Friday, March 24, 2023
বাড়িopinionবিষয়টি এতোটাই স্পর্শকাতর এবং গোপনীয় যে, দেশের আদালতও অসহায় হয়ে পড়ে...

বিষয়টি এতোটাই স্পর্শকাতর এবং গোপনীয় যে, দেশের আদালতও অসহায় হয়ে পড়ে সরকারের কাছে : সঞ্জু

Ads

এবারের একুশে বইমেলায় অনেকেই তাদের লেখা বই নিয়ে এসেছেন তবে এই বই মেলায় নিষিদ্ধ করা হয়েছে ববি হাজ্জাজের লেখা “প্রেসিডেন্টের লুঙ্গি নাই” শিরোনামের একটি বই এই প্রসঙ্গ নিয়ে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন লেখক আব্দুল হাই সঞ্জু নিচে সেটি তুলে ধরা হল –

বইয়ের নাম ‘ববি হাজ্জাজের লুঙ্গি নাই’ হলে হয়তো বই মেলায় টিকে যেতো।
কিন্তু ‘প্রেসিডেন্টের লুঙ্গি নাই’ শিরোনামের কারণে মেলায় নিষিদ্ধ হতে হলো।

উপন্যাসটির ফ্ল্যাপে বইটি সম্পর্কে বলা হয়েছে, “কল্পনার এক আজব দেশ, যেখানে সব নিয়মকানুন তৈরি করে পোকামাকড়রা। তাদের ইশারাতেই পরিচালিত হয় দেশ। সেই দেশে আবার রাজনীতিও চলে, তবে সেটা প্রহসনের রাজনীতি। আর সেই রাজনীতির এক উত্তাল সময়ে আকস্মিকভাবে প্রেসিডেন্টকে তুলে নিয়ে যায় কীটপতঙ্গের হর্তাকর্তারা। কোথায় নিয়ে যায়, কেন নিয়ে যায় এর কোন জবাব দিতে তারা নারাজ। সেই ঘটনার একমাত্র সাক্ষী খালিদ। উত্তাল সেই সময়ের ঘটনাচক্রে পড়ে খালিদ তার নিজের আত্মপরিচয় খুঁজতে শুরু করে।”
বইটি একটি উপন্যাস। অর্থাৎ কাল্পনিক।

বইয়ের ভূমিকায় বলা হয়েছেঃ
“কল্পনার এক আজব দেশ, যেখানে সব নিয়মকানুন তৈরি করে পোকামাকড়রা।‘’
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এই পোকামাকড়গুলো হলো পুতুল বানিয়ে রাখা এমপি আর প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের কর্মকর্তা ও উপদেষ্টারা।

ভূমিকায় আরও বলা হয়েছেঃ
‘’ …এক উত্তাল সময়ে আকস্মিকভাবে প্রেসিডেন্টকে তুলে নিয়ে যায় কীটপতঙ্গের হর্তাকর্তারা।‘’
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদের সাবেক উপদেষ্টা ববি হাজ্জাজ এখানে এরশাদকে তুলে নিয়ে যাওয়ার দিকে ইঙ্গিত করে থাকতে পারেন।

সবচেয়ে স্ট্রাইকিং কথাটি হলোঃ
‘’(প্রেসিডেন্টকে) কোথায় নিয়ে যায়, কেন নিয়ে যায় এর কোন জবাব দিতে তারা নারাজ।‘’
এখানে বাংলাদেশে গুমের সংস্কৃতির দিকে ইঙ্গিত করেছেন ববি হাজ্জাজ। কেউ সাময়িকভাবে গুম হন, কেউ স্থায়ীভাবে। এরশাদকে অনেকবারই সাময়িকভাবে এবং কৌশল আরোপ করে গুম রাখার অভিযোগ আমরা সবাই জানি।

এসব গুমের সাথে বাংলাদেশের গোয়েন্দা এবং প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের সংশ্লিষ্টতা নিয়ে প্রশ্ন আছে।
কিন্তু জাতীয় নিরাপত্তা সহ নানা ধরনের নিরাপত্তার কারণ এবং অজুহাত দেখিয়ে যখন যাকে ইচ্ছা তুলে নিয়ে যাওয়া কি চলতেই থাকবে? এর কোনো জবাবদিহিতা থাকবেনা?
অবশ্যই থাকবে এবং থাকতে হবে।

জাতীয় নিরাপত্তায় গোয়েন্দা এবং গুপ্তচরদেরও জবাবদিহি করার পদ্ধতি থাকতে হবে।
বিষয়টি এতোটাই স্পর্শকাতর এবং অত্যন্ত গোপনীয় বিষয় যে, একটি দেশের আদালতও অসহায় হয়ে পড়ে সরকারের কাছে। যেমনঃ শামীমা বেগমকে রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার জন্য সরকার ঝুঁকিপূর্ণ মনে করছে। এখানে আদালত কোনভাবেই সরকারের এই অবস্থানের বিপক্ষে যেতে পারছেনা।

ব্রিটেনের অতি গোপনীয় বিষয়গুলো সব এমপিও জানতে পারেন না। কিন্তু চেক এন্ড ব্যালেন্স ঠিক রাখার জন্য পার্লামেন্টে বিরোধী দলীয় নেতাকে অবহিত রাখতে হয়। জেরেমি করবিন যখন লেবার দলের নেতা ছিলেন তখন ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ দলের একটি অংশ বলেছিল, জেরেমি করবিনের সাথে ফিলিস্তিনের হামাস নেতাদের ব্যাক্তিগত সাক্ষাত হয়েছিল। একারণে তিনিও রাষ্ট্রের নিরাপত্তার জন্য হুমকি। একই কারণে বিরোধী দলের নেতা হওয়া সত্ত্বেও তাঁকে রাষ্ট্রের গোপন বিষয়গুলো অবহিত করা নিরাপদ হবেনা।

জাতীয় নিরাপত্তায় গোয়েন্দা এবং গুপ্তচরদেরও জবাবদিহিতা থাকার গুরুত্ব বোঝাতেই ব্রিটেনের উদাহরণ দিলাম। চেক এন্ড ব্যালেন্স থাকতেই হবে।

Looks like you have blocked notifications!
Ads
[json_importer]
RELATED ARTICLES

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

Most Popular

Recent Comments