দীর্ঘ দুই যুগের বেশি সময় ধরে চলমান পত্রিকা দৈনিক দিনকাল বন্ধ করে দিয়েছে সরকার। তবে এই দৈনিক পত্রিকার প্রকাশনা বাতিলের যে আদেশ দিয়েছিলেন আদালত তার প্রেক্ষিতে দিনকালের করা আপিল খারিজ করে দেওয়া হয়েছে যার ফলে বন্ধ হচ্ছে পত্রিকাটি। এই প্রসঙ্গে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন সাংবাদিক আরিফুজ্জামান তুহিন। নিচে সেটি তুলে ধরা হল –
আদানির চুক্তি ও দৈনিক দিনকালের প্রকাশনা বন্ধ
১.
বাংলাদেশের সঙ্গে আদানির চুক্তিটি শুধু খারাপ না, একইসঙ্গে বেশ অশ্লিলও বটে। ১৬৭ পৃষ্টার পরতে পরতে আদানি বাংলাদেশ থেকে সুবিধা নিয়েছে। আদানি আমার চোখে অন্তত ৮টি গুরুত্বপূর্ণ সুবিধা পেয়েছে যা বাংলাদেশের কোনো বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রকে সরকার দেয়নি বা দুনিয়াজুড়ে এরকম সুবিধা দেয়া হয় না।
আদানির চুক্তি পড়ে আমার বোঝবুদ্ধি হলো, আদানি বাংলাদেশের সাথে চুক্তি করেছে বিদ্যুৎ দিতে না। বরং বিদ্যুৎ না দিয়ে কিভাবে বিলিয়ন ডলার কামানো যায় সেই ফিকির তারা চুক্তিতে রেখেছে। এটা খুবই দুঃখজনক। চুক্তির অনেক জায়গাতে আদানি যে আগামিতে বাটপারি করবে সেই রাস্তাটিও রেখেছে।
আদানির চুক্তি নিয়ে দেশে বড় ধরনের আলোচনা হওয়া দরকার। এই চুক্তি বাতিলের দাবি জানানো দরকার। সরকারি দল ও বিরোধী দলের মধ্যে এই নিয়ে বড় আলোচনা দেখলাম না। মিডিয়ার কথা কি বলবো? আদানি বাংলাদেশের মিডিয়ার মুখ বন্ধ করার জন্য রিতিমত পিআর প্রতিষ্ঠান নিয়োগ দিয়েছে।
২.
গত ১৯ ফেব্রুয়ারি বিরোধী দলের একমাত্র ত্রিকা দৈনিক দিনকালের প্রকাশনা বন্ধ করে দিয়েছে প্রেস কাউন্সিল। পত্রিকাটি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মালিকানাধীন ছিল।
গত ২৬ ডিসেম্বর ঢাকার জেলা ম্যাজিস্ট্রেট দৈনিক দিনকাল পত্রিকার প্রকাশনা বাতিলের যে আদেশ দিয়েছিলেন রোববার বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিল ওই আদেশ রেখে দৈনিক দিনকালের আপিল খারিজ করে দেয়ার পর ১৯ ফেব্রুয়ারি থেকে পত্রিকাটির ছাপা বন্ধ হয়ে যায়।
উপরের দুটো ঘটনাই খুব খারাপ সময়ের স্বাক্ষ্য বহন করছে। এ দুটি ঘটনা নিয়ে যতখানি আলোচনা, সমালোচনা ও প্রতিবাদ উঠার কথা ছিল তা হয়নি।
একটি খারাপ চুক্তি হয়েছে সেই চুক্তি বাতিলের দাবি জোরেসোরে দেখা যাচ্ছে না। মিডিয়া বিষয়টি হজম করছে। আবার একটি রাজনৈতিক দলের মুখপত্র, বিএনপির একটি পত্রিকার প্রকাশনা বাতিল হলো সেটা নিয়েও মিডিয়ার কথা নেই। দেশেতো জামাতের পত্রিকা সংগ্রামও আছে।
মিডিয়া যেমন কথা বলছে না এ দুটি বিষয়ে তেমনি রাজনৈতিক দলগুলোও এটা নিয়ে কথা বলছে না। বিএনপির মহাসচিবের বক্তব্য পড়লাম, কিন্তু বামপন্থিদের বড়রকম সমালোচনা দেখলাম না।
বিষয়টি দুঃখজনক। বেশ দুঃখজনক।