রাতের আড্ডায় অসুস্থ হয়ে এবার কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচর উপজেলায় পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্যে দুইজন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. একই ঘটনায় কুলিয়ারচর পৌরসভার প্যানেল মেয়র হাবিবুর রহমান ঢাকার একটি হাসপাতালে লাইফ সাপোর্টে রয়েছেন। বর্তমানে তাদের এই না ফেরার দেশে চলে যাওয়ার ঘটনা নিয়ে শোকাহত সকলেই।
সোমবার সকালে বাজিতপুরের জহুরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক গিয়াস উদ্দিন (৫৭), জহির রায়হান জজ মিয়া (৫৮) ও হোমিও চিকিৎসক গোবিন্দ বিশ্বাস (৪৫) মারা যান। এর আগে রোববার রাতে শাজাহান মিয়া (৫২) নামে আরেকজনের মৃত্যু হয়। শাজাহান মিয়া পেশায় অটোরিকশা চালক বলে জানা গেছে।
সোমবার দুপুরে কুলিয়ারচর উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনে চা বিক্রেতা লিটন (৪২) মারা যান। তিনিও জহুরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, তারা গোবিন্দ বিশ্বাসের চেম্বারের পেছনে আড্ডা দিত। আড্ডায় পান করতেন। গত শনিবার রাতেও আড্ডা বসল। পার্টি থেকে বাসায় ফিরে অসুস্থ বোধ করলে তারা পরিবারকে জানাননি। রোববার রাতে গিয়াস, জহির ও গোবিন্দ বিশ্বাস পরের দিন অসুস্থ হয়ে পড়লে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গিয়াস উদ্দিন ও গোবিন্দ বিশ্বাস মারা যান।
জহির রায়হান জজ মিয়ার বড় ভাই বলেন, কোন ধরনের রাজনীতি ছিল কিনা বুঝতে পারছি না। রবিবার দুপুর আড়াইটা থেকে ৩টা পর্যন্ত জহির ফোন করে শ্বাসকষ্টের কথা জানান। আমরা ছুটে যাই ভাগলপুর বাজিতপুরের জহুরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেওয়ার পথে জহির ভোরে মারা যান।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জজ মিয়ার আরেক আত্মীয় জানান, দীর্ঘদিন ধরে গিয়াস, জহির ও গোবিন্দ একসঙ্গে রাজনীতি করে আসছেন। তারা প্রায়ই পার্টি করতেন। গত শনিবারও তিনি পার্টিতে অংশ নেন। কিন্তু হঠাৎ কেন তারা অসুস্থ হয়ে পড়লেন তা তিনি বুঝতে পারছেন না।
এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জহুরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের একাধিক সূত্র জানায়, অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তির সময় মদ্যপানজনিত সমস্যা লেখা হয়। পরে বিষয়টি এড়িয়ে যান নি&হ&তের স্বজনরা।
এদিকে হাসপাতালের নথির একটি ছবি পাওয়া গেছে। যেখানে গিয়াস উদ্দিন ও জহির রায়হান জজ মিয়ার ম&দ সংক্রান্ত সমস্যার কথা বলা হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কুলিয়ারচর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ইয়াছির মিয়া বলেন, চিকিৎসাধীন অবস্থায় গিয়াস উদ্দিন গিয়াস, জহির রায়হান ও হোমিও চিকিৎসক গোবিন্দ বিশ্বাস মারা যান। এর আগে রোববার রাতে শাহজাহান মিয়া মারা যান। পৌর প্যানেল মেয়র হাবিবুর রহমান হাবিব লাইফ সাপোর্টে আছেন। ঢাকা মেডিকেল।এছাড়া আরো কয়েকজন অসুস্থ।তাদের মৃত্যুতে উপজেলা আওয়ামীলীগে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
বাজিতপুর জহুরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক মোহাম্মদ সেলিম জানতে চাইলে তিনি বিস্তারিত জানাতে রাজি হননি। ডাক্তার শুধু বললেন, ‘আমি এখন কিছু বলতে পারব না। ময়নাতদন্তের পর সব বলা যাবে।
এদিকে রাতের আড্ডায় অসুস্থ হয়ে পাঁচজনের না ফেরার দেশে চলে যাওয়ার ঘটনা নিয়ে কুলিয়ারচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফা তার প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন তবে নিষিদ্ধ দ্রব্য পানের কারণে মৃত্যু হয়েছে এমন তথ্য অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, তাদের মেডিকেল রিপোর্ট দেখে মৃত্যুর কারণ বলা যাবে।