বরাবরই দেখা যায় বিএনপির নেত্রী রুমিন ফারহানা সংসদে গিয়ে সরকারের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করে থাকেন তারই ধারাবাহিকতায় এবার ও তিনি সংসদে ভাষণ দিতে গিয়ে বরাবরের মতোই সরকারের সমালোচনা করছিলেন। নির্ধারিত সময়ের পরও তিনি থেমে থাকেননি। এক পর্যায়ে স্পিকার তার মাইক বন্ধ করে দেন।
মঙ্গলবার (১ নভেম্বর) সন্ধ্যায় জাতীয় সংসদে অনির্ধারিত আলোচনায় অংশ নেন রুমিন ফারহানা। অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুক।
সংসদে রুমিন ফারহানা বলেন, সরকারের তিন নন্দঘোষ রয়েছে। একটি করোনা, আরেকটি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, আরেকটি বৈশ্বিক মন্দা। যাই হোক, সরকার সব দোষ এই তিন নন্দঘোষের ওপর চাপাচ্ছে। আমাদের দেখতে হবে এই তিন নন্দঘোষ কতটা দোষী।
তিনি বলেন, “ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন পুরো বিশ্বকে প্রভাবিত করেছে। এটি যদি চরম অর্থনৈতিক মন্দার কারণ হয়, তাহলে বিবিসি কেন শ্রীলঙ্কাকে তালিকাভুক্ত করেনি, যে দেশটি বাংলাদেশের চেয়ে কম মাথাপিছু আয়ের দেশ, ভারত, নেপাল এবং অনেক দরিদ্র দেশ। আফ্রিকা?বিগত যুগে যে লুটপাট হয়েছে তা হওয়ার কথা ছিল।
কুইক রেন্টালে বিদ্যুৎ খাতে দায়মুক্তির সমালোচনা করেন রুমিন ফারহানা। এ খাতসহ অবকাঠামো উন্নয়নে দুর্নীতির অভিযোগ করে তিনি বলেন, যেখানে লুটপাট, সেখানে অর্থপাচার স্বাভাবিক।
বক্তৃতার শুরুতে প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ ও জ্বালানি বিষয়ক উপদেষ্টা তৌফিক-ই এলাহী চৌধুরীকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, বিদ্যুৎ ও জ্বালানির অবস্থা কী তা তাঁর (তৌফিক-ই এলাহী) চেয়ে ভালো কেউ জানে না। প্রয়োজনে দিনের বেলা কোনো বিদ্যুৎ ব্যবহার করব না। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে চলে যাচ্ছিল যে, অক্টোবরের এই শীত মৌসুমেও শুক্রবার কয়েক দফা লোডশেডিং হতো।
আগামী বছর দুর্ভিক্ষ হতে পারে-প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্য উল্লেখ করে রুমিন ফারহানা বলেন, প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে এ ধরনের বার্তা এলে আতঙ্ক ও অনিশ্চয়তা তৈরি হয়। এর ফলে মানুষ তাদের ব্যয় হ্রাস করবে এবং অর্থনৈতিক চক্র স্থবির হয়ে পড়বে। আমাদের বুঝতে হবে পরিস্থিতি আসলেই খারাপ।
নির্ধারিত সময় পার হওয়ার পর রুমিন ফারহানাকে বসার জন্য একাধিকবার অনুরোধ করেন ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট শামসুল হক টুকু। কিন্তু তিনি বসে না থেকে বক্তব্য চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে স্পিকার রুমিনের মাইক বন্ধ করে দেন।
রুবিন ফারহানা বলেন, ২০০৯ সালে যখন এই সরকার ক্ষমতায় আসে, তখন তারা জানত যে তদারকি ব্যবস্থা বাতিল করে মেয়াদের পর মেয়াদে তারা সমস্যায় পড়বে। এভাবে ক্ষমতায় থাকতে হলে কিছু গোষ্ঠীকে তন্ত্র করতে হয়। আর সেই দলকে খুশি রাখতে হলে আইন করতে হবে, সেই দলের স্বার্থে নিয়ম তৈরি করতে হবে এবং মানতে হবে। এ কারণেই আইএমএফ বলে আসছিল যে উচ্চ ঋণের হার এবং সীমিত নীতির দেশগুলির শ্রীলঙ্কার মতো হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
উল্লেখ্য, বিএনপির আন্তজার্তিক বিষয়ক সম্পাদক এবং বিএনপির সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য রুমিন ফারহানা সংসদে বক্তব্যে সরকারের বিভিন্ন দিক নিয়ে নানা সমালোচনা করে থাকেন এবং অনেক সময় দেখা যায় তার বক্তব্য নিয়ে সংসদে হৈচৈ শুরু হয়।