Sunday , May 19 2024
Breaking News
Home / Countrywide / হঠাৎ সরকার পতনে নতুন পথে হাঁটার ঘোষণা দিল বিএনপি

হঠাৎ সরকার পতনে নতুন পথে হাঁটার ঘোষণা দিল বিএনপি

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর বিএনপির একপক্ষের আন্দোলনে কিছুটা ছেদ পড়েছে। কালো পতাকা মিছিল ও গণসংযোগ ছাড়া এখন পর্যন্ত বড় কোনো কর্মসূচি দেওয়া হয়নি। সমমনা দলগুলোর সঙ্গে আরও আলোচনা করে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলে জানা গেছে। দলীয় সূত্রের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে সতর্কভাবে কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। এসএসসি পরীক্ষা ও রমজানের কারণে শিগগিরই বড় কর্মসূচিতে যেতে পারছে না দলটি। এজন্য নেতাকর্মীদের সংগঠনকে শক্তিশালী করতে নানা পরিকল্পনা চলছে। সুবিধাজনক সময়ে কর্মসূচি বাড়ানোর কথাও ভাবছেন নীতিনির্ধারকরা। এর আগে পরিবেশ বিবেচনায় নিয়ে দলটি সময়ে সময়ে ইস্যুভিত্তিক কর্মসূচি দেবে। বিএনপির নীতিনির্ধারণী সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

সূত্র জানায়, কারাবন্দি দলের নেতাদের অধিকাংশই মুক্তি পেয়েছেন। এখন ২৮ অক্টোবরের আগের ও পরের বিষয়গুলো পর্যালোচনা করা হচ্ছে। দেশের অভ্যন্তরীণ ও ভূ-রাজনৈতিক সমীকরণ মিলিয়ে বিস্তারিত বিশ্লেষণ চলছে নতুন একদলীয় কর্মসূচির কথা ভাবছে বিএনপি। যাতে কর্মসূচি বাস্তবায়নে কোনো দুর্বলতা না থাকে। গত বছরের শেষের দিকে একটি ‘অ্যাকশনেবল প্রোগ্রাম’ প্রদানে ব্যর্থতা এবং শীর্ষ-কেন্দ্রীয় নেতাদের অনুপস্থিতির কারণে দলের অনেক নীতিনির্ধারক বিব্রত হয়েছিলেন। এমন পরিস্থিতিতে বিএনপিসহ সমমনা দলগুলোর নেতারা কোনো ‘হাস্যকর’ কর্মসূচিতে যেতে চান না।

নীতিনির্ধারণী ফোরামের একজন সদস্য জানান, ২৮শে অক্টোবরের দাঙ্গায় গ্রেপ্তার হওয়া শীর্ষ নেতাদের অনেকেই মুক্তি পেয়েছেন। এখনো বেশ কয়েকজন কারাবন্দী। বিএনপি এই মুহূর্তে কোনো কঠোর সিদ্ধান্ত নেবে না। মুক্তিপ্রাপ্ত শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে পরবর্তী কর্মপন্থা নির্ধারণ করবেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। চলমান আন্দোলনের পাশাপাশি এ সময়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে দলীয় তৎপরতা বাড়বে। ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতির আলোকে বন্ধুপ্রতিম দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপনের ওপর জোর দেওয়া হচ্ছে। সার্বিক পরিস্থিতি অনুকূল মনে হলে কঠোর কর্মসূচির চিন্তাভাবনা থাকবে। এ জন্য ভালো সময়ের অপেক্ষা করতে হবে নেতাকর্মীদের। এই নীতি নির্ধারক আরো বলেন, বর্তমান সরকার রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে ক্ষমতায় টিকে আছে। সেই সুযোগ বেশিদিন থাকবে না। অতীতে বিএনপির আন্দোলন যখন চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছিল, তখন সরকার রাষ্ট্রকে ব্যবহার করে তা দ/মন করতে পেরেছিল। এবার একাধিক পরিকল্পনা নিয়ে মাঠে নামবে বিএনপি। সরকার ফাঁদ ফেললেও তাৎক্ষণিক পরিস্থিতি বদলে যাবে। সে অনুযায়ী দল ও সংগঠন সাজানো হবে।

দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী দেশের একটি জনপ্রিয় সংবাদমাধ্যমকে বলেন, বিএনপির আন্দোলন চলছে। চলছে রুটিন কর্মসূচি। নতুন কোনো সিদ্ধান্ত এখনো দেওয়া হয়নি। আলোচনার ভিত্তিতে দলের সিদ্ধান্ত আসবে।

তিনি বলেন, ‘বিএনপি গণতন্ত্র ও ভোটাধিকারের আন্দোলনে আছে। এই একদফা আন্দোলন থেকে সরে আসার উপায় নেই। এটা শুধু বিএনপির আন্দোলন নয়, গণমানুষের আন্দোলন। আমরা বাংলাদেশের মানুষের অধিকার ফিরে পাওয়ার আশা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছি। এটি সফল না হওয়া পর্যন্ত, অন্তত একটি দল হিসাবে আমাদের অগ্রগতি অব্যাহত থাকবে। আমরা আন্দোলনে আছি। পূর্ণাঙ্গ সাফল্য না পাওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। সরকার গঠন, বিরোধী দল এখানে ইস্যু নয়। মূল কথা হলো বাংলাদেশের মানুষ এখানে তাদের মালিকানা ফিরে পাবে।

গত বছরের জুলাইয়ে আন্দোলনের ঘোষণা দিয়েছিল বিএনপি। পরে রাজধানীসহ সারাদেশে কঠোর কর্মসূচি পালন করে দলটি। ৩৬টি সমমনা দল একযোগে একই কর্মসূচি পালন করে। ২৮ অক্টোবর থেকে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন থেকে ৭ জানুয়ারি পর্যন্ত দলগুলো হরতাল-অবরোধসহ অসহযোগ আন্দোলনও পালন করে। ঘোষিত কর্মসূচির মূল্যায়ন প্রসঙ্গে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, “অবশ্যই উপযুক্ত কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে। মূল কথা হলো জনগণের অধিকার ফিরে পাওয়া। বিএনপিসহ অন্যান্য সমমনা দলের সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ হয়ে এসব কর্মসূচি দেওয়া হয়েছে। প্রত্যাশিত কর্মসূচি অনেক কিছু দেওয়া হয়েছে।এমন নি/পীড়ন-নি/পীড়নের মুখেও বিএনপি এখনও তার জায়গা থেকে সরে যায়নি, সেখান থেকে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যাব।

বিএনপির দাবি-৭ জানুয়ারির নির্বাচন পশ্চিমাসহ গণতান্ত্রিক বিশ্বের কাছে গ্রহণযোগ্য হয়নি। ‘একতরফা’ নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার গঠিত হলেও জাতিসংঘসহ পশ্চিমা গণতান্ত্রিক বিশ্ব বাংলাদেশের জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকারের ব্যাপারে তাদের নৈতিক অবস্থান থেকে বিন্দুমাত্র নড়েনি। বরং ৭ই জানুয়ারির পর বাংলাদেশের গণতন্ত্রের অভাব, ভোটাধিকার ও মানবাধিকার থেকে বঞ্চিত হওয়া, সুশাসনের অভাব বিদেশীদের কাছে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। এমন পরিস্থিতিতে দেশের অভ্যন্তরীণ ও ভূ-রাজনৈতিক অবস্থান কাজে লাগাতে পারলে সরকারের ওপর চাপ বাড়বে। এটি লক্ষ্য অর্জনকে ত্বরান্বিত করবে।

About Babu

Check Also

ফজরের নামাজ যাচ্ছিলেন ইজাজুল, রাস্তায় ছিঁড়ে খেলো কুকুরের দল

ইজাজুল ইসলাম (৪০) নামে এক ব্যক্তি ভোরে ফজরের নামাজের জন্য মসজিদে যাচ্ছিলেন। কিন্তু হঠাৎ রাস্তায় …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *