Thursday, March 23, 2023
বাড়িAbroadআমেরিকায় দাঁড়িওয়ালা মাছ প্রবেশ নিষিদ্ধে প্রবাসীর হাহাকার

আমেরিকায় দাঁড়িওয়ালা মাছ প্রবেশ নিষিদ্ধে প্রবাসীর হাহাকার

Ads

বাংলাদেশ থেকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মাছ রপ্তানি হয় বিশেষ করে দেশের নদী পুকুরের মাছগুলো অনেকেই বিদেশের মাটিতে বসে পান। তবে অনেক সময় দেখা যায় মৎস আমদানিকারকদের নানা ছলচাতুরির কারনে এই ক্ষেত্রে অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। তেমনটাই মার্কিন যুক্তরাষ্টে লক্ষণীয় ছিল।

দাড়িওয়ালা মাছ আমেরিকায় প্রবেশ নিষিদ্ধ। তবে কোভিড মহামারীর সময় থেকেই এই নিষেধাজ্ঞা জারি রয়েছে। আমি জানি না ঠিক কী কারণে এই নিষেধাজ্ঞা। যাইহোক, আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি যে কোন বাংলাদেশী মাছ আমদানিকারক অবশ্যই দু নম্বরি করার ফলে নিষেধাজ্ঞার শিকার হয়েছেন।

মহামারীর আগে, নিউ ইয়র্কের মুদিখানাগুলিতে প্রতিদিন দাড়িওয়ালা মাছের সরাসরি ফ্লাইট পাওয়া যেত। আমি সেই সাপ্তাহিক ফ্লাইটে মাছ আসার অপেক্ষায় থাকতাম। সব দাড়িওয়ালা মাছ যেমন আইর মাছ, ট্যাংরা-গুলশা, বোয়াল ইত্যাদি টাটকা খাওয়া যেতে পারে – সম্ভবত ১ -২ দিন এর পুরোনো । কিন্তু আমাদের জন্য তা তাজা।

এক সময় দাড়িওয়ালা সব মাছ যেমন আইর মাছ, ট্যাংরা-গুলশা, বোয়াল ইত্যাদি যুক্তরাষ্ট্রে তাজা পাওয়া যেত।

যেহেতু সেই মাছটিও বন্ধ হয়ে গেছে, আমার মতো যারা কেবল মাছ খায় তাদের জন্য এটি একটি সত্যিকারের বিপদ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বলা যায় ইলিশ মাছ ছাড়া আর কোনো ভালো মাছ পাওয়া যায় না। যাও বিক্রি হয় তা কোনটা ৬ মাস, কোনটা বা এক-২ বছরের পুরাতন। ওসব মুখে দেয়া যায় না।

দুবাইতে স্থানীয় তাজা মাছ পাওয়া যায় না। কিন্তু কাছাকাছি দেশ হওয়ায় বাংলাদেশ-বার্মা-ভিয়েতনাম-কম্বোডিয়া-লাওস-থাইল্যান্ড প্রভৃতি নদীতে একই সংস্কৃতির মাছ পাওয়া যায় এবং সে কারণে আয়ের-বোয়াল-পাবদা বা ট্যাংরা-গুলশাসহ আরও কিছু দেশীয় মাছ। থাইল্যান্ডের নদীতেও পাওয়া যায়। স্বাদ একই রকম।

ব্যাংককে প্রথম কয়েকদিন আমি বারমুংগ্রাদ হাসপাতালের গেটে মনিকা’স কিচেন অ্যান্ড স্টার রেস্তোরাঁয় খেয়েছি – হাবিজাবি বিক্রি করে চড়া দামে। তখন অ্যাম্বাসেডর হোটেলের কাছে একটা অভিনব বাংলাদেশী রেস্টুরেন্ট পেলাম; নাম লিটল স্পাইসি।

প্রথম দিনেই ওদের চাকচিক্যের চেয়ে খাবারের মানেই বেশী মুগ্ধ হয়ে যাই। ব্যাংককে নয় যেন ঢাকায় বসে খাচ্ছিলাম ওদের খাবার প্রথম দিন রেস্তোরাঁর মালিক আমার টেবিলে এসে নিজেকে কুমিল্লার লোক বলে পরিচয় দেন। তাদের আতিথেয়তায় আমিও মুগ্ধ। গ্রাহক সেবা বিশ্বমানের। ব্যাংককে এমন একটি বাংলাদেশী রেস্তোরাঁ পেয়ে আমি সত্যিই মুগ্ধ। এত উন্নতমানের বাংলাদেশী রেস্তোরাঁ পৃথিবীর আর কোনো শহরে পাওয়া যাবে বলে আমার মনে হয় না!

গতকাল দুপুরে ওয়েটারকে বলেছিলাম, মাছ বা বোয়াল মাছ থাকলে সে অবশ্যই আমার জন্য আলাদা করে রাখবে; অনেক রাত হলেও খেতে আসব। রাত সাড়ে ১০টার দিকে রেস্টুরেন্টে পৌঁছে শুনলাম তারা আমার জন্য এক টুকরো বোয়াল মাছ রেখে গেছে। বউ তাজা সেদ্ধ মাছের একটি বড় টুকরা। দারুণ রান্না, খাওয়াও দারুণ। আমার খারাপ লাগছিল যে আমি আর এক টুকরো পায়নি।

আজ রাতে খেতে যাবার পর ওয়েটার এসে বললো আজকে সে আমার জন্য ২ পিস মাছ আলাদা করে রেখেছে। আমি খুব খুশি. জানতে চাইলেন, আমি একা দু-এক টুকরো আয়ের শেষ করতে পারব কিনা?
আপনি কি বলেন?

আমার মনে হলো দুই টুকরো তাজা মাছ এবং ভাত খেয়ে হোটেলে ফিরে যাই – তাহলে আমার থাইল্যান্ড ভ্রমণ ছিল ১০০% ফলপ্রসূ।

উল্লেখও, করোনা মহামারীর সময় অনেক দেশে পণ্য নিয়ে নানা নিয়মকানুনের মধ্যে দিয়ে আমদানি রপ্তানি কার্য সম্পাদন করতে হয়েছে এবং ঐসময়টাতে দেখা গিয়েছিল মার্কিন যুক্তরাষ্টে দাড়িওয়ালা দেশি মাছ নিষিদ্ধ করা হয়।

Looks like you have blocked notifications!
Ads
[json_importer]
RELATED ARTICLES

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

Most Popular

Recent Comments