Tuesday , May 21 2024
Breaking News
Home / Countrywide / প্রেমের সম্পর্কে দ্বিমত করাই কাল হলো চিকিৎসক জান্নাতুলের, প্রেমিকের হাতেই যায় প্রাণ

প্রেমের সম্পর্কে দ্বিমত করাই কাল হলো চিকিৎসক জান্নাতুলের, প্রেমিকের হাতেই যায় প্রাণ

হোটেল কক্ষে নির্মমভাবে হ’ত্যা করা হয় ডা. জান্নাতুল নাঈম সিদ্দিকাকে। এই নৃশংস ঘটনা ঘটিয়েছে তার প্রেমিক। ঘটনার দায় স্বীকারও করেছেন অভিযুক্ত প্রেমিক রেজাউল করিম রেজা। মূলত প্রেমিকে জান্নাতুল প্রেম নিয়ে দ্বিমত পোষণ করলে ক্ষোভ থেকে রেজা এ হত্যাকাণ্ড ঘটান। চাঞ্চল্যকর ওই হত্যাকাণ্ডের চার্জশিটে এসব তথ্য জানিয়েছে পুলিশ।

সম্প্রতি রেজাউল করিম রেজাকে (৪২) একমাত্র আসামি করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে পুলিশ। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কলাবাগান থানার পরিদর্শক আবু জাফর মোহাম্মদ মাহফুজুল কবির অভিযোগপত্রে এসব কথা উল্লেখ করেন।

২০২২ সালের ১০ আগস্ট রাত সাড়ে ৯টার দিকে রাজধানীর পান্থপথের ফ্যামিলি সার্ভিস অ্যাপার্টমেন্ট নামের একটি আবাসিক হোটেল থেকে সদ্য এমবিবিএস পাস করা জান্নাতুল নাঈম সিদ্দিকার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় তার বাবা শফিকুল আলম বাদী হয়ে কলাবাগান থানায় একটি মামলা করেন। মামলার পরদিনই চট্টগ্রাম থেকে আসামি রেজাকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব। রেজাউলও আদালতে ঘটনার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দেন।

জান্নাতুলের স্বজনরাও এ প্রেমের ঘটনায় বাধা দেন

কলাবাগান থানার পরিদর্শক আবু জাফর মোহাম্মদ মাহফুজুল কবির অভিযোগপত্রে উল্লেখ করেন, “অভিযুক্ত রেজাউল করিম রেজা ও ডা. জান্নাতুল নাঈম সিদ্দিকীর (২৭) মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। জান্নাতুল ঢাকা মেডিকেল কলেজে গাইনোকোলজি অ্যান্ড অপ্স বিষয়ে প্রশিক্ষণ নিচ্ছিলেন। হাসপাতাল।একপর্যায়ে সে প্রেম নিয়ে দ্বিমত পোষণ করে।এ নিয়ে রেজা ও জান্নাতুলের মধ্যে দ্বন্দ্ব হয়।জান্নাতুলের স্বজনরাও তাদের প্রেমের ব্যাপারে বাধা দেয়।

জান্নাতুল নাঈম পরিবার নিয়ে ঢাকায় থাকতেন। ১০ আগস্ট ২০২২ বিকাল ৫:৫০ টার দিকে, তিনি যথারীতি ঢামেক হাসপাতালে ক্লাসের কথা বলে বাসা থেকে বের হন। পরে বাসায় না ফেরায় তার বাবা তাকে মোবাইল ফোনে কল করেন। কিন্তু তার মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়। এরপর জান্নাতুলের বাবা ও পরিবারের সদস্যরা বিভিন্ন জায়গায় খোঁজ করেন। খবর পেয়ে কলাবাগান থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে ক্রিমসিনের সহায়তায় জান্নাতুলকে শনাক্ত করে। পুলিশ পরিবারকে ফোন করে জানায়, কলাবাগান থানার পশ্চিম পান্থপথে ফ্যামিলি সার্ভিস অ্যাপার্টমেন্ট আবাসিক হোটেলের চতুর্থ তলার একটি কক্ষে জান্নাতুলকে খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে।

রেজাউল তাকে হত্যার পর হোটেলের কক্ষে তালাবদ্ধ করে রাখে

অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘আসামি রেজাউল অন্যদের সহযোগিতায় ডা. জান্নাতুল নাঈম সিদ্দিকাকে হত্যা করে বাইরে থেকে রুমে তালা মেরে চলে যান। হোটেলের ম্যানেজার একাধিকবার ওই রুম তালাবদ্ধ দেখে আসামিকে ফোন করেন। আসামি রেজা আসি আসছি বলে কালক্ষেপণ করতে থাকেন। পরে অভিযুক্তের মোবাইল ফোন বন্ধ করে রাত ৮টা ২০ মিনিটে ব্যবস্থাপক কলাবাগান থানায় খবর দিলে পুলিশ হোটেল কক্ষ থেকে রক্তমাখা ছুরি ও গেঞ্জিসহ জান্নাতুলের লাশ উদ্ধার করে।

রেজাউলের ব্যাগে আগে থেকেই একটি ছুরি ছিল

অভিযোগপত্রে পুলিশ কর্মকর্তা উল্লেখ করেন, হত্যাকাণ্ডের সময় আসামি রেজাউলের গায়ে রক্তাক্ত গেঞ্জি ছিল। হোটেলে জান্নাতুল নাঈম ও আসামী রেজাউল থাকার সময় তাদের মধ্যে প্রায়ই কথা কাটাকাটি হয়। উভয়ের মধ্যে কথা কাটাকাটির শুরুতে জান্নাতুল রেজাউলের গালে চড় মারেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে রেজাউল তার ব্যাগে রাখা ছুরি দিয়ে পেটে ও গলায় ছুরিকাঘাত করে জান্নাতুলকে নির্মমভাবে হত্যা করে।

মামলার সূত্রে জানা গেছে, জান্নাতুল নাঈম স্বামী-স্ত্রী হিসেবে রেজাউল করিম রেজাকে নিয়ে পান্থপথের ফ্যামিলি সার্ভিস অ্যাপার্টমেন্ট নামের আবাসিক হোটেলে যান। পরে রেজাউল সুযোগ পেয়ে তাকে গলা কেটে হত্যা করে পালিয়ে যায়। ২০২২ সালের ১০ আগস্ট রাত সাড়ে ৯টার দিকে পুলিশ জান্নাতুলের লাশ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় জান্নাতুলের বাবা শফিকুল আলম বাদী হয়ে কলাবাগান থানায় একটি মামলা করেন।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কলাবাগান থানার পরিদর্শক আবু জাফর মোহাম্মদ মাহফুজুল কবির বলেন, নারী চিকিৎসক জান্নাতুল নাঈম সিদ্দিকাকে গলা কেটে হ’ত্যা’র স’ত্যতা জানতে পেরে আমরা রেজাউল করিম রেজার বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেছি। ”

জান্নাতুল নাঈমের বাবা শফিকুল আলম বলেন, আমার মেয়ে হত্যার বিচার চাই। খুনি রেজাউলের সর্বোচ্চ শাস্তি প্রত্যাশা করছি।

About Rasel Khalifa

Check Also

সরকারি লোগো লাগানো গাড়িতে ৭ লাখ ইয়াবা

সড়ক ও নগর বিভাগের লোগো সম্বলিত একটি বিলাসবহুল (এসইউভি) পাজেরো গাড়ি টেকনাফ হয়ে মেরিন ড্রাইভ …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *