সেকেন্ডারি স্কুল সার্টিফিকেট পরীক্ষা এসএসসি পরীক্ষা শিক্ষার্থীদের জন্য অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি অধ্যায়। এর পরের অধ্যায় হল ইন্টারমিডিয়েট। এই দুই পরীক্ষার ফল প্রতিটি শিক্ষার্থীদের জন্য সর্ব ক্ষেত্রে বিদ্যমান। এই প্রসঙ্গে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন প্রবাসী লেখিকা জান্নাতুন নাঈম প্রীতি। নিচে সেটি তুলে ধরা হল-
শোনেন- এসএসসিতে জিপিএ ফাইভ পেয়ে খুব অহংকার হইছিলো আমার। পরে ইন্টারে পাইছিলাম তিন দশমিক আট! কিন্তু বিশ্বাস করেন- এই তিন দশমিক আট যতটা হেল্প করছে আমাকে, সেটা জিপিএ ফাইভ করে নাই! এসএসসির রেজাল্টের সফল ভরাডুবি শেষে ইন্টারের রেজাল্টের পরে নিজের বড়ভাই বলছিল- তোমার জন্য মুখ দেখাব কেমন করে?
আজকাল উনি আমার জন্য শুধু মুখ দেখান না, বরং উনাকে অনেক লোক চেনে আমার ভাই হিসেবে।
তিন দশমিক আট শুন্য মার্কা পচা রেজাল্ট নিয়ে আমি যেখানে পরীক্ষা দিছি সেখানেই চান্স পাইছি, এই রেজাল্ট এমন শিক্ষা দিছে যে বিশ্ববিদ্যালয় জীবন শেষ করছি ফোর আউট অব ফোর পেয়ে। এখন কাজ করি প্যারিসে দুনিয়ার সবচেয়ে বড়ো আর্টিস্ট রেসিডেন্সিতে প্রায় ১২০+ দেশের আর্টিস্টদের সাথে।
এসএসসিতে যারা ভালো রেজাল্ট করছেন তাদের অভিনন্দন, যারা পচা রেজাল্ট করছেন তাদের ডাবল অভিনন্দন। আপনাদের রেজাল্ট খারাপ হইছে দেখে একদল আপনার জন্য আমার ভাইয়ের মতোই মুখ দেখাতে পারবেনা। এরপর যখন সফল হবেন তখন ওই ব্যর্থতাই আপনার সফলতা হিসেবে লেখা হবে! এদের মুখও গর্বে উজ্জ্বল হবে।
শুধু শেখাটা থামায়েন না। প্রতিদিন বই পড়া, নতুন ভাষা শেখা এবং নতুন দেশ দেখার আগ্রহ বজায়ে রাখেন। আপনি সারাজীবন পড়লেও পৃথিবীর সমগ্র জ্ঞানের এক পারসেন্ট নিয়েও কবরে যেতে পারবেন না।
মনে রাইখেন- আপনার সার্টিফিকেটে যা লেখা হবে সেটা আপনি না, আপনি সেটাই যেটা সার্টিফিকেটের কোথাও লেখা নাই!
ফ্রেঞ্চ ভাষায় প্রথমবার বাজার করে যে আনন্দ পেয়েছি সেই আনন্দ এসএসসি বা এইচএসসির রেজাল্টে পাই নাই।
আল্পস পর্বতের তুষারের ওপর রোদ পড়লে, মাটি থেকে কয়েক হাজার ফুট ওপরে ব্ল্যাক ফরেস্টের ওপর টলটলে দিঘির জলে যে সৌন্দর্য দেখার আনন্দ, নরওয়েজিয়ান বৃক্ষের পর্বত ভরা যে সৌন্দর্য সেই সৌন্দর্য দেখার স্বর্গীয় আনন্দগুলোই আমাদের সাফল্য!
এইসব সাফল্যের দেখা না পেয়েই হতাশ কেন হবেন?