দীর্ঘদিন প্রেমের পর ভালোবাসার মানুষের সঙ্গে ঘর বাধাঁর আসায় এক আত্মীয়ের বাড়িতে বধূবেশে প্রিয় মানুষটির অপেক্ষায় ছিলেন মাহমুদা আনজুমান মিলি (২২)। কিছুক্ষণ পর সবাইকে আসতে দেখে আনন্দে আত্মহারা হয়ে পড়েন মিলি। কিন্তু হঠাৎ করেই ঘটে গেল এক অপ্রত্যাশিত ঘটনা। মুহুর্তেই কান্নায় ভেঙে পড়েন মিলি।
বর পক্ষ চলে যাওয়ায় প্রফুল্ল মিলি (কনে) বাগদানের আনন্দঘন পরিবেশে বিচলিত হয়ে পড়ে। সে জানতে পারে তার বাবা-মা খাবারের অজুহাতে বরকে বিয়ের স্থান থেকে নিয়ে যাচ্ছে।
এরপর থেকে বিহ্বল মিলি তার প্রেম সাজ্জাদকে ফিরে পাওয়ার আশায় কাবিননামা ও সব কাগজপত্র নিয়ে উভয়পক্ষের স্বজনসহ সমাজের গণ্যমান্য ব্যক্তিদের কাছে যান। সেদিনের পর থেকে সে বহুবার শ্বশুরবাড়ির সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। কিন্তু সাজ্জাদ হোসেন তার প্রতি শুধু উদাসীনতা ও অবহেলা দেখিয়েছেন। শ্বশুরবাড়ির লোকজন প্রতিনিয়ত তাকে অপমান ও অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। সাজ্জাদ হোসেন কক্সবাজারের বৃহত্তর পাহাড়তলী সমিতির সভাপতি ও দক্ষিণ পাহাড়তলী এলাকার বাসিন্দা মোঃ ইউসুফ সওদাগরের ছেলে।
মিলি দাবি করেছেন যে বাগদান অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বিয়ে ভেঙে দেওয়ার জন্য তিনি সামাজিকভাবে কলঙ্কিত হয়েছেন। অনুষ্ঠানের আগে সাজ্জাদ তাকে গোপনে ছেড়ে চলে গেলেও স্বাভাবিক জীবনযাপনে তাকে কোনো সমস্যায় পড়তে হতো না। কিন্তু দুই পরিবারের মাধ্যমে বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হওয়ায় তিনি এখন নানা বাধার সম্মুখীন হচ্ছেন। এলাকার মর্যাদা ক্ষুন্ন করায় তার পরিবার তাকে বাড়িতে থাকতে দিচ্ছে না বলেও অভিযোগ করেন তিনি। মিলি বলেন, আ’ত্ম’হন”ন’ করা ছাড়া তার আর কোনো উপায় নেই।
বেপরোয়া হয়ে মিলি কক্সবাজার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করেন। যার নম্বর ৭৭৮/২২। এখন তাদের হুমকির মুখে পড়েছেন তিনি।
মিলি কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, অনুষ্ঠানের খাবার হিসেবে তারা আমাদের কাছে কবুতর, হাঁস, গরু, দেশি মুরগি, ইলিশ, গলদা চিংড়ি, খাসিসহ ১৪ ধরনের বাহারি খাবার চেয়েছেন। আমাদের আর্থিক সচ্ছলতা তেমন না থাকলেও তাদের চাহিদা অনুযায়ী সাজানো হয়েছিল। কিন্তু তারা দারিদ্র্যের অজুহাত দেখিয়ে আমাদের সাথে প্রতারণা করেছে।
মিলি আরও জানান, সাজ্জাদের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক থাকার পর ১৯৯৯ সালে দুজনে বিয়ে করেন এবং আইনি সম্পর্ক গড়ে তোলেন। এত বছর আমি তাকে যতটা সম্ভব সমর্থন করেছি। তার জন্য জীবনে অনেক ত্যাগ স্বীকার করেছি। তার কোনো সমস্যা হলে ছাত্র হয়েও বাবার জমানো টাকা তার হাতে তুলে দিয়েছি। আমাদের সম্পর্ক মেনে নিতে সমস্যা হলে অনুষ্ঠানের আগে কেন তারা জানাননি। এখন কেন আমরা আমাদের সকল সম্মান নষ্ট করে সম্পর্ক ছিন্ন করার কথা বলছে। আমি এটা বুঝতে পারছি না. আমি এখন পরিবারের সদস্যদের কাছেও অবহেলিত। মিলি ও তার পরিবারে যারা এ ধরনের অশান্তি সৃষ্টি করেছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে তিনি প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।
এদিকে এ অভিযোগের আলোকে সাজ্জাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি প্রথমেই মিলিকে নিজের স্ত্রী বলে অস্বীকার করেন। একই সঙ্গে তিনি সংবাদ মাধ্যমকে দাবি করেন, ঘটনার দিন বাবা-মাকে যথাযথ সম্মান না করার কারনে তিনি এ বিয়েতে অমত জানান।