সম্প্রতি শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনির একটি বক্তব্য নিয়ে গণ মাধ্যম এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উঠেছে নানা আলোচনা সমালোচনা। তিনি মূলত তার বক্তব্যে বলেছেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি পড়ানোর বিরোধিতাকারী ও জঙ্গিবাদের প্রশ্রয়দাতারা মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের ভিক্ষুক বানাতে চায়। এই প্রসঙ্গে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন লেখক আব্দুল হাই সঞ্জু। নিচে সেটি তুলে ধরা হল-
আমি মাদ্রাসা থেকে দাখিল পাশ করে কলেজ থেকে এইচএসসি সম্পন্ন করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমএ করেছি।
আমি দাখিল পাশ করেছি বিজ্ঞান বিভাগ থেকে। মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যবস্থায় বিজ্ঞান শিক্ষার পক্ষে আমি।
কিন্তু আমি নিজের জন্য যেটা ভালো মনে করি, সবার জন্য একই জিনিস ভালো হবে, তা মনে করিনা।
বাংলাদেশ সরকারের মন্ত্রী এবং তথাকথিত প্রগতিশীলদের কথা-বার্তার ধরন এবং মাদ্রাসা শিক্ষায় পরিবর্তন আনার এপ্রোচও আমি পছন্দ করিনা।
শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেছেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি পড়ানোর বিরোধিতাকারী ও জঙ্গিবাদের প্রশ্রয়দাতারা মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের ভিক্ষুক বানাতে চায়।
আমার প্রশ্নঃ বাংলাদেশের বর্তমান ভিক্ষুকরা কি মাদ্রাসার শিক্ষার্থী?
শিক্ষামন্ত্রীর এই বক্তব্য ভিত্তিহীন। মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা কেউ ভিক্ষুক হয়না, রিক্সাও চালায়না। আরবী পড়িয়ে হলেও তাদের জীবন চলে যায়।
শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘মাদ্রাসা শিক্ষার্থীরা কি বিজ্ঞান প্রযুক্তি পড়বে না? শুধু কি নামাজ পড়াবে আর নিজে একটি করে মাদ্রাসা তৈরি করবে?’
শিক্ষামন্ত্রীকে উল্টো প্রশ্ন করা যায় এভাবেঃ
স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা কি ধর্মীয় জ্ঞান অর্জন করবে না? শুধু কি মুভি দেখবে আর নিজে একটি করে ক্লিনিক কিংবা ইঞ্জিনিয়ারিং ফার্ম খুলে মানুষের পকেট কাটবে আর দুর্নীতি করবে?
এসব উদ্ভট এবং ভিত্তিহীন বক্তব্য এক প্রকার আবর্জনা। কে কী পড়বে এবং কে কী পড়াবে- সেটা যার যার পছন্দের বিষয়। এখানে চাপিয়ে দেয়ার কোনো বিষয় থাকা উচিত নয়। সরকারের কাজ হলো সকলের জন্য সব ধরনের পথ উন্মুক্ত রাখা। যে যার মতো পথ বেছে নেবে।
মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের ঘাড়ে ধরে বিজ্ঞান শেখানোর প্রবণতা তাদের স্বাধীনতায় অনুপ্রপবেশ। তাদেরকে নানাভাবে উৎসাহিত করা যেতে পারে। কিন্তু বাধ্য করা উচিত নয়।
মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা দেশের, সমাজের এবং পরিবারের ওপর বোঝা হয়েছে- এমন প্রমাণ নাই। সরকারের ভাণ্ডার থেকে তাদেরকে খাদ্য সরবরাহ করে বাঁচিয়ে রাখতে হচ্ছে- এমন দাবিও কেউ করতে পারবেনা।
মাদ্রাসার প্রতি এলারজি থাকা এক বিষয় আর মাদ্রাসা শিক্ষার কল্যাণ কামনা করা অন্য বিষয়। আর ‘ফ্রিডম অফ চয়েস’ একটি গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ