলার তদন্ত করছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এ ছাড়া র্যাব, নৌ-পুলিশসহ বিভিন্ন ইউনিটও ছায়া তদন্ত করছে।
গতকাল ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে ডিবি প্রধান হারুন অর রশিদ বলেন, আমরা এখনো প্রকৃত ঘটনা জানতে পারিনি। আর ডিবির পক্ষ থেকে আমরা কখনো বলিনি যে বুয়েটের ছাত্র ফারদিন ডেমরার চনপাড়ায় গিয়ে মা’দ’কে’র কা’র’ণে মা’রা গে’ছে। আবার মামলার আসামি ফারদিনের বন্ধুকে গ্রেপ্তার করেছি, সে ‘এটি করেছে, সেটাও আমরা বলছি না। আমরা পারিপার্শ্বিক, নানা বিষয় বিচার করছি। আমাদের দল সমস্ত তথ্য, তথ্য এবং উপাত্ত সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ করছে। ‘
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, ঢাকা শহরে তারা যেখানেই গেছেন, বিভিন্ন প্রযুক্তিগত মাধ্যমে আমরা তাদের খুঁজে পেয়েছি। ‘
তদন্তকারী একটি সূত্র জানায়, ৪ নভেম্বরের আগে তথ্য পাওয়া যায় ফারদিন ১ ও ২ নভেম্বর চানপাড়া এলাকায় যায়। ৪ নভেম্বর তার এক সঙ্গী মোটরসাইকেলে ছিল। প্রযুক্তি বিশ্লেষণে তার একটি নাম ‘পলাশ’ নামে পরিচিত। তবে ওই যুবকের বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যায়নি। ফারদিনের মরদেহ উদ্ধারের পর বুড়িগঙ্গা নদী থেকে দুই যু’ব’কে’র লা’শ উ’দ্ধারের ঘটনাও তদন্ত করা হচ্ছে। বুড়িগঙ্গা যেখানে শীতলক্ষ্যা মোহনায় মিলিত হয়েছে সেখান থেকে ফতুল্লা’র লা”শ পাওয়া গেছে।
কালের কণ্ঠের নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি দিলীপ কুমার মন্ডল জানান, ৯ নভেম্বর এক যুবক ও আরেক যুবকের ম’র’দে’হ উদ্ধার করা হয়। ৯ নভেম্বর উদ্ধার হওয়া যু”বকে”র লা”শ ময়”না’তদন্তের পরদিন অজ্ঞাত পরিচয়ে মাজদী কবরস্থানে দাফন করা হয়। . পাগলা নৌ পুলিশ ফাঁড়ির উপ-পরিদর্শক শাহজাহান আলী জানান, গত ৯ নভেম্বর উদ্ধার হওয়া লা”শে”র মা’থা’য়, কপালে ও চোখে আ’ঘা’তে’র চি’হ্ন এবং ক্ষ’ত’স্থানে সেলা”ই রয়েছে। ম’র’দে’হ প”চে’ যাওয়ায় শনাক্ত’করণের নমুনা দিয়ে কবর দেওয়া হয়।
পাগলা নৌ পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) শাহজাহান সাজু জানান, গতকাল উদ্ধার হওয়া লা’শ’টি বেশ কিছুদিন আগে থেকেই বি’কৃ’ত হয়ে গেছে। নি”হ”ত’ যু’বকে’র পরনে জিন্স প্যান্ট ও সাদা ফতুয়া ছিল। তার মা”থা”য় আ”ঘা”তে’র চি’হ্ন রয়েছে। লা”শ ময়নাতদন্তের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেনারেল (ভিক্টোরিয়া) হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে তদন্তকারী একাধিক সূত্র জানায়, ফারদিনের চাঁনপাড়ায় আসা ও যোগাযোগের ভিত্তিতে বিভিন্ন স্থানে সন্দেহভাজনদের ধরতে অভিযান চলছে। গতকাল রাত পর্যন্ত তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বলে জানা গেছে। এদের মধ্যে রায়হান ও নূর জামাল চানপাড়া এলাকায় অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে সক্রিয়।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ফারদিন সম্প্রতি নিখোঁজ হন। এবং পরবর্তীতে জানা যায় তিনি না ফেরার দেশে চলে গিয়েছেন। ঘটনার পর গত ৭ নভেম্বর বিকেলে নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদী থেকে ফারদিনের মরদেহ উদ্ধার করে নৌ পুলিশ।