শিক্ষা নিয়ে বর্তমানে দেখা যাচ্ছে মানুষের মধ্যে ব্যাবসায়িক মানসিকতা দেখা যাচ্ছে আর এই কারণেই এ খাতের উদ্যোক্তাদের শিক্ষা নিয়ে ব্যবসা করার মানসিকতা পরিহার করার আহ্বান জানান রাষ্ট্রপতি। আব্দুল হামিদ। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে পরিণত না করে একবিংশ শতাব্দীর উপযোগী জ্ঞান প্রদান ও স্নাতক তৈরির প্রতিষ্ঠানে পরিণত করার আহ্বান জানান তিনি।
মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের (কাব) প্রথম সমাবর্তনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর আচার্য আবদুল হামিদ বলেন, শিক্ষা নিয়ে ব্যবসা করার মানসিকতা পরিহার করাই সবার জন্য মঙ্গলজনক।
উদ্যোক্তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় আইন ও বিধি মোতাবেক পরিচালিত হবে। নিজস্ব ইচ্ছা ও সুবিধা অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয় চালানো যায় না।
আমরা চাই না প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলো দাতব্য প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচালিত হোক। আবার আমরা শিক্ষাকে পণ্য মনে করে শিক্ষার নামে বিশ্ববিদ্যালয়কে বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করতে চাই না।
দেশে বর্তমানে দেড় শতাধিক বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে জানিয়ে আবদুল হামিদ বলেন, “পত্রিকা খুললে দেখা যাবে, কিছু বিশ্ববিদ্যালয় ডিগ্রির নামে সার্টিফিকেট বিতরণ করছে। অনেক বিশ্ববিদ্যালয় স্নাতকের কারখানা খুলেছে।
একবিংশ শতাব্দীতে বৈশ্বিক অগ্রগতির সাথে তাল মিলিয়ে চলার জন্য, জাতির উন্নয়ন, একটি উন্নত সমাজ গঠন এবং বিশ্বমানের স্নাতক তৈরির লক্ষ্যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের গুণগত মান, স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
“মানসম্মত মান ছাড়া উচ্চশিক্ষা মূল্যহীন। তাই এটা নিশ্চিত করতে হবে যে উচ্চশিক্ষা কোনোভাবেই শুধুমাত্র সার্টিফিকেট নয়।’
গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, “দেশে উচ্চ শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। শিক্ষাকে কাজের সঙ্গে যুক্ত করতে না পারলে হয়তো ভবিষ্যতে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করে দিতে হবে। ছাত্রদের
শিক্ষার পরিবেশ নিশ্চিত করতে এবং নিজস্ব ক্যাম্পাস ও অবকাঠামো গড়ে তোলার পদক্ষেপ নিতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকেও আহ্বান জানান রাষ্ট্রপ্রধান।
স্নাতকদের উদ্দেশে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘ভবিষ্যতে দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতি নিশ্চিত করতে আপনাদেরই নেতৃত্ব দিতে হবে। জাতির জনকের স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ আপনাদের হাত ধরেই এগিয়ে যাবে।
“আমরা আশা করি দেশের ইতিহাস-ঐতিহ্য লালন করে এবং জ্ঞান-বিজ্ঞান চর্চায় নিজেকে সমৃদ্ধ করে আপনি একজন সুনাগরিক হিসেবে গড়ে উঠবেন।”
উল্লেখ্য, ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত করতে প্রযুক্তিভিত্তিক শিক্ষা বিস্তারের দিকে গুরুত্ব দিচ্ছে সরকার তারই ধারাবাহিকতায় নানান কর্মকান্ড হাতে নেওয়া হয়েছে।