সম্প্রতি দেখা গিয়েছে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনে বেশ কিছু দল নিবন্ধনের জন্য আবেদন করেছে যা নিয়ে বেশ হাস্যরস তৈরী হয়েছে মানুষের মধ্যে। তবে এই সকল দলগুলোর বিষয়ে ভাল করে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে এদের অবস্থা খুবই নাজুক। কোনো কোনো দলের আবার অস্তিত্বই নেই।
‘নাকফুল’ বাংলাদেশ! এটি গয়না বা ফুল পরা মহিলার নাম নয়। না কোন সাংস্কৃতিক বা সামাজিক সংগঠন। এটি একটি রাজনৈতিক দলের নাম। সম্প্রতি নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধন পেতে আবেদন করেছে দলটি। তারা ২০১৮ সালেও ইসি নিবন্ধন চেয়েছিল।
এই দলের অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। নির্বাচন কমিশনে দেওয়া দলের চেয়ারম্যানের নাম স্বপন রেজা।
নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধন চাওয়া বেশ কয়েকটি দলের আকস্মিক ও আকস্মিক প্রবৃদ্ধির বিষয়টি জানতে বেরিয়েছে বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল
‘নতুন বাংলা’ দলীয় কার্যালয়, নিচতলা, বাড়ি নং। ১২ , রোড নং। ২০ , সি-ব্লক, মিরপুর-১০ । একরুমে অফিসের ভেতরে একটি হোমিওপ্যাথিক ওষুধের দোকান দেখা যায়। তারা ওষুধসহ বিনামূল্যে সেবা দিয়ে থাকেন বলে জানান দলটির প্রধান। স্থানীয়রা বলছেন, মাসখানেক আগে সাইনবোর্ড লাগানো হয়েছে। বেশিরভাগ সময় তা তালাবদ্ধ থাকে।
বাড়ির মালিক জানান, নিউ বাংলার সভাপতি আকবর হোসেন ফেটনের ভাইকে চিনি। আমরা ডিজি হেলথের একটি প্রকল্পে কাজ করি। ওই নামে একটা রুম ভাড়া নিয়েছি। তারা আমাকে তাদের দলের উপদেষ্টা হিসেবে রেখেছে। আমি তাদের পরামর্শ দেব।
মিরপুরের শেওড়াপাড়ায় অফিস রয়েছে আরেক নামসর্বস্ব রাজনৈতিক দল ‘বাংলাদেশ গরিব পার্টির’। অফিস ঢাকায় হলেও এর সভাপতি থাকেন সুনামগঞ্জে। তিনি নিজেকে স্থানীয় মুইনুল হক কলেজের প্রিন্সিপাল দাবি করেন। তার এই নামের বিষয়ে জানতে চাইলে গরিব পার্টির সভাপতি অধ্যক্ষ মো. মতিউর রহমান বলেন, মানুষ হাসলে কিছু করার নাই। গরিবের অধিকার প্রতিষ্ঠায় আমি এই দল করেছি। তারা এমপি-মন্ত্রী-চেয়ারম্যান হবেন। মানুষের অধিকার বুঝিয়ে দেবেন। তাছাড়া আমি মানুষকে বিনা টাকায় হাসাতে পারছি। এটাইতো সবচেয়ে বড় বিষয়
৫৩ পুরানা পল্টনে বায়তুল আবেদের অষ্টম তলায় ‘নৈতিক সমাজের অফিস পাওয়া গেছে। দেখা যায় দরজায় একটি কাগজের নামফলক। ধাক্কা দিয়েও কাউকে পাওয়া যায়নি। সভাপতি ভবনের নিরাপত্তাকর্মীরা ক্যামেরার বাইরে জানান, অফিসটি বেশিরভাগ সময়ই বন্ধ থাকে। ইসিতে জমা দেওয়া নতুন এই দলের সভাপতি সাবেক সেনা কর্মকর্তা। যার নাম মেজর জেনারেল অবসরপ্রাপ্ত আমসা আমিন
.
ইত্যাদি বাংলাদেশের একটি জনপ্রিয় টেলিভিশন ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান। হাবিবুর রহমান ইত্যাদি সাগর এই নামে রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন চেয়েছেন। তিনি মুঠোফোনে বলেন, সবকিছু ছেড়ে রাজনীতিকে পেশা হিসেবে নিয়েছেন। তার দলের কোনো কার্যালয় নেই। তিনি কিশোরগঞ্জের বাজিতপুরের নোয়াপাড়ার একটি মাজার থেকে দলকে নেতৃত্ব দেন।
১৪টি দলের অংশীদার বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক পার্টি-কেএসপির কার্যালয় মৌচাক টাওয়ারে রয়েছে। ভবনের তৃতীয় তলায় এই অফিসের মধ্যে আরও একটি ব্যবসায়িক অফিস রয়েছে। বলতে গেলে এ দলের চেয়ারম্যান নেই। শেরে বাংলার সাধারণ সম্পাদক একে ফজলুল হক আদর্শ বাস্তবায়নে নাতনিকে চেয়ারম্যান করার কথা বলেন।
অনেকের দাবি, এসব রাজনৈতিক দল স্বপ্ন দেখে আগামী নির্বাচনের পর তারা বিরোধী দলের ভূমিকা পালন করবে।
যে ৮০টি দল নিবন্ধন চেয়েছে তার মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত পেশী লীগ দল জয়পুরহাট থেকে পরিচালিত হয়। এই গোষ্ঠীর মূল রত্নটির কোন চিহ্ন পাওয়া যায়নি। বঙ্গবন্ধু সুবিধাবঞ্চিত ও প্রতিবন্ধী উন্নয়ন পরিষদ ময়মনসিংহ থেকে চলে।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি মুশকিল লীগ নামের একটি দল নির্বাচন কমিশনে আবেদন করেছিল যা নিয়ে বেশ হাস্যরস তৈরী হয়েছিল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তবে এবার আরো বেশ কিছু দল এর নাম প্রকাশ পেয়েছে যা নিয়ে রীতিমতো আলোচনা সমালোচনা চলছে