সারাদেশে বর্তমানে প্রিলিমিনারি বৃত্তি পরীক্ষায় ঘোষিত ফলাফল নিয়ে দেশজুড়ে চলছে নানা বিতর্ক।অনেকের মনে উঠেছে নানা প্রশ্ন। শিক্ষার্থীদের মাঝেও এই নিয়ে নানা হতাশা দেখা দিয়েছে। প্রথম ঘোষিত ফলাফলে অনেকেই বৃত্তি পেলেও সংশোধিত ফলাফল প্রকাশের পর দেখা গেছে তারা বৃত্তি পাননি। এতে শিক্ষার্থীদের হতাশা তৈরি হয়। এমনই একজন মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলা সদরের আঙ্গারপাড়া এলাকার বাসিন্দা রুহিদাস মালো। তিনি উপজেলা সদরের সিংগাইর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন।
বৃহস্পতিবার (২ মার্চ) বিকেলে গণমাধ্যমের কাছে দুঃখ প্রকাশ করেন পুণ্যলতা মালোর বাবা রহিদাস। তিনি বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের নরসিংদী শাখায় আঞ্চলিক নিরীক্ষক হিসেবে কর্মরত আছেন। প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষার সংশোধিত ফলাফলে ক্ষুব্ধ এই অভিভাবক বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টার দিকে মানিকগঞ্জ প্রেসক্লাবে আসেন। এ সময় তিনি সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র সঙ্গে নিয়ে আসেন।
কাগজপত্র অনুসারে, পুণ্যলতা মালো পঞ্চম বার্ষিক পরীক্ষায় ছয়টি বিষয়ে গড়ে ৯৮% নম্বর পেয়েছিলেন। প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় ঘোষিত প্রথম ফলাফলে তিনি মেধা তালিকায় সিংগাইর উপজেলায় প্রথম স্থান অধিকার করেন। তবে সংশোধিত ফলাফলে মেধা ও সাধারণ গ্রেড তালিকায় কোনো রোল নম্বর নেই। এর অর্থ মেধা বৃত্তি পরীক্ষায় ব্যর্থ হয়েছে।
শুধু উপজেলার পুণ্যলতা নয়, সংশোধিত ফলাফলে প্রথম প্রকাশিত মেধা তালিকায় বৃত্তি পাওয়া ৫৪ পরীক্ষার্থীর মধ্যে ২৩ জনের সংশোধিত তালিকায় রোল নম্বর ছিল না। প্রথম ঘোষিত ফলাফলে বৃত্তি পাওয়া শিক্ষার্থীরা সংশোধিত তালিকা নিয়ে তাদের পরিবারের সদস্যদের মধ্যে চরম ক্ষোভ ও হতাশা দেখা দিয়েছে।
রুহিদাস বলেন, আমার মেয়ে এবারের বৃত্তি পরীক্ষায় উপজেলায় ট্যালেন্টপুলে (মেধা তালিকা) বৃত্তি পেয়েছে। কিন্তু সংশোধিত ফলাফলে সাধারণ গ্রেডেও তার নাম নেই। আমার মেয়ে শুধু কাঁদছে। এতে ওই তরুণী গুরুতর আহত হয়। এখন সে পড়াশোনা করতে চায় না। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের এহেন মূর্খতা মেনে নেওয়া যায় না।
পুণ্যলতা মালোর বাবা ক্ষোভের সঙ্গে সাংবাদিকদের বলেন, বৃত্তি পরীক্ষার ফল পাওয়ার পর দেখা যায়, আমার মেয়ে উপজেলায় ট্যালেন্টপুলে প্রথম স্থান অধিকার করেছে। আমি আনন্দের সাথে আমার প্রতিবেশী এবং আত্মীয়দের মিষ্টি খাওয়াই। পরে সংশোধিত ফলাফলে দেখা যায়, আমার মেয়ে সাধারণ কোটায়ও বৃত্তি পায়নি। তারপর থেকে আমার মেয়ে কিছুই খাচ্ছে না, শুধু কাঁদছে। সে আমাদের বলে যে সে আর পড়াশোনা করবে না বা স্কুলে যাবে না।
রুহিদাস মালো অভিযোগ করে বলেন, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর শিশুদের পরীক্ষার ফল প্রকাশে এমন উদাসীনতা দেখিয়েছে। আমি আমার মেয়ের ফলাফলের বিষয়ে আইনি আশ্রয় নেওয়ার কথা ভাবছি।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি বৃত্তি পরীক্ষায় ঘোষিত ফলাফল নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক,এদিকে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের এ রকম দায়িত্বহীন কর্মকাণ্ডে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষক ও অভিভাবকেরা। ফলাফল ঘোষণার মাত্র ছয় ঘণ্টার মধ্যে তা স্থগিত করায় অনেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন