সম্প্রতি বাসা থেকে ডিবি পরিচয়ে তুলে নেওয়া সেই সাকিরের ব্যাপারে উঠে এসেছে নানা তথ্য, জানা গেছে জঙ্গি সংশ্লিষ্টতায় জড়িত থাকার অভিযোগে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এরই মধ্যে গ্রেপ্তার হওয়া চিকিৎসক শাকির বিন ওয়ালী ও তার সহযোগী আবরারুল হক ভিলাকে রাজধানীর রামপুরা থানায় পুলিশ বাদী হয়ে দায়ের করা সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় পাঁচ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। বুধবার ঢাকা মহানগর হাকিম আহমেদ হুমায়ুন কবিরের আদালত এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এর আগে বুধবার রামপুরা থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে তাদের বিরুদ্ধে কাউন্টার টেররিজম ইনভেস্টিগেশন বিভাগের পুলিশ পরিদর্শক এস এম মিজানুর রহমান মামলা করেন।
এ তথ্য নিশ্চিত করে সিটিটিসি প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মো. আসাদুজ্জামান বলেন, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে রাজধানীর মগবাজার এলাকা থেকে প্রথমে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের সদস্য আবরারকে (১৮) গ্রেপ্তার করা হয়।
তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে চিকিৎসক শাকির বিন ওয়ালীকে রাজধানীর রামপুরা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
চিকিৎসক শাকির ও আবরারের মাধ্যমে এর আগে কুমিল্লার নিখোঁজ সাত কলেজছাত্রকে তাওহিদ ও জিহাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছিল জানিয়ে সিটিটিসি প্রধান আসাদুজ্জামান আরো বলেন, কুমিল্লা থেকে নিখোঁজ হওয়াদের জিহাদ, তাওহিদ ও ঈমান সম্পর্কে দীক্ষা দেন শাকির ও আবরার। তবে শুধু এরা দুজনই নন, বর্তমানে তরুণদের জঙ্গিবাদে দীক্ষা দিতে তাদের বাইরেও আরো অনেকে থাকতে পারে। ওই তরুণদের খোঁজ পেতে বিভিন্ন সংস্থা কাজ করছে।
সিটিটিসি সূত্র জানিয়েছে, কুমিল্লা থেকে নিখোঁজ সাত তরুণের মধ্যে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের এইচএসসি পরীক্ষার্থী ইমরান বিন রহমান ওরফে শিথিল (১৭), কুমিল্লা সরকারি কলেজের এইচএসসি পরীক্ষার্থী হাসিবুল ইসলাম (১৮) ও নিহাল আবদুল্লাহকে (১৭) জঙ্গিবাদে উদ্বুদ্ধ করতে তাদের সঙ্গে একাধিক বৈঠক করেন শাকির।
ঘর ছাড়ার পর ওই তরুণরা চাঁদপুর, বরিশালসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় যায় জানিয়ে সিটিটিটিসির তদন্তসংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা বলেন, চিকিৎসক শাকির ও তার সহযোগীদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে ওই তরুণরা ঘর ছাড়ে।
রামপুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম বলেন, সিটিটিসির পরিদর্শক কাজী মিজানুর রহমান বাদী হয়ে গত মঙ্গলবার ওই চিকিৎসক ও তার সহযোগীকে আসামি করে মামলাটি দায়ের করেছেন। কুমিল্লার নিখোঁজ সাত শিক্ষার্থীর সঙ্গে চিকিৎসক শাকিরের যোগাযোগের তথ্য পাওয়া গেছে বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।
এজাহারে বলা হয়েছে, শাকিরের প্ররোচনায় উদ্বুদ্ধ হয়েই ওই সাতজন আনসার আল ইসলামে যোগ দেয়।
তবে শাকিরের বাবা ডা. এ কে এম ওয়ালীউল্লাহ ছেলের বিরুদ্ধে জঙ্গি সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ অস্বীকার করে কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমার ছেলে কখনো জঙ্গিবাদের সঙ্গে জড়িত ছিল না। সে একজন ভালো চিকিৎসক। সদ্য এমবিবিএস পাস করেছে ছেলে। লেখাপড়ার বাইরে খারাপ কোনো কিছুতে জড়ায়নি। কেউ হয়তো ষড়যন্ত্র করে ছেলেকে জঙ্গিবাদে জড়িয়ে তথ্য দিয়েছে, এ কারণে পুলিশ ছেলেকে গ্রেপ্তার করেছে। ’
উল্লেখ্য, এর আগে নিজ বাড়ি থেকে উঠিয়ে নেওয়া সেই শাকির বিন ওয়ালীকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর চেষ্টা করা হচ্ছে বলে দাবি করে তার বাবা এ কে এম ওয়ালীউল্লাহ বুধবার বিকেলে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন করেন।এর পর সামাজিক জোগাজোগ মাধ্যমে শুরু হয় নানা আলোচনা