সিরিয়া থেকে স্ত্রী এবং সন্তানদের নিয়ে পালিয়ে এসেছে এক ব্যাক্তি। নিজের পরিবার বাঁচাতে সে এখানে এসেছে দেখা গিয়েছেন এখানে এসে তিনি মসজিদ এর মুসুল্লিদের থেকে সাহায্য চাইছেন। জানা গেছে সিরিয়ার রাজধানী দামেস্ক থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছেন তিনি।
সোমবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এশার নামাজের পর দূর থেকে রাজধানীর সেগুনবাগিচা নূর মসজিদের সামনে মানুষের ভিড় লক্ষ্য করা যায়। একটু এগিয়ে গেলে দেখা যায়, সিরিয়ার একটি পরিবারের প্রধান মুসলমানদের কাছ থেকে সাহায্য নিচ্ছেন। সঙ্গে তার স্ত্রী ও তিন সন্তান।
প্ল্যাকার্ড নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা পরিবারের চারপাশে মানুষের ভিড়। প্ল্যাকার্ডে লেখা- ‘আমরা সিরিয়া থেকে এসেছি। আমাদের দেশে যুদ্ধ চলছে। আমার পরিবার ও সন্তানরা আমার সঙ্গে আছে। আমি মুসলিম ভাইদের কাছে সাহায্য চাই। আল্লাহর রহমতের দিকে তাকিয়ে আমাকে সাহায্য করুন। আল্লাহ আপনাদের সকলের মঙ্গল করুন।
শপিং ব্যাগ হাতে নিয়ে মাতৃভূমি ছেড়ে আসা পরিবারের প্রধান ভক্তদের দেওয়া সাহায্যের টাকা সংগ্রহ করছিলেন। দুই-তিন বছরের মেয়েকে কোলে নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা একজন স্ত্রী। সঙ্গে আরও দুই ছেলে মেয়ে। তাদের বয়স সাত-আট বছর বলে ধারণা করা হচ্ছে।
কিন্তু ওই পরিবারের কোনো সদস্য ইংরেজি বলতে পারেন না। তারা শুধু আরবি জানে। এ কারণে তাদের সঙ্গে কেউ স্বাচ্ছন্দ্যে কথা বলতে পারে না।
কিছুক্ষণের মধ্যে সেখানে হাজির হলেন জালাল মিয়া নামে এক মুসল্লি। তিনি তাদের সাথে আরবীতে একটু কথা বললেন। জালাল মিয়া বেশ কয়েক বছর আরব দেশে কাটিয়েছেন। পরিবার তাকে জানায় তারা এক সপ্তাহ আগে সিরিয়া থেকে এসেছে। সেগুনবাগিচার আশপাশে একটি কক্ষে অবস্থান করছেন। এখন তাদের জীবনে অনেক বিশৃঙ্খলা। তারা বেঁচে থাকার জন্য সাহায্য প্রার্থনা করছে।
এরপর দোভাষীর মাধ্যমে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে রাজি হননি পরিবার। শুধু বলেছে, তারা সাহায্য চায়। বাড়ি ফিরতে চায়। তবে এর জন্য কোনো সহযোগিতার প্রয়োজন নেই। এর কিছুক্ষণ পর পরিবারটি ওই মসজিদের সামনে থেকে চলে যায়।
এদিকে সিরিয়ার একটি পরিবার সম্পর্কে আহমেদ ফয়েজ নামের এক সাংবাদিক ফেসবুকে একটি ছবি পোস্ট করে লিখেছেন- এই দম্পতি দুই সন্তান নিয়ে সিরিয়ার রাজধানী দামেস্ক থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছেন। আজকে একটা জরুরী কাজে যাওয়ার পথে একটা মসজিদের সামনে দেখলাম বাংলায় লেখা প্ল্যাকার্ড নিয়ে লোকেদের কাছে আর্থিক সাহায্য চাইছে। আমি তাদের সাথে কথা বলার চেষ্টা করেছি। চোখে অনেক ভয় দেখলাম। সমস্যা হল তারা আরবি ছাড়া আর কোন ভাষা জানে না। স্থানীয় মসজিদের ইমামের সাহায্যে একটু খোঁজ নিলাম, কিন্তু মোটেও খবর করার মতো যথেষ্ট নয়। এবং লোকটি এর চেয়ে বেশি কথা বলতে আগ্রহী ছিল না। তাই বিষয়টি ফেসবুকে শেয়ার করছি।
তিনি আরও লিখেছেন- ঢাকা বিমানবন্দর দিয়ে দেশে প্রবেশ করেছে পরিবার। কিন্তু কখন এসেছেন তা জানতাম না। ঢাকার কোন হোটেলে থাকছে , তবে কোন হোটেলে তা জানতে পারিনি। লোকটির নাম আহমেদ। তাদের বাড়িতে অনেক বি’স্ফো’র’ণ হওয়ায় তারা পালিয়ে যায়। যু;দ্ধ একটি খারাপ জিনিস। এটি মানুষকে রাস্তার ভিক্ষুক এবং উদ্বাস্তুতে পরিণত করে।
উল্লেখ্য, সিরিয়াতে বিরাজমান যে অবস্থা তাতে দেখা যায় অনেকে নিজেদের পরিবার নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় পালিয়ে বেড়াচ্ছে এবং সেই সাথে খুবই বিষণ্ণতায় দিন কাটছে তাদের। বিভিন্ন দেশে পালিয়ে বাঁচার চেষ্টা করছে দেশটির অনেক বাসিন্দারা।