বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ বিপিএল এ এবারের চমক হিসেবে এসেছে কিছু খেলোয়াড় তার মধ্যে খুলনার হয়ে খেলা নাহিদ রানাকে নিয়ে শুরু হয়েছে আলোচনা দুর্দান্ত বোলিং করে নজরে এসেছেন এই ক্রিকেটার, মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ না হলে ক্রিকেট বল পাবেন না। পরিবারটি এমন শর্ত অন্তর্ভুক্ত করেছিল। অমান্য করার উপায় নেই।তাই পরিবারের কঠোর নির্দেশে তাকে মাধ্যমিকের পর নিজ শহর থেকে দূরে একটি ক্রিকেট একাডেমিতে ভর্তি করানো হয়। নিচের গল্পটি শুধুমাত্র কঠোর পরিশ্রম ও পরিশ্রমের। পুরস্কার হিসেবে বাংলাদেশ পেয়েছে সর্বোচ্চ ঘরোয়া ক্রিকেট টুর্নামেন্ট বিপিএলের মঞ্চে নিজেকে মেলে ধরতে।
বলছি বাংলাদেশ ক্রিকেটের নতুন আবিষ্কার নাহিদ রানার কথা। বিপিএলে খুলনা টাইগার্সের হয়ে নেটে ঘাম ঝরানো এই বোলার এবার দলের মূল একাদশে সুযোগ পেয়ে নিজেকে প্রমাণ করেছেন।
গতকাল মিরপুরে দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে ঢাকার বিপক্ষে ২৪টি আইনি ডেলিভারির মধ্যে ১৪০ কিমি/ঘন্টা বেগে ১৭ বল মেরেছেন ২০ বছর বয়সী এই তরুণ পেসার। যা ইতিমধ্যে ক্রিকেট বিশ্লেষকদের নজরে এসেছে।
বিপিএল দিয়ে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে আসা নাহিদ রানা গতকালের অভিষেক ম্যাচে প্রথম বলটিই নো বল করেন। তবে এরপর থেকেই গতির ঝড় তুলেছেন দীর্ঘদেহী এই পেসার।
ঢাকার বিপক্ষে ম্যাচে, তিনি সর্বোচ্চ ১৪৮ কিমি/ঘন্টা গতিতে বল করেছিলেন। এত কম বয়সে উইকেটে ঝড় তোলা নাহিদ রানার আরও শক্ত বোলিং করার ক্ষমতা আছে। তবে এর জন্য প্রয়োজন সঠিক নির্দেশনা ও সুযোগ-সুবিধা। তবেই টাইগার ক্রিকেটের এই নতুন ভবিষ্যৎ ১৫০ কিলোমিটার বেগে বোলিং করতে দেখা যাবে।
তবে বাংলাদেশের ক্রিকেটে নাহিদ রানার উত্থানের গল্পটা বেশ রোমাঞ্চকর। চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার এই যুবক ২০২২ সাল পর্যন্ত একদিনের জন্যও ক্রিকেট বল তোলেননি। একই বছর নাহিদ মাধ্যমিক পাস করে রাজশাহী শহরের একটি ক্রিকেট একাডেমিতে ভর্তি হন। এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে। একদিন নেটে একাডেমির বোলারদের বোলিং করার সময় তার সামনে একটি অনুশীলন ম্যাচ খেলার সুযোগ আসে। সেখান থেকেই প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে তার যাত্রা শুরু।
গত এনসিএল মৌসুমে বরিশাল, ঢাকা মেট্রো ও খুলনা বিভাগের বিপক্ষে টানা তিন ম্যাচে পাঁচ উইকেট নিয়েছিলেন নাহিদ রানা। যেখানে ঢাকা মেট্রোর বিপক্ষে তিনি নিয়েছেন নয় উইকেট। তাছাড়া, ২০২২ সালের অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে বাংলাদেশ দলের স্ট্যান্ডবাই বোলার ছিলেন তিনি।
রাবার বল এবং টেনিস বল দিয়ে ক্রিকেট খেলা নাহিদ ছোটবেলা থেকেই বড় ক্রিকেটার হওয়ার স্বপ্ন দেখতেন। সেই স্বপ্ন পূরণে দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়েছেন ২০ বছর বয়সী এই যুবক।
বিপিএল এ দারুন খেলছেন নাহিদ রানা। তার বলের গতি দেখে মুগ্ধ নেটিজেনরা। খুলনা টাইগার্সের হয়ে গতির ঝড় তোলা এই বোলার এখন জাতীয় দলের জার্সি পরার অপেক্ষায়। শুধু প্রয়োজন ক্রিকেটের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের জন্য পর্যাপ্ত যত্ন। তাহলেই একদিন বাংলাদেশের মাটিতে শোয়েব আখতার বা মিশেল স্টার্কের মতো গতির দানব দেখা যাবে।