বিশ্বব্যাপী আলোচিত বিষয়গুলোর মধ্যে একটি হল যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী লিজ ট্রাশকে নিয়ে। মূলত গত ৬ সেপ্টেম্বর যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী হন কনজারভেটিভ পার্টির নেতা লিজ ট্রাস। মাত্র দেড় মাসের মাথায় প্রধানমন্ত্রীর পদ ছাড়তে বাধ্য হলেন তিনি। কী কারণে লিজ ট্রাসের এই পরিণতি তা নিয়ে মানুষের মাঝে দেখা দিয়েছে নানা মিশ্র প্রতিক্রিয়া
লিজ ট্রাস কার্যভার গ্রহণের মাত্র ৪৫ দিন পর বৃহস্পতিবার তার পদত্যাগের ঘোষণা দেন। তবে পরবর্তী নেতৃত্ব নির্বাচিত না হওয়া পর্যন্ত তিনি কাজ চালিয়ে যাবেন। ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টির পরবর্তী নেতা এবং প্রধানমন্ত্রী কে হবেন তা নির্ধারণ করতে এখন আরেকটি নেতৃত্ব নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে হবে।
লিজ ট্রাস এর স্থানে দায়িত্ব নেওয়ার জন্য নেতৃত্বের প্রতিযোগিতা আগামী সপ্তাহের শেষের দিকে শেষ হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
বিবিসি বলছে নেতৃত্বের প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অংশ নিতে একজন প্রার্থীর অন্তত ১০০ জন সহকর্মী টোরি এমপির মনোনয়ন বা সমর্থন প্রয়োজন। সে হিসেবে ব্রিটেনের ক্ষমতাসীন দল নতুন নেতা হওয়ার দৌড়ে তিনজনের বেশি দাঁড়াতে পারবে না। কারণ ব্রিটিশ পার্লামেন্টে ৩৫৭ জন টোরি এমপি রয়েছেন।
বাস্তবে মাত্র দুজন প্রার্থীর সম্ভাবনা রয়েছে; এটা এমনকি এক হতে পারে. আর সেক্ষেত্রে ওই একক প্রার্থী দলের সদস্যদের ভোট ছাড়াই নেতা হয়ে যাবেন। তবে এখনো কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি বলে বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। তবে এখানে সম্ভাব্য কয়েকজন প্রার্থীর নাম দেওয়া হলো। তারা হলেন ঋষি সুনাক, পেনি মর্ডান্ট, বরিস জনসন, বেন ওয়ালেস, কেমি ব্যাডেনোচ এবং সুয়েলা ব্রাভারম্যান।
এটি লক্ষণীয় যে লিজ ট্রাসের মন্ত্রিসভা থেকে স্বরাষ্ট্র সচিব সুয়েলা ব্রাভারম্যানের পদত্যাগের ফলে যুক্তরাজ্যে রাজনৈতিক সংকট দেখা দিয়েছে। ঋষি সুনাককে পেছনে ফেলে লিজ ট্রাস এগিয়ে নেন। অভ্যন্তরীণ সচিব হিসাবে গ্রান্ট শ্যাপস নিয়োগের মাধ্যমে সুয়েলার শূন্যপদ দ্রুত পূরণ করা হয়েছিল। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। বৃহস্পতিবার বিবিসি জানিয়েছে, বেশ কয়েকজন টোরি এমপি প্রকাশ্যে লিসের পদত্যাগের আহ্বান জানিয়েছেন। প্রতি মুহূর্তে তাদের সংখ্যা বাড়তে থাকে।
লিজ ট্রাসের পদত্যাগের ঘোষণার কিছুক্ষণ আগে সংস্কৃতিমন্ত্রী নাদিন ডরিস বলেছিলেন যে লিজ ট্রাস পদত্যাগ করলে সংসদ সদস্যরা প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের প্রত্যাবর্তনের দাবি করতে পারেন। অথবা একজন প্রতিদ্বন্দ্বী একজন নেতাকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে প্রস্তাব দিতে পারেন বা নতুন করে নির্বাচন করতে পারেন।
উল্লেখ্যঃ ক্ষমতা গ্রহণের দেড় মাসের মাথায় পদত্যাগ এর ঘোষণা দিয়েছেন লিজ ট্রাস।এর আগে লিজ ট্রাস এমপি নির্বাচিত হয়ে প্রথম যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টে যান ২০১০ সালে। ডেভিড ক্যামেরন প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে ২০১৪ সালে তিনি দেশটির পরিবেশ, খাদ্য ও পল্লি উন্নয়নবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী হন।