বাংলাদেশে প্রবাসীরা তাদের উপার্জিত অর্থ পাঠায় প্রতি মাসেই কিন্তু অনেকক্ষেত্রে দেখা যায় তারা বৈধ পথের থেকে বিচ্যুত হয়ে অন্য নানা পন্তায় তারা টাকা পাঠায় সে কারনে সিআইডি ৮ সেপ্টেম্বর এক সংবাদ সম্মেলনে জানায় বৈধ পথে টাকা না পাঠালে প্রবাসীদের স্বজনদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে, এ নিয়ে প্ররবর্তীতে নানা আলোচনা সমালোচনা ওঠে। এ প্রসঙ্গে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন সাংবাদিক আব্দুল হাই সঞ্জু, নিচে তার স্ট্যাটাসটি পাঠদের জন্য তুলে ধরা হল –
বাংলাদেশে ৪ মাসে প্রবাসী আয়ের ২৫ হাজার কোটি টাকা আসেনি। এক বছরে ৭৫ হাজার কোটি টাকা বাংলাদেশে ঢোকেনি। বাংলাদেশের সিআইডি পুলিস ৮ সেপ্টেম্বর এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানিয়ে বলেছে, তাঁরা ১৬ জনকে গ্রেফতার করেছে।
মোবাইল ফোনে আর্থিক সেবা বিকাশ, নগদ, রকেট, উপায় এর মাধ্যমে হুন্ডি হচ্ছে। এক বছরে যদি ৭৫ হাজার কোটি টাকা বাংলাদেশে না ঢোকে, তাহলে গত ৭ বছরে ৫ লক্ষ কোটি টাকা হারিয়েছে বাংলাদেশ।
বিএনপি আমলে এই সেবা ছিল না। আওয়ামীলীগের ডিজিটাল বাংলাদেশে মোবাইল ফাইনেন্সিয়াল সার্ভিস টাকা পাচারকে অনেক নিরাপদ এবং সহজ করে দিয়েছে। বস্তায় টাকা নিয়ে কয়েক জন মানুষকে অস্ত্র সাথে রেখে শহর থেকে গ্রামে গিয়ে হুন্ডির টাকা পৌঁছে দিতে হয়না।
এই হুন্ডির কারণে বাংলাদেশের সামষ্টিক অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আমদানি-রপ্তানিতে বাংলাদেশের শক্তি হ্রাস পেয়েছে, ফলে এর সুদূরপ্রসারী কুফল আমরা ভোগ করবো।
হুন্ডিতে লাভবান হয়েছে বাংলাদেশের অর্থ পাচারকারীরা এবং রাজনৈতিকভাবে লাভবান হয়েছে আওয়ামীলীগ। অর্থ পাচারকারীরা কীভাবে লাভবান হয়েছে, তা ব্যাখ্যা করার প্রয়োজন নেই। চলুন বোঝার চেষ্টা করি, আওয়ামীলীগ কীভাবে লাভবান হয়েছেঃ
১)অর্থ পাচারকারীরা আওয়ামীলীগেরই লোক অথবা স্বার্থান্বেষী লোক, যারা স্বার্থের কারণে আওয়ামীলীগকে সমর্থন এবং সহায়তা করে যাচ্ছে। ভবিষ্যতেও হয়তো তাঁরা এই সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে।
২)হুন্ডির কারণে দেশের চুরি করা অর্থ বিদেশে পাঠাতে হয়নি, দেশেই থেকে গেছে। এর উপকার দেশেই থেকে গেলো। অর্থাৎ, চুরির টাকা হলেও দেশের বিভিন্ন স্থানে বণ্টন হয়ে যাওয়ার কারণে এই টাকার সুষম বণ্টন হয়েছে। অর্থনীতিতে এই সুষম বণ্টনের একটা ইতিবাচক দিক আছে। এতে করে মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বজায় ছিল এবং গণঅসন্তোষ সৃষ্টি হয়নি। ফলে রাজনৈতিকভাবে আওয়ামীলীগ গণবিক্ষোভের সম্মুখীন হয়নি।
কিন্তু এভাবে পাচার হতে থাকলে দেশের আর্থিক খাতে একটা গহ্বর সৃষ্টি হয়। এই গহ্বরটিই এখন স্পষ্ট হচ্ছে। টাকার হিসাব আছে, কিন্তু টাকা নাই। এই টাকা কোথায় গেলো? এই টাকা জনগণের পেটেই গেছে, কিন্তু কাগজে-পত্রে এই তথ্য প্রমাণ করা সম্ভব নয়। এখানেই ধরা খাবে আওয়ামীলীগ। আর ধরা খেতে না চাইলে আগামী নির্বাচন পর্যন্ত টাকা পাচারের এবং টাকা চুরি করার এই সুবিধা অব্যাহত রাখতে হবে আওয়ামীলীগকে। সুবিধা বন্ধ করে দিলে কিছুদিনের মধ্যেই আওয়ামীলীগ সরকারের পতন অনিবার্য।