সড়ক দুর্ঘটনায় না ফেরার দেশে চলে গিয়েছে স্বামী অন্যদিকে হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে স্ত্রী সোনিয়া। বাম হাতে ক্যানুলা বুকে মেহেদি লাগানো। স্বামী শামীম হোসেনের মৃত্যুর খবর তাকে জানানো হয়নি। সোনিয়া বারবার তার স্বামীকে খুঁজছে যখন তার আত্মীয়রা তাকে দেখতে আসে। বলে, শামীমকে দেখতে চাই, দেখা করতে চাই। সে কোথায়? কেমন আছো বলো।’ ঘুম থেকে উঠেই অস্থির হয়ে উঠছেন সড়ক দুর্ঘটনায় আহত সোনিয়া খাতুন।
সোনিয়ার কান্না দেখে আশেপাশের রোগী ও তার স্বজন এমনকি চিকিৎসক ও নার্সরাও চোখের পানি ধরে রাখতে পারেননি। দুর্ঘটনায় সোনিয়ার ডান হাত ও দুই পা ভেঙে যায়। প্রচণ্ড ব্যথায় তাকে ওষুধ দিয়ে ঘুম পাড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু ঘুম ভাঙলে সে তার স্বামীকে খুঁজছে।
হাসপাতালে সোনিয়ার খালা পপি খাতুন জানান, দুর্ঘটনায় সোনিয়ার হাত ও পায়ে আঘাত লেগেছে। যার ফলে তিনি প্রচন্ড যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন। এ কারণে তাকে বেশির ভাগ সময় ওষুধ খেয়ে ঘুমিয়ে রাখা হচ্ছে। কিন্তু ঘুম ভাঙলে তিনি যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন এবং স্বামী শামীমকে দেখতে চান। মোবাইল ফোনে ভিডিও কল করলেও তাকে তার স্বামীকে দেখানো উচিত। তাকে এখনো জানানো হয়নি যে তার স্বামী শামীম মাত্র সদ্য বিবাহিত হওয়ায় ডাক্তারের পরামর্শে তার মৃত্যু হয়েছে।
সোনিয়ার মামা খায়রুল ইসলাম বলেন, ছোটবেলা থেকেই সোনিয়াকে মানুষ করে আসছি। একটা ভালো ছেলের সাথে মেয়ের বিয়ে দিয়েছি। আমার মেয়ে খুশি ছিল না। আমি আমার জামাইকে ভাগনী হাসপাতালে দাফন করেছি। ভেঙে পড়েছে পুরো পরিবার। তাকে প্রচুর রক্ত দিতে হবে। চিকিৎসায়ও অনেক টাকা খরচ হবে। আমি একজন ভ্যান চালক। ডাক্তাররা রাজশাহী নিয়ে যেতে বলেছে, কিন্তু পারিনি। আমি কি করতে হবে তা জানি না.
চুয়াডাঙ্গা নিউ ইউনাইটেড ক্লিনিকের মালিক রফিকুল ইসলাম ঝন্টু জানান, গতকাল রাতে ক্লিনিকের অর্থোপেডিক চিকিৎসক ডাঃ আলাউদ্দিন আজাদ অপারেশনের চেষ্টা করেন। কিন্তু শরীরে রক্ত না থাকায় অস্ত্রোপচার করা সম্ভব হয়নি। আমরা তাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে চিকিৎসা করছি।
উল্লেখ্য,গত বৃহস্পতিবার (২ মার্চ) সন্ধ্যায় চুয়াডাঙ্গার দর্শনায় মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় সোনিয়ার স্বামী শামীম হোসেন (২২) না ফেরার দেশে চলে গিয়েছেন । আর ওই মোটরসাইকেলে থাকা সোনিয়া গুরুতর আহত হয়ে এখন হাসপাতালে। এর আগে গত ২৬ ফেব্রুয়ারি তাদের বিয়ে হয়।