এবার সংসদে দুর্নীতিবাজ আমলা এবং উচ্চপধস্ত অসাধু কর্মকর্তাদের নিয়ে কথা বলেছেন গণফোরামের সংসদ সদস্য মোকাব্বির খান। প্রধানমন্ত্রীর সমালোচনার জবাবে বলেন, আমি রাজনীতির জন্য বিলাসবহুল জীবন বিসর্জন দিয়ে জনগণের জন্য নিজেকে উৎসর্গ করেছি। কিন্তু রাজনীতি আজ ডাকাতদের হাতে। সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীদের হাতে দেশের অর্থনীতি জিম্মি। সুযোগ নিচ্ছে প্রধানমন্ত্রীর চারপাশের চাটুকাররা।
রোববার স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর জন্য নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে প্রধানমন্ত্রী আমার সম্পর্কে কিছু বলেছেন।
তিনি বলেন, আমি বিরোধী দল হওয়ার চেষ্টা করছি। প্রধানমন্ত্রী আমার সেকেন্ড হোমের কথা বলেছেন, আমার বিলাসবহুল জীবনের কথা বলেছেন। তবে সঠিক তথ্যের কথা বলেননি তিনি। তাই আমি আমার অবস্থান স্পষ্ট করতে চাই।
তিনি আরও বলেন, অনেক সংসদ সদস্য, সংসদ সদস্য, আমলা ও ব্যবসায়ী বাংলাদেশের অর্থ লুট করে যুক্তরাজ্য, যুক্তরাজ্য, কানাডাসহ বিভিন্ন দেশে বেগম পাড়া, সেকেন্ড হোম, থার্ড হোম গড়ে তুলেছেন। কয়েকদিন আগে যুক্তরাষ্ট্রে এক আমলাদের বাড়ির ছবি আসে গণমাধ্যমে। এমন খবর প্রতিনিয়ত মিডিয়ায় আসছে। এই সেকেন্ডের কথা বললে প্রধানমন্ত্রী বিব্রত হবেন।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী সংসদে বলেছেন, যুক্তরাজ্যে আমার দ্বিতীয় বাড়ি আছে, এটা গোপন কথা নয়। আর আমার লজ্জা পাওয়ার কিছু নেই। আওয়ামী লীগের অনেক সিনিয়র নেতা আমার দ্বিতীয় বাড়িতে গিয়ে আমার আতিথেয়তা গ্রহণ করেছেন। যাদের কেউ কেউ এই সংসদেও আছেন। কিন্তু আমি লুটপাটের টাকায় বা বাংলাদেশ থেকে পৈতৃক সম্পত্তি বিক্রি করে সেকেন্ড হোম তৈরি করিনি। প্রায় চল্লিশ বছর আগে সেখানে একটি সফল ব্যবসা চালানোর পর আমি বাড়ির মালিক হয়েছিলাম। বর্তমানে ওই বাড়িতে আমার পরিবার বসবাস করছে।
মোকাব্বির খান বলেন, প্রধানমন্ত্রী আমার বিলাসবহুল জীবন ও বিলাসবহুল গাড়ির কথা বলেছেন। হয়তো কথাগুলো না জেনে বা অতীত জ্ঞান থেকে বলা হয়েছে। ইংল্যান্ডে একজন সফল ব্যবসায়ী হিসেবে বিলাসবহুল জীবনযাপন করেন। আমি বিভিন্ন ব্র্যান্ডের বিলাসবহুল গাড়িও ব্যবহার করেছি। এটা সত্য, আমি কখনই সত্যকে অস্বীকার করি না। তিনি বলেন, এই সংসদে অনেকেই সংসদ সদস্য হওয়ার সুবাদে শত শত এমনকি হাজার হাজার কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। একাধিক গাড়ি, বাড়ি এবং ভবনের মালিক। কিন্তু যেদিন থেকে আমি পূর্ণাঙ্গ রাজনীতি শুরু করি, সেদিন থেকে আমার জীবন বদলে যায়। জীবনের সব বিলাসিতা বিসর্জন দিয়ে জনগণের জন্য নিজেকে উৎসর্গ করেছি। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও জাতির পিতার দর্শন নিয়ে একজন পরিচ্ছন্ন রাজনীতিবিদ হওয়ার চেষ্টা করছি।
তিনি বলেন, আমি অবাক হলেও সত্য হলো ঢাকা, সিলেট বা অন্য কোথাও আমার নামে কোনো সম্পত্তি নেই। আমি কখনো সরকারি প্লট বা ফ্ল্যাটের জন্য আবেদনও করিনি। একজন সাংসদ হওয়ার সুবাদে, আমাকে ন্যাম ভবনে একটি ফ্ল্যাট বরাদ্দ করা হয়েছে এবং সেখানে বসবাস করছি। সিলেটে পৈতৃক বাড়িটি নিজের নামে করার সুযোগ দেওয়া হয়নি। রাজনীতি করতে হলে ঢাকায় বাড়ি থাকা দরকার ভেবে উত্তরায় একটি বাড়ি কিনেছিলাম, কিন্তু এমপি হওয়ার পর আর্থিকভাবে ওই বাড়িটি বিক্রি করতে বাধ্য হলাম।