আগে ভাবতাম লর্ড অফ দা রিংস এর গালাম হচ্ছে দুই হাত দুই পা ওয়ালা প্রাণীদের ভেতর সবচেয়ে গা ঘিনঘিনে প্রাণী।
সেই রকম আর ভাবিনা।
কারণ আমি জানি দুই হাত দুই পা ওয়ালা প্রাণীদের ভেতর সবচেয়ে গা ঘিনঘিনে প্রাণী কে বা প্রানীগোত্র কারা।
বাংলাদেশী সাংঘাতিক।
পৃথিবীর যে কোন দেশের সাংবাদিকরা বাই লেটারাল ইস্যুতে নিজের দেশের স্বার্থ কতটুকু রক্ষা পাইলো সেখানে ফোকাস করে।
আর এই হারামজাদারা ?
অনেক আওয়ামী বিরোধী মানুষ দুঃখিত হাসিনাকে মোদী নিজে এসে রিসিভ করে নাই।
আমি তো মনে করি মোদী ঠিক কাজ করসে।
এই একটা জায়গায় মোদীকে থ্যাংকস দেয়া যায়।
২০১৪’র ভোট ডাকাতির পর হযরত তাহাজ্জুদ অ্যান্ড তসবী তার লঙ্গর বহর নিয়ে এই দেশ সেই দেশ ঘুরে বেড়াতো।
কোথাও তাকে কোন স্টেট প্রিমিয়ার এয়ারপোর্টে রিসিভ করতো না।
জুনিয়র মন্ত্রী বা ফরেন মিনিস্ট্রির সাউথ এশিয়ান ডেস্ক অফিসার এসে তাকে রিসিভ করতো।
গার্ড অফ অনার, রেড কার্পেট, প্রিমিয়ার রেসিডেন্সে ব্যাংকোয়েট – কিছুই তাকে দেয়া হইতো না।
সবাই জানে তার অবস্থান ডি ফ্যাক্টো, গায়ের জোরে ক্ষমতা দখলকারী, দেশের মানুষের ভোটে বৈধ এবং নির্বাচিত না।
মাঝখানে বিশ্ব রাজনীতির ফাকঝোকে এদিকে সেদিকে ম্যানেজ করে ফেলায় মানুষ সেগুলো ভুলে গেসিলো।
মোদী সেটা আবার মনে করায়া দিতেসে।
আমি নিশ্চিত – যদি বৈধ ভোটে নির্বাচিত হইতো, মোদী নিজে এসে প্রপার প্রোটোকল মেনে হাসিনাকে রিসিভ করতো।
সে জানে এরা অবৈধ, কালকেই রাজনৈতিক পরিস্থিতির পরিবর্তন হলে এরা সবাই সিউয়ারেজের টানেলে ঢুকে ম্যানহোলের ঢাকনা বন্ধ করে দিবে যাতে পাবলিক ঐ “গুয়ের ডাব্বা” থেকে ওদেরকে ড্র্যাগ আউট করতে না পারে গণধোলাই দেয়ার জন্য।
সেই কারনেই যে যেই সম্মানের উপযুক্ত, তাকে সেই সম্মানই দিতেসে।
কিন্তু আমাদের ঘা ঘিনঘিনে সাংঘাতিকগুলা কি করতেসে ?
তথাকথিত “মাননীয় প্রধানমন্ত্রী” লাল গালিচায় হাঁটলেন, মোদী নিজ হাতে হাসিনাকে বাড়িয়ে দিলেন শরবতের গ্লাস, আজ দিল্লীতে “মাননীয় প্রধানমন্ত্রী” যেভাবে দিন কাটালেন – এইসব নিউজ।
তাকে একটা জুনিয়র মন্ত্রী দিয়ে এয়ারপোর্টে রিসিভ করানোর পর এই অবস্থা।
যদি মোদী নিজে আসতো তখন এই সাংঘাতিকগুলা কি করতো ?
“দিল্লিতে সাজ সাজ রব, যেভাবে মোদী বরন করে নিলেন হাসিনাকে”, ” আজ ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে যেভাবে আপ্যায়িত হলেন হাসিনা”, ” লাল গালিচায় অফ হোয়াইট জামদানীতে যেমন প্রাণবন্ত দেখাচ্ছিলো হাসিনাকে”, ” হাসিনার গার্ড অফ অনারের সময় যে কাণ্ড ঘটলো ইন্দিরা গান্ধী এয়ারপোর্টের সাউথ টার্মিনালে”- এইসব বালছাল দিয়ে ভরায়া ফেলতো ব্লাডি বাস্টার্ডগুলা।
এরা এক সেকেন্ডের জন্য ভাবতো না – এই ট্যুরে আমার দেশ কি ঠকতেসে না জিততেসে।
এই সাংঘাতিক জানোয়ারগুলা এক সেকেন্ডের জন্য সেটা ভাবতো না।
আমি প্রায় সময় ভাবি – রাজাকারী বিদ্যা মহাবিদ্যা, যদি সেটা হয় নন মিলিটারাইজড।
শুধুমাত্র মিলিটারাইজড রাজাকার হলেই আপনি বিশাল বড় বিপদে পড়ে যাবেন এই দেশে।
এখানে অনেক সিভিল সার্ভিস অফিসার পাবেন যারা সমানে ঘুষ খাবে, দেশ বেচে দেয়া চুক্তির ড্রাফট তৈরি করে দেবে নিজে কমিশন পাওয়ার স্বার্থে।
রিটায়ার করার পর বেগম পাড়ায় চলে যাবে বাকী জীবনের জন্য।
সামান্য একটা অজুহাত।
বাসের ভাড়া, কাচা বাজারে জিনিসের দাম, আড়তে আড়তে বস্তার দাম আগুণ হয়ে যাবে, মজুদদারী করে এরা মানুষের জীবন অতিষ্ঠ করে তুলবে।
যদি বলেন – ভাই, সৎ ব্যবসা করলে তো আপনার মুনাফা কমবে না, বরং আপনার দোকানে ভিড় আরও বাড়বে কাস্টমারের, আপনার গাড়ীতে প্যাসেঞ্জার ফুল থাকবে সব সময়- এইসব ব্যবসায়ী কি বলবে জানেন ?
অন রেকর্ড না বলুক, অফ রেকর্ড যেটা বলবে সেটা হচ্ছে – বাঙালী দেখার টাইম নাই, খাইবি তো এই দামেই কিন্যা খা, নইলে মইরা যা। গাড়ীতে চড়বি তো এই ভাড়ায় চড়, নইলে হাইট্যা যা।
আপনি ভেজাল ওষুধ বা মানহীন ওষুধ তৈরী করা কোন ফার্মা কোম্পানিকে প্রশ্ন করেন – আপনার ওষুধ তো ভাই রিস্কি, মানুষ মারা যাইতে পারে, এরাও সেইম উত্তর দিবে।
বাঙালী দেখার টাইম নাই, আমার ওষুধ না খাইলে আরেকজনেরটা খা।
আর পুলিশ, কাস্টমস, রাজউক, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর – ইত্যাদি ইত্যাদি হাজারটা ইস্টিটিউটের নাম আর বলারই দরকার নাই।
এদের কারো – “বাঙালী দেখার টাইম নাই”।
এই যে দেখতেসেন, এরা সবাই কিন্তু রাজাকার।
এরা সবাই বাঙালী ঘৃণা করে, বাঙালি না খেয়ে মরলে, পায়ে হেঁটে চলে অজ্ঞান হলে, ঘুষ না দিতে পেরে পেরেশান হইলে, ভুল ওষুধের বিষক্রিয়ায় মারা গেলে কেয়ার করেনা।
বরং খুশী হয়, আনন্দ পায়।অথচ এদেরকে আপনি কখনো রাজাকার ট্যাগ দিতে পারবেন না।কারণ এরা নন-মিলিটারাইজড।
একটা ফেনোমেনন, একটা আইডিয়া তৈরী করা হইসে – রাজাকারে মানে টুপি দাড়ি আছে এবং মিলিটারাইজড।
যেহেতু উপরে যাদের কথা বর্ণনা করলাম এরা কেউ মিলিটারাইজড না, সেহেতু এরা হান্ড্রেড পারসেন্ট কাজে রাজাকার হওয়ার পরও নামে রাজাকার না। এবং এই নন মিলিটারাইজড রাজাকারের এই আনডিস্কাসড তালিকায় প্রথম ৩টা শ্রেণীর একটা হচ্ছে বাংলাদেশের সাংঘাতিকরা। এইসব নন মিলিটারিটারাইজড রাজাকাররা আবার বিভিন্ন দিবসে “বাংলার স্বাধীনতা আনলো যারা আমরা তোমাদের ভুলবো না” শিরোনামে পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিবে।রাজাকারের বিচারের মাধ্যমে জাতি হোক কলংকমুক্ত – সংহতি জানাবে।পারলে চাঁদাও দিবে শাহবাগিদের।
অথচ সে নিজেও রাজাকার, যুগের পর যুগ রাজাকার, তার কখনোই “বাঙালী দেখার টাইম নাই”, যেকোন মূহুর্তে একটা গ্রীন কার্ড আর দুই লাখ ডলারের জন্য সে বাংলাদেশকে বেচে দিয়ে ভাগবে।
আরও বড় অফার দিলে তো জাঙ্গিয়া পরে সাইয়া নাচ নাচবে হুজুরকে খুশী করে দেয়ার জন্য।
জাস্ট নন মিলিটারাইজড, এ কারনে এদেরকে আপনি কখনোই রাজাকার বলতে পারবেন না।
অথচ এরা বালিশের নিচে লুকায়া থাকা সাপের মত।
নিঃশব্দ, বিষাক্ত, স্টিলথী।
এই নন মিলিরাইজড রাজাকারের তালিকায় শিরোপাধারী হচ্ছে – জাতির বিবেক এবং বিশিষ্ট নাগরিক খেতাবধারী শয়তানগুলা।
এদের মত এতো সফিস্টিকেটেড নন মিলিটারাইজড রাজাকার দ্বিতীয়টা নাই।
অথচ এরাই দেশপ্রেম, জাতিপ্রেমের আইকন।
কি তামাশা।
অবশ্য এটাই স্বাভাবিক – যে যত বড় শয়তান, সে তত বেশী ইনোসেন্ট ভেক ধরতে পারে।
আর নন-মিলিটারাইজড রাজাকারের লো গ্রেড কারা জানেন ?
শাহবাগিরা।
একেবারে রাবিশ লো গ্রেড।
অথচ এরাই ইন্টারনেটে দেশ, স্বাধীনতা, জাতি নিয়ে হাদুম পাদুম সবচেয়ে বেশী করে।
কিন্তু আসলে এদের কারো “বাঙালী দেখার টাইম নাই।”
দেশের বাইরে একবার পা ফেলতে পারলে এরা বাংলা হেট করে, নিজের ছেলেমেয়েকে ইংরেজির বাইরে কথা বলতে দিবেনা, এদের পোশাক আশাকের ট্রান্সফর্মেশন দেখে বুঝবেন না এরা বাংলাদেশ অরিজিনেটেড।
কিন্তু লোকাল কমিউনিটির প্রোগ্রামে – সবুজ শাড়ী উইথ লাল ব্লাউজ, মাথায় লাল সবুজ পতাকার ব্যান্ডানা, সবুজ পাঞ্জাবি উইথ লাল চাদর – এইসব গায়ে দিয়া ভড়ং ধরবে, ফেসবুকে ছবি আপলোড করবে, এক বাটপাড়ের ছবিতে সমগোত্রীয় ১০০ বাটপাড় আইসা “লাভু” দিবে।