দেশের দলের সংকট এবং রিজার্ভ নিয়ে বেশ অসস্থিতে সরকার। মূলত দেশের রিজার্ভ কমে গিয়েছে যার ফলে নানা প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হচ্ছে সরকারকে। অবশ্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানিয়েছেন দেশের রিজার্ভ দিয়ে উন্নয়ন করা হয়েছে এবং জনস্বার্থেই তা খরচ করে হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা বিএনপি নেতাদের প্রতি ইঙ্গিত করে বলেছেন, ‘এইট পাস আর ম্যাট্রিক ফেল দিয়ে দেশ চালালে , সে দেশের উন্নতি হবে না।’
শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আওয়ামী যুবলীগের মহা সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা ক্ষমতায় আসার আগে বিএনপি সরকারে ছিল। বিএনপির সময় রিজার্ভ ছিল ২ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলার। আমরা ৪৮ বিলিয়ন পর্যন্ত নিয়েছি। কোভিড ভ্যাকসিন কিনেছেন, বিনিয়োগ করেছেন, প্লেন কিনেছেন, স্ব-অর্থায়নে পায়রা বন্দর। এভাবে রিজার্ভ থেকে ব্যয় করা হয়েছে। ঘরের টাকা ঘরেই থাকে। এ টাকা দেশের মানুষের উন্নয়নে ব্যবহার করছি। আমাদের অগ্রগতি কেউ আটকাতে পারবে না।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, যাদের নেতারা বিভিন্ন মামলার আসামি তাদের মুখে আওয়ামী লীগের সমালোচনা মানায় না। অনেকেই আমাদের অনেক সমালোচনা করছেন। তারা উন্নয়ন দেখে না। কে বানিয়েছে এই মোবাইল ফোন, ইন্টারনেট?
তরুণদের বিনিয়োগের ক্ষেত্রে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের অন্যের ওপর নির্ভরশীল না হয়ে আত্মনির্ভরশীল হতে হবে। তাই বলছি, এক ইঞ্চি জমিও যেন অনাবাদি না থাকে।’
করোনার সময়ে গৃহহীনদের আবাসন সংক্রান্ত সরকারি প্রকল্পে কৃষকের ধান কেটে বিভিন্ন সময়ে দরিদ্র মানুষের পাশে দাড়ানোয় যুবলীগের প্রতিটি নেতাকর্মীকে ধন্যবাদ জানান তিনি। তিনি তাদের উদ্দেশে বলেন, তাদের দেশ সেবা করতে হবে, জনগণের সেবা করতে হবে। ইউক্রেন যুদ্ধ, নিষেধাজ্ঞার কারণে প্রতিটি পণ্যের দাম বেড়েছে। আমি প্রত্যেক নেতাকর্মীকে বলব নিজ গ্রামে গিয়ে নিজ নিজ জমি চাষ করতে। অন্যের জমিতে যেন উৎপাদন হয় তা নিশ্চিত করতে হবে। যেকোনো ফসল, সবজি, গাছপালা লাগাতে হবে। সন্ত্রাস বন্ধ করতে হবে।
সবসময় মানুষের পাশে থাকতে নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান আওয়ামী লীগ নেত্রী।
তরুণ সমাজের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘তরুণ সমাজের দায়িত্ব দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ গড়তে ও দেশকে এগিয়ে নিতে যুবলীগ প্রতিষ্ঠিত হয়।’
আওয়ামী যুবলীগের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে আয়োজিত এই মহাসমাবেশের উদ্বোধন করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সম্মেলনের প্রধান অতিথিও ছিলেন তিনি।
শুক্রবার দুপুর আড়াইটার দিকে জনসভাস্থলে আসেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর তিনি বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে এবং জাতীয় সংগীতের সাথে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে র্যালির উদ্বোধন করেন।
এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ ও সাধারণ সম্পাদক মোঃ মইনুল হোসেন খান নিখিল। এরপর মঞ্চে আসন গ্রহণ করেন শেখ হাসিনা।
আজ সকাল থেকেই ছোট ছোট দলে মিছিল নিয়ে সমাবেশস্থলে আসতে থাকে নেতাকর্মীরা।
আওয়ামী যুবলীগের মহাসমাবেশে যোগ দিতে ঢাকার বাইরে থেকেও অনেক নেতা-কর্মী ঢাকায় আসেন। সমাবেশে যোগ দিতে গভীর রাত থেকেই বাস, মাইক্রোবাস ও পিকআপে করে ঢাকায় আসতে শুরু করেন নেতাকর্মীরা।
সমাবেশকে ঘিরে বাগানটি বর্ণিল সাজে সাজানো হয়েছে। তৈরি করা হয়েছে বিশাল প্যান্ডেল। এছাড়া ঢাকা মহানগরীর প্রধান সড়কগুলো জাতীয় পতাকার পাশাপাশি যুবলীগের পতাকায় সজ্জিত করা হয়েছে।
নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। এছাড়া পার্কের বিভিন্ন গেট ও ভেতরে গোয়েন্দা সংস্থা, আনসার, পুলিশ ও সামরিক বাহিনীর সদস্যরা টহল দেন।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশের রপ্তানি আয় কমে গিয়েছে এবং কমেছে বিদেশ থেকে প্রবাসীদের রেমিট্যান্স পাঠানোর প্রবণতা যার ফলে দেশে ডলার সংকট দেখা দিয়েছে এবং এর ফলে কমে গেছে রিজার্ভ।