দীর্ঘ দিন থেকেই পাকিস্তানে দেখা যাচ্ছে রিজার্ভ সংকট আরো প্রকট হয়েছে এবং সেই সাথে দেশটির আর্থিক সংকটের চিত্র ফুটে উঠেছে ব্যাপকভাবে। দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ ধসে পড়েছে। দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৩ .০৯ বিলিয়ন ডলারে নেমে এসেছে, যা ১৯৯৮ সালের পর সর্বনিম্ন। রিজার্ভ তিন সপ্তাহের মূল্যের আমদানি কভার করার জন্য সবেমাত্র যথেষ্ট। এখন দেশটির রিজার্ভে মাত্র ১৮ দিনের আমদানি ডলার রয়েছে।
স্টেট ব্যাঙ্ক অফ পাকিস্তানের মতে, শুক্রবার আবার রুপির অবমূল্যায়ন হয়েছে। আন্তঃব্যাংক বাজারে প্রতি ডলারে স্থানীয় মুদ্রা দাঁড়িয়েছে ২৭৬ .৫৮ টাকা। বৃহস্পতিবার ডলারের বিপরীতে রুপি ছিল ২৭১.৩৬, যা ইতিহাসে সর্বনিম্ন। খোলা বাজারেও রুপি ০.১৮ শতাংশ কমেছে।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) প্রতিনিধিদল বর্তমানে পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদে রয়েছে। স্থবির বেলআউট কর্মসূচির অধীনে বকেয়া অর্থ মুক্তির জন্য দেশটি আইএমএফের সাথে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। এটি সফল হলে আইএমএফের ঋণের অর্থের পাশাপাশি অন্যান্য প্ল্যাটফর্ম থেকে অর্থ পাওয়া সহজ হবে।
আইএমএফ স্থানীয় মুদ্রার জন্য বাজার-নির্ধারিত বিনিময় হার এবং শক্তি ভর্তুকি সহজীকরণ সহ বেলআউট পুনরায় শুরু করার জন্য বেশ কয়েকটি শর্ত সেট করেছে। তারপরে স্টেট ব্যাঙ্ক অফ পাকিস্তান সম্প্রতি বিনিময় হারের উপর একটি সীমা তুলে নিয়েছে এবং সরকার জ্বালানির দাম ১৬ শতাংশ বাড়িয়েছে।
রয়টার্সের মতে, পাকিস্তানের বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর কাছে বর্তমানে ৫.৬৫ বিলিয়ন ডলার রিজার্ভ রয়েছে। ফলে দেশের মোট তারল্যের পরিমাণ ৮ দশমিক ৭৪ বিলিয়ন ডলার।
স্থানীয় বিনিয়োগ সংস্থা আরিফ হাবিব লিমিটেডের (এএইচএল) মতে, রিজার্ভ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ থেকে তাদের সর্বনিম্ন স্তরে রয়েছে, মাত্র ১৮ দিনের আমদানিতে।
এএইচএল-এর গবেষণা প্রধান তাহির আব্বাস বলেছেন, সঙ্কট এড়াতে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব নতুন বিনিয়োগ এবং আইএমএফ প্রোগ্রাম পুনরায় চালু করা প্রয়োজন।
মুদ্রা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিনিময় হার বাজারে ছেড়ে দিলেও পরিস্থিতি অনিশ্চিত থাকায় রপ্তানিকারকরা এবং অন্যরা বাজারে তাদের ডলারের হোল্ডিং বিক্রি করতে নারাজ।
ব্যাংকাররাও বলছেন, রপ্তানি-সংক্রান্ত ডলারের প্রবাহ শুরু হলেও গতি ধীর।
অর্থনৈতিক টানাপোড়েনে জর্জরিত পাকিস্তানের সাড়ে ৬ বিলিয়ন ডলার ঋণ আবেদনের আলোচনায় আইএমএফকে আরও কঠিন পরিস্থিতিতে ফেলছে বলে মন্তব্য করেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফ।
পাকিস্তানে রিজার্ভ সংকট এর ব্যাপারটি এখন আরো বেশি জটিল ভাবে প্রকাশ পাচ্ছে কমে এসেছে দেশটির কেন্দ্রীয় রিজার্ভ এমত অবস্থায় গত শুক্রবার পেশোয়ারে এক বৈঠকে শাহবাজ শরীফ বলেন, এই মুহূর্তে আমরা অকল্পনীয় সংকটে আছি। এমতাবস্থায় আইএমএফ থেকে ঋণ পেতে যে শর্ত পূরণ করতে হবে তা নিয়ে ভাবার মতো অবস্থায় নেই।