Thursday , May 16 2024
Breaking News
Home / Countrywide / জলদস্যুদের সঙ্গে কি কথা হয়েছে জানাল এমভি আবদুল্লাহর মালিকপক্ষ

জলদস্যুদের সঙ্গে কি কথা হয়েছে জানাল এমভি আবদুল্লাহর মালিকপক্ষ

সোমালি জলদস্যুরা তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে ছিনতাইকৃত এমভি আবদুল্লাহর জাহাজের মালিকপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেছে। বুধবার যোগাযোগ শুরু হলেও মুক্তিপণ নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি। তবে সুস্থ আছেন জাহাজে থাকা ২৩ জন বাংলাদেশি নাবিক ও ক্রু।

জাহাজটির মালিক কবির গ্রুপের মিডিয়া উপদেষ্টা মিজানুল ইসলাম গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, জাহাজটিকে জিম্মি করার ৯ দিন পর সোমালি জলদস্যুরা মালিকের সঙ্গে যোগাযোগ করে। আজ বুধবার বিকেলে তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়।

জাহাজে থাকা ২৩ জিম্মি নিরাপদ ও সুস্থ রয়েছে জানিয়ে মিজানুল ইসলাম বলেন, “প্রথম যোগাযোগে মুক্তিপণ নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি।এখন যোগাযোগের সূত্র ধরে আলোচনা এগিয়ে যাবে। নাবিকদের নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ মাথায় রেখে দ্রুত সময়ে জিম্মি জাহাজ মুক্ত করার চেষ্টা চলছে।’

কবির গ্রুপের আরেক কর্মকর্তা বলেন, বুধবার সোমালিয়ার দস্যুরা মালিকপক্ষেও সঙ্গে যোগাযোগ হয়েছে। আশা করছি উভয় পক্ষের মধ্যে এ বিষয়ে সমঝোতা হবে। জাহাজের জিম্মি নাবিকরা সুস্থভাবে ফিরে আসবেন। তবে কোনো দাবি-দাওয়া জানিয়েছেন কিনা সে বিষয়ে কিছুই জানাননি ওই কর্মকর্তাও।

বাংলাদেশ মার্চেন্ট মেরিন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএমওএ) সভাপতি ক্যাপ্টেন এম আনাম চৌধুরী বলেন, আমি শুনেছি দস্যুরা জাহাজ থেকে যোগাযোগ করেছে। এখানে চার ধরনের দস্যু গ্রুপ আছে। একটি গ্রুপ জাহাজ আটক করেছে। আরেকটা গ্রুপ জাহাজের নিয়ন্ত্রণে আছে। চার নম্বর গ্রুপের দায়িত্ব হচ্ছে সমঝোতা করা। এখন কোন গ্রুপ যোগাযোগ করেছে তা বলতে পারছি না।

এদিকে সমুদ্রগামী বাণিজ্যিক জাহাজের ক্যাপ্টেন আতিক ইউ এ খান বলেছেন, এমভি আবদুল্লাহ জাহাজ জিম্মি করা দস্যুরা মালিকের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। কত ডলার দাবি করেছে তা বলতে পারছি না। প্রথমে অনেক বেশি দাবি করবে। পরবর্তীতে তা দরকষাকষিতে কমে আসবে। উভয়ের মধ্যে একটা সমঝোতা হবে।

তিনি আরও বলেন, অবস্থান পরিবর্তন করেছে দস্যুরা। এবার তীর থেকে মাত্র দেড় নটিক্যাল মাইল দূরে নিয়ে জাহাজ নোঙর করা হয়েছে। তবে জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ উদ্ধারে জলদস্যুদের ওপর যৌথভাবে চাপ বাড়িয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও ভারতীয় নৌবাহিনী।

মোজাম্বিক থেকে ৫৫ হাজার টন কয়লা নিয়ে আরব আমিরাত যাওয়ার পথে গত ১২ মার্চ ভারত মহাসাগরের সোমালি জলদস্যুদের কবলে পড়ে এমভি আবদুল্লাহ। জলদস্যুরা জাহাজটির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ২৩ নাবিকের সবাইকে জিম্মি করে।

গত কয়েকদিনে এমভির মালিক আবদুল্লাহ জানান, শুধু নাবিকদের সঙ্গে যোগাযোগ ছিল। জলদস্যুদের সাথে যোগাযোগ করতে না পারায় কার্যক্রম এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার একটা অনিশ্চয়তা ও আতঙ্ক বিরাজ করছিল। এরই মধ্যে বেশ কয়েকবার জাহাজের অবস্থান পরিবর্তন করেছে জলদস্যুরা।

ভারতীয় নৌবাহিনী মাল্টা-পতাকাবাহী জাহাজ রুয়েনকে উদ্ধার করার পর এমভি আবদুল্লাহর জাহাজে থাকা জলদস্যুরা সতর্কতা হিসেবে সোমালিয়ার উপকূল থেকে সরে যায়, যেটি সোমালি জলদস্যুদের অন্য একটি দল দ্বারা জব্দ করা হয়েছিল। আটক জাহাজে জলদস্যুদের সংখ্যাও বেড়েছে বলে গণমাধ্যমে খবর এসেছে।

এদিকে বাংলাদেশি পতাকাবাহী জাহাজটি এবং জিম্মি নাবিকদের জলদস্যুদের হাত থেকে মুক্ত করতে সোমালিয়ার পান্টল্যান্ড পুলিশ এবং আন্তর্জাতিক নৌবাহিনী অভিযানের প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে পান্টল্যান্ড অঞ্চলের পুলিশের বরাতে রয়টার্সে খবর এসেছে।

সোমালিয়ার আধা-স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল পুন্টল্যান্ডে অনেক জলদস্যু দলের বাস। এলাকার পুলিশ বাহিনী বলেছে এমভি আবদুল্লাহকে দখল করে থাকা জলদস্যুদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক নৌবাহিনীর অভিযানের একটি পরিকল্পনা তারা জানতে পেরেছে। সে কারণে তারা সতর্ক অবস্থানে রয়েছে এবং অভিযানে অংশ নিতেও প্রস্তুত রয়েছে।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের নৌবাহিনী, যারা পূর্ব আফ্রিকার উপকূলে জলদস্যুতা নির্মূলে কাজ করে, তাদের ‘অপারেশন আটলান্টা’-এর অংশ হিসেবে এমভি আবদুল্লাহকে পর্যবেক্ষণ করছে।

About Nasimul Islam

Check Also

অবশেষে যত বছর সাজা হলো মহানবীকে নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করা সেই জবি শিক্ষার্থী তিথি সরকারের

ইসলাম অবমাননার দায়ে পল্টন থানার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বহিষ্কৃত ছাত্রী তিথি সরকারকে …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *