Friday, March 24, 2023
বাড়িNationalবাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি কত টাকা বেতন পান, আরও কী কী সুবিধা পান

বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি কত টাকা বেতন পান, আরও কী কী সুবিধা পান

Ads

রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর একজন ব্যাক্তিকে নানা সুবিধা দেওয়া হয় বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী, রাষ্ট্রপতি আইন, প্রশাসনিক ও বিচার বিভাগীয় শাখার সকল শাখার অফিসিয়াল প্রধান এবং বাংলাদেশী সামরিক বাহিনীর সর্বাধিনায়ক।তিনি রাষ্টের সকল সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষমতা রাখেন দণ্ডিত ব্যক্তির সাজা স্থগিত, হ্রাস বা ক্ষমা করার অধিকার রাষ্ট্রপতির রয়েছে।

বর্তমানে, রাষ্ট্রপতি জাতীয় পরিষদ দ্বারা নির্বাচিত হয়। ১৯৯১ সালে সংসদীয় গণতন্ত্র প্রবর্তনের আগে, রাষ্ট্রপতি সরাসরি জনগণ দ্বারা নির্বাচিত হন। রাষ্ট্রপতির পদের মেয়াদ পাঁচ বছর। অনেকেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন।

প্রতিটি সাধারণ নির্বাচনের পর রাষ্ট্রপতি সংসদের প্রথম অধিবেশনের উদ্বোধনী ভাষণ দেন। বছরের প্রথম সংসদ অধিবেশনের প্রথম উদ্বোধনী ভাষণও দেন তিনি।

তার বক্তৃতা আসলে নতুন সরকারের নীতির একটি রূপরেখা মাত্র। জাতীয় পরিষদে পাস হওয়া প্রতিটি বিল রাষ্ট্রপতির সম্মতিক্রমে আইনে পরিণত হয়। বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি বেতন বা সম্মানী হিসেবে কত টাকা পান এবং একই সঙ্গে আরও কী কী সুবিধা পান তা অনেকেই জানেন না।

২০১৬ সালের সর্বশেষ সংশোধিত আইন অনুযায়ী, বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির বেতন বা সম্মানী ১২০,০০০ টাকা। এছাড়া রাষ্ট্রপতি ও তার পরিবারের সদস্যদের খাবার, বাসস্থান, চিকিৎসা, পানি, বিদ্যুৎ, গ্যাসসহ যাবতীয় খরচ রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে পরিশোধ করা হয়। রাষ্ট্রপতির সরকারি বাসভবনের টেলিফোন, পানি, বিদ্যুৎ, গ্যাসসহ সব ধরনের সেবার খরচ সরকার বহন করবে। এসব বিল ট্যাক্সের আওতায় আসবে না।

এ ছাড়া রাষ্ট্রপতি ও তার পরিবার এবং অফিসের কর্মকর্তা ও অতিথিরা পানীয় ও তামাকজাত পণ্যসহ বিভিন্ন পণ্য করমুক্ত কিনতে পারবেন। রাষ্ট্রপতি অবসরে গেলেও আইন অনুযায়ী ব্যক্তিগত স্টাফসহ অবসরকালীন সুবিধা পাবেন।

১৯৭৫ সালের আইন অনুযায়ী ‘রাষ্ট্রপতির বেতন ও ভাতা আইন’ প্রণয়ন করা হয়। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রাষ্ট্রপতি থাকাকালীন ১২ জুলাই ১৯৭৫ তারিখে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি (পারিশ্রমিক ও সুযোগ-সুবিধা) আইন ১৯৭৫ জাতীয় সংসদ দ্বারা পাস হয়েছিল। এরপর ১০ দফা আইন সংশোধন করা হয়।

১৯৭৫ সালে রাষ্ট্রপতির বেতন ২৫০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল। তারপর ১৯৮৭ সালে ১০ হাজার টাকা, ১৯৯২ সালে ১৫ হাজার টাকা, ১৯৯৮ সালে ২৩ হাজার টাকা, ২০০৫ সালে ৩৩ হাজার ৪০০ টাকা, ২০০৫ সালে ৬১ হাজার ২০ টাকা এবং সর্বশেষে ১০ হাজার টাকা করা হয়। ২০১৬ সালে তা করা হয় ১ লাখ ২০ হাজার টাকা। রাষ্ট্রপতি যে বেতন পান তা আয়কর থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত। রাষ্ট্রপতি প্রতি মাসে আড়াই হাজার টাকা ছুটি ভাতা পাবেন। এই টাকাও আয়করমুক্ত হবে। রাষ্ট্রপতি হিসেবে তার দায়িত্ব পালনের জন্য প্রয়োজনীয় সমস্ত অর্থও সরকার বহন করবে।

রাষ্ট্রপতির জন্য সরকারি আবাসনের ব্যবস্থা থাকবে। আসবাবপত্রসহ পুরো আসবাবপত্র ও মেরামতের খরচ সরকার বহন করবে। সেক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতি নিজের বাসা বা অন্য কোনো বাড়িতে থাকতে চাইলেও তা সুসজ্জিত ও উপযোগী করার দায়িত্ব সরকারের ওপর বর্তাবে। রাষ্ট্রপতির বাসভবন সংলগ্ন সড়ক মেরামত ও সংস্কারের খরচ সরকারকেই বহন করতে হবে।

রাষ্ট্রপতি আইন অনুযায়ী বিনোদন সুবিধা পাওয়ার অধিকারী। বঙ্গভবনে দেশি-বিদেশি অতিথি ও গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সাক্ষাৎ, ইফতার পার্টি, ঈদুল ফিতর, ঈদুল আজহা, বুদ্ধ পূর্ণিমা, দুর্গাপূজা, যীশু খ্রিস্টের জন্মদিন, পহেলা বৈশাখ, শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান ইত্যাদির খরচ সরকারের কাছ থেকে বহন করা হয়। মনোনীত সেক্টর। রাষ্ট্রপতি কোনো দেশি-বিদেশি অতিথিকে আপ্যায়ন করলে বা কোনো ধরনের উপহার দিলে তার খরচও সরকার বহন করবে।

রাষ্ট্রপতি ও তার পরিবারের সদস্যদের খাবারের খরচ সরকারি খাত থেকে মেটানো হবে। বাবুর্চি থেকে শুরু করে সংশ্লিষ্ট সব খরচ সরকার বহন করবে। আইনে পরিবারের সদস্য বলতে স্ত্রী, সন্তান, বাবা-মা এবং অবিবাহিত ভাইবোনকে বোঝায়, যারা তার ওপর নির্ভরশীল।

রাষ্ট্রপতি এবং তার পরিবারের সদস্যদের জন্য সরকার উপযুক্ত ও প্রয়োজনীয় যানবাহন নিশ্চিত করবে। রাষ্ট্রপতির যাবতীয় যাতায়াত ও বাসস্থানের খরচও সরকার বহন করবে। পরিবহন জ্বালানি সরকার বহন করবে এবং জ্বালানি করমুক্ত হবে। ভ্রমণের ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতি রেল, বিমান ও সমুদ্রপথে সবচেয়ে সুবিধাজনক আসন পাবেন। সরকার বিমান ভ্রমণের জন্য বার্ষিক ২৭ লাখ টাকার বীমা কভারেজ দেবে।

রাষ্ট্রপতি বা তার পরিবারের সদস্য এবং সরকারি ও বেসরকারি অতিথিদের জন্য ব্যবহৃত তামাকজাত দ্রব্যের ওপর কোনো কর আরোপ করা হবে না। এই ব্যক্তিদের দ্বারা খাওয়ার জন্য বাংলাদেশে উত্পাদিত পানীয়গুলিও কর থেকে অব্যাহতি পাবে।

সরকারি কাজে বিদেশ ভ্রমণের যাবতীয় খরচ সরকার বহন করবে। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে এ খাতের ব্যয় সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বহন করে।

রাষ্ট্রপতি ও তার পরিবারের সদস্যদের বাসভবনে সাধারণ চিকিৎসা সুবিধাও পাওয়া যাবে। এ ছাড়া সরকারি হাসপাতালে এবং বিশেষজ্ঞদের পরামর্শে বিদেশে চিকিৎসা নিতে পারেন।

এছাড়া রাষ্ট্রপতি ছয় মাস বা তার বেশি সময় পর অবসরে গেলেও তিনি তার বেতনের ৭৫ শতাংশ হারে মাসিক অবসর ভাতা পাবেন। এ ছাড়া রাষ্ট্রপতি অবসর গ্রহণের সময় সরকার কর্তৃক নির্ধারিত একজন ব্যক্তিগত সহকারী, একজন পরিচারক এবং সরকারী খরচ পাবেন। এছাড়া মন্ত্রীর সমান চিকিৎসা ব্যয়ও তিনি পাবেন।

প্রসঙ্গত, সম্প্রতি বাংলাদেশের ২২ তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে নাম এসেছে সাহাবুদ্দিন চুপ্পুর। বেশ কিছুদিন থেকেই রাজনৈতিক অঙ্গনে তাকে নিয়ে নানা আলোচনা চলছিল এবং শেষমেশ তিনি রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন।

 

 

 

Looks like you have blocked notifications!
Ads
[json_importer]
RELATED ARTICLES

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

Most Popular

Recent Comments