শারুখ খান বলিউডের অন্যতম জনপ্রিয় একজন অভিনেতা নব্বইয়ের দশকে তার অনেক ব্যবসা সফল সিনেমা উপহার দিয়েছেন দর্শকদের। তবে কিছু সিনেমা ছিল যেগুলো দর্শক পছন্দ করেনি তার মধ্যে অন্যতম একটি হচ্ছে কাভি আলবিদা না কেহেনা।পরিচালক করণ জোহর শাহরুখ খানের সাথে পরপর দুটি ব্লকবাস্টার হিট ছবি দিয়েছেন। ‘কুছ কুছ হোতা হ্যায়’ এবং ‘কাভি খুশি কাভি গম।’ কিন্তু সেই সময়ে এই জুটির তৃতীয় ছবি ভারতীয় বক্স অফিসে ব্যর্থ হয়। করণ জোহরের ‘কাভি আলবিদা না কেহেনা’ ২০০৬ সালে মুক্তি পায়।
এই ছবিটি বিবাহিত শাহরুখ-রানির অদ্ভুত প্রেমের গল্প নিয়ে। আদিত্য চোপড়া তার বন্ধু করণকে প্রথম থেকেই এই সিনেমার কথা জানিয়েছিলেন। তিনি শুরুতেই ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন যে পরকীয়ার মতো বিষয়কে ভারতীয় দর্শক ভালোভাবে নেবে না। এতদিন পর করণ স্বীকার করতে বাধ্য হলেন যে আদিত্য চোপড়ার দূরদর্শিতা ভুল ছিল না!
সম্প্রতি, সাংবাদিক অনুপমা চোপড়ার পডকাস্ট শোতে, করণ জোহর ‘কাভি আলবিদা না কেহনা’-এর উদ্ভট দৃশ্য সম্পর্কে কথা বলার সময় বলেছিলেন, ‘এর পিছনে একটি বড় গল্প রয়েছে।’
শাহরুখ-রানি
‘কাভি আলবিদা না কেহেনা’-এর দৃশ্যে শাহরুখ-রানি
করণ বলেন, একটা সিকোয়েন্সের শুটিং করছিলাম। দারুণ জায়গায় কাজ চলছে। হঠাৎ আদির (আদিত্য চোপড়া) ফোন আসে। তিনি বললেন, শোন, আমি গত কয়েকদিন ধরে ভাবছি, আর এই চিন্তা মাথা থেকে যাচ্ছে না। আমি মনে করি শাহরুখ-রানির সেক্স করা উচিত নয়। কারণ ভারতীয় দর্শক সেটা মেনে নেয় না। তারা যেন একটা জায়গায় পৌঁছায়, তারপর নিজেদের ভুল বুঝে দূরে সরে যায়। কারণ তারা এই ঘনিষ্ঠতার জন্য আফসোস করে।
করণ বলেছিলেন যে ২০০৪ সালে তার বাবাকে হারানোর পরে, তিনি একটু ‘বিদ্রোহী’ হয়েছিলেন। কারণ যশ জোহর তাকে কখনই ‘কাভি আলবিদা না কেহনা’-এর মতো সিনেমা তৈরি করতে দেবেন না, যা ভারতীয় সংস্কৃতির সাথে খাপ খায় না। তাই বন্ধুর কথা না শুনে করণ মুখের ওপর বলে উঠলেন, ‘না, আমি সেই দৃশ্য দেখাব। কিভাবে কেউ একটি সম্পর্কে থাকতে পারে এবং সেক্স না করতে পারে? ফোনে আমাদের মধ্যে তুমুল ঝগড়া হয়। আমি একটু বিদ্রোহী হয়ে গেলাম। কিন্তু পরে যখন বসে বসে সিনেমা দেখলাম, বুঝলাম, আদি ঠিকই বলেছে। বাণিজ্যিক দৃষ্টিকোণ থেকে আদি ঠিকই ছিল। তাদের (শাহরুখ-রানির চরিত্র) শারীরিক সম্পর্কে না জড়ালে দর্শকরা তাদের প্রেমকে অনেক সহজে মেনে নিতেন।
শাহরুখ-রানি
কাভি আলবিদা না কেহনায় শাহরুখ খান এবং প্রীতি জিনতাকে বিবাহিত দম্পতি হিসাবে দেখানো হয়েছিল। অন্যদিকে রানী মুখার্জি স্বেচ্ছায় বিয়ে করেছেন তার ছোটবেলার বন্ধু অভিষেককে। তবে শাহরুখ স্ত্রী ও ছেলেকে ভুলে রানির সঙ্গে বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। দাম্পত্য সম্পর্কের টানাপোড়েনের মধ্য দিয়েই এ সিনেমার চিত্রনাট্য এগিয়েছে। বিদেশি বক্স অফিসে ভালো ব্যবসা করলেও ভারতীয় দর্শক ছবিটি গ্রহণ করতে পারেনি। যার কারণে ‘কাভি আলবিদা না কেহনা’ ফ্লপ হয়।
উল্লেখ্য, শারুখ খানের সাথে অনেক অভিনেত্রী কাজ করেছেন তবে কাজল রানী মুখার্জি প্রীতি জিনতা এদের বেশি দেখা গিয়েছে এবং তাদের সাথে করা সিনেমাগুলো অধিকাংশ সুপারহিট হয়েছে। তবে কিছু সিনেমা আবার দর্শকপ্রিয়তা পায়নি।