সম্প্রতি ইতিহাসের প্রলয়কারী ভূমিকম্পের মুখে পরে বিধস্ত হয়েছে তুরুস্ক। ভয়াবহ এই ঘটনায় ৪০ হাজারের অধিক মানুষ না ফেরার দেশে চলে গিয়েছে। বিধস্ত তুরুস্কে সংসস্তুপের নিচে চাপা পরে থাকা মানুষদের উদ্ধার করতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে মানুষ গিয়েছে তারই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ থেকেও উদ্ধার কর্মী গিয়েছে।
তুরস্কে যাওয়া ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধারকারী দলের টিম লিডার ও ঢাকা বিভাগের উপ-পরিচালক দিনমনি শর্মা বলেন, আমাদের কাজ দেখে তুরস্কের বাসিন্দারা সব সময় আমাদের ভাই বলে সম্বোধন করছেন। তারা স্লোগান দিচ্ছিল বাংলাদেশ বাংলাদেশ। এমনকি তারা আমাদের উত্সর্গ দেখে আমাদের জড়িয়ে ধরে।
বুধবার (২২ ফেব্রুয়ারি) ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি তুরস্কে উদ্ধার অভিযান পরিচালনার অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন।
দিনমনি শর্মা বলেন, বিদেশে কাজ করার অভিজ্ঞতা আমাদের জন্য সম্পূর্ণ নতুন। এটা আমাদের জন্য খুব কঠিন ছিল, তুরস্কে রানা প্লাজার মতো শত শত ভবন ধসে পড়েছে। আমরা আদিয়ামান শহরে কাজ করেছি। পরিকল্পিত শহর হওয়া সত্ত্বেও সেখানকার সব ভবন ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। দাঁড়িয়ে থাকা দুটি ভবনেও ফাটল ধরেছে।
তিনি বলেন, আমরা তুরস্কের দুটি প্রদেশের ১১টি ভবনে উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করেছি। যেখানেই কাজ করেছি সেখানেই সফল হয়েছি। যেখানে হাত দিয়েছি মৃত অথবা জীবিতদের উদ্ধার করতে পেরেছি। আমরা ২২ জনের মরদেহ ও একজনকে জীবিত উদ্ধার করেছি
তুরস্কের ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধারকারী দলের দলনেতা আরো বলেন, উদ্ধার অভিযানের কিছুক্ষণ পরই আফটারশক (মৃদু ভূমিকম্প) হয়েছে। সেখানে আমাদের প্রতিদিন এবং প্রতি রাতে কষ্ট পেতে হয়েছে। এমনকি আমরা যন্ত্রপাতি নিয়ে দু-তিন কিলোমিটার হেঁটেছি। প্রায় ৪০টি দেশ উদ্ধার অভিযানে অংশ নেয়। সমস্ত দেশ থেকে উদ্ধারকারীরা ফিরে গেলেও দেশটির সরকার কেবল বাংলাদেশি দলকে আরও পাঁচ দিন থাকার জন্য অনুরোধ করেছিল। তুরস্কে আমাদের যে অভিজ্ঞতা হয়েছে, তাতে আমরা ভবিষ্যতে যেকোনো দেশের পাশে দাঁড়াতে পারব।
উল্লেখ্য, ৮.৭ মাত্রার ভূমিকম্প পুরো লণ্ডভণ্ড করে দিয়েছে তুরুস্ককে। সিরিয়া এবং তুরুস্কর কাছাকাছি জায়গায় এই ভূমিকম্প হয়েছিল এবং এই ঘটনায় অসংখ মানুষ প্রাণ হারিয়েছে এবং সেই সাথে দেখা গেছে ভয়াবহ এই ঘটনায় একরকম অসহায় হয়ে পড়েছে মানুষ।