সম্প্রতি না ফেরার দেশে চলে গিয়েছে সাবেক মন্ত্রী ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা। তবে তার বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবন নিয়ে রয়েছে নানা আলোচনা সমালোচনা। তিনি না ফেরার দেশে যাওয়ার আগে তৃণমুল বিএনপি নামের একটি দল গঠন করেছিলেন যা ব্যাপক আলোচন তৈরী করেছিল রাজনৈতিক অঙ্গনে। এই প্রসংঙ্গে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন লেখক শামসুল আলম। নিচে সেটি তুলে ধরা হল –
দেউলিয়া লীগকে বাঁচাতে যত ধরণের কু’কাজ করা হয়: ভোটার লিস্টে গন্ডগোল করা, ভোটারদেরকে ভোট কেন্দ্রে ঢুকতে না দিয়ে ভোট ডাকাতি, বিরোধীদলকে মামলা হামলা জখম করে মাঠে নামতে না দেয়া, দিনের ভোট রাতে কাটা, ভোট ছাড়াই ফলাফল ঘোষণা ইত্যাদি করে করে ১৫ বছর পার করলো।
তবে আগামী সাধারণ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে তারা বিএনপিকে অসম্ভব ভয় পাচ্ছে, সেজন্য বিএনপিকে টার্গেট করেও চলছে অনেক অপতৎপরতা। এর মধ্যে অন্যতম হলো সাবেক মন্ত্রী ব্যারিস্টার নাজমুল হুদাকে (বর্তমানে মৃত) মামলার চাপে রেখে “তৃণমুল বিএনপি” নামে একটি নামসর্বস্ব দল বানিয়ে জনগনকে বোকা বানানোর অপচেষ্টা করেছিল। কিন্তু মহান আল্লাহ তাদের সে কুচেষ্টা ভন্ডুল করে দিয়েছেন।
নাজমুল হুদা ঐ দলটি নিবন্ধনের জন্য ২০১৮ সালে আবেদন করলেও দল নিবন্ধনের জন্য শর্তসমুহ পূরণ না করায় নিবন্ধন পায়নি। পরে তিনি হাইকোর্টে যান, হাইকোর্ট তার পক্ষে রায় দিলেও আপীল বিভাগে আটকে থাকে। দীর্ঘদিন ঝুলিয়ে রাখার পরে হঠাৎ এ মাসেই আপীল খারিজ করে দিয়ে নামসর্বস্ব দলটিকে নিবন্ধনের সুযোগ করে দেয়া হয়। সবাই বুঝতে পারছিল এই কাজটি করা হয় আওয়ামী লীগের বদ মতলবে।
লীগের ধারণা, আগামী নির্বাচনে বিএনপি অংশ নিবে না, তখন যারা দলছুট হয়ে নির্বাচনে যেতে চাইবে, তাদেরকে নাজমুল হুদার এই দলে ঢুকিয়ে আওয়ামীলীগ বৈতরণী পার হবে। সেই জন্যই তড়িঘড়ি করে “তৃণমূল বিএনপি”কে জরুরীভাবে নিবন্ধন দেয়া হয়। নির্বাচন কমিশনের প্রজ্ঞাপনে দলটির ‘প্রধান কার্যালয় ৩৩ তোপখানা রোড, ১৫/সি মেহেরবা প্লাজা (১৬ তলা), পল্টন ঢাকা-১০০০-এ অবস্থান’ দেখালেও সরেজমিন এই নামে দৃশ্যমান পরিচিতিসহ কোনও রাজনৈতিক দলের কার্যালয় পাওয়া যায়নি।
অথচ, রাজনৈতিক দল হিসাবে নিবন্ধন পেতে হলে যে সব শর্ত পূরণ করতে হয়, তা তৃণমূলের ছিল না, যেমন যে কোনো সংসদ নির্বাচনের কমপক্ষে একটি আসন লাভ; সংসদ নির্বাচনে মোট প্রদত্ত ভোটের অন্তত ৫ শতাংশ লাভ; কেন্দ্রীয় কমিটিসহ একটি কেন্দ্রীয় কার্যালয় এবং দেশের অন্তত এক-তৃতীয়াংশ জেলায় ও অন্তত ১০০টি উপজেলায় বা মেট্রোপলিটন থানায় কার্যালয় প্রতিষ্ঠা, যার প্রতিটিতে সদস্য হিসাবে কমপক্ষে দুই’শ ভোটারের তালিকাভুক্তি।
এসব শর্ত পূরণ না থাকা স্বত্ত্বেও “তৃণমূল বিএনপি” নামে ঐ নামসর্বস্ব দলকে হাইকোর্টে রায়ের দোহাই দিয়ে নিবন্ধন দেয়ার পেছনে যে ষড়যন্ত্র কাজ করছিল, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। নতুন দলের নিবন্ধন নিয়ে সুশীলসমাজ ও গণমাধ্যমে আগে থেকেই শঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছিল যে, প্রভাবিত হয়ে ইসি এমন কোনো নামসর্বস্ব, প্যাডসর্বস্ব দলকে নিবন্ধন দেয় কি না- যেটি প্রভাব খাটানো দলের লেজুড়বৃত্তি করবে।
সিস্টেম করে সেই অপকর্মটিই যখন করলো সরকার, তার অনেক আগেই নাজমুল হুদা গুরুতর অসুস্থ হয়ে সংজ্ঞাহীন ছিল, ফলে তিনি এ খবর না জেনেই তিনি পরপারের পথে পাড়ি জমিয়েছেন ক’দিন পরে।
এভাবেই লীগ বাঁচাতে কোরামিন মিশনের যবনিকাপাত ঘটে।