বেশ কিছু সরকার বিরোধী রাজনৈতিক দল ভারতীয় পণ্য বয়কটের ডাক দিয়েছে। এ আহ্বানে সংহতি জানিয়েছেন বিএনপি নেতারা। তারা সোশ্যাল মিডিয়াতেও সক্রিয়। তবে বিএনপির পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের অবস্থান স্পষ্ট করা হয়নি। বিষয়টি নিয়ে দলের নীতিনির্ধারকরা বেশ কৌশলে এগোচ্ছেন।
সোমবার রাতে দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে ভারত ইস্যু নিয়ে আলোচনা হলেও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। নেতারা বলেন, দেশের জনগণ, সরকার ও ভারতের বর্তমান অবস্থানের ওপর নির্ভর করে পরবর্তী কৌশল নির্ধারণ করা হবে।
আগামী বৈঠকে আরও আলোচনা ও তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে এ বিষয়ে দলের অবস্থান ঠিক করবে বিএনপি। স্থায়ী কমিটির বৈঠক থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র জানায়, বৈঠকে উপস্থিত নেতারা ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে ভারতের ভূমিকার কড়া সমালোচনা করেন। তবে প্রতিবেশী ও প্রভাবশালী রাষ্ট্র হওয়ায় তারা কৌশলগত কারণে ভারতীয় পণ্য বয়কট আন্দোলনে সরাসরি অংশ নিতে চায় না। তবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কোনো গোষ্ঠী বা জনগণ ভারতীয় পণ্য বর্জনের ডাক দিলে তা এড়াবে না বিএনপি। এ জন্য কৌশল নির্ধারণ করতে চায় বিএনপির নীতিনির্ধারণী ফোরাম। এদিকে, সম্প্রতি ভারতীয় পণ্য বয়কট আন্দোলনের বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। গত ২০ মার্চ নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। একদল কর্মীকে সঙ্গে নিয়ে তিনি তার পরা ভারতীয় চাদরটি দলীয় কার্যালয়ের সামনে ফেলে দেন। এরপর তার সঙ্গে থাকা নেতাকর্মীরা
সেই চাদর পুড়িয়ে দেন। পরে ঘটনার ব্যাখ্যা করে রিজভী বলেন, “ইন্ডিয়া আউট ক্যাম্পেইনের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে তিনি যে ভারতীয় ব্যবহার চাদরটি করছিলেন তা ফেলে দিয়েছিলেন।”
বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, ভারতীয় চাদর ছুড়ে ফেলার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। দুই সদস্য বলেন, আমরা ভারতের বিরোধিতা করব, তবে কৌশল ঠিক করতে হবে। তা না করে এমন বক্তৃতা দেওয়া উচিত নয়।’
আলোচনার এ পর্যায়ে সদ্য মুক্তিপ্রাপ্ত এক নেতা বলেন, সরকারের বিরুদ্ধে আমরা দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করেছি। বড় আন্দোলনের সাফল্য বা ব্যর্থতার একটি মূল্যায়ন সবসময় থাকে। আমরা সেটার মূল্যায়ন করিনি। আমাদের প্রথমে তা মূল্যায়ন করা উচিত, তারপর তার উপর ভিত্তি করে ভবিষ্যত কর্মপন্থা নির্ধারণ করা উচিত। আমরা যদি ভারতের বিরোধিতা করি, তাহলে তার কৌশল কী হবে তা আমাদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে। ভবিষ্যতে এটি সম্পূর্ণভাবে আলোচনা করা উচিত। তারপর কৌশল ঠিক করতে হবে।
বৈঠকে আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচন নিয়েও আলোচনা করেন তারা। ওই সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচন বয়কটের ৪ মাসের মধ্যে দলীয় সরকারের অধীনে উপজেলা নির্বাচনে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই বলে মনে করছেন নীতিনির্ধারকরা।৭ জানুয়ারির জাতীয় নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ না করার কারণ এখনও বিদ্যমান। তবে কেউ নির্বাচনে অংশ নিলে দল থেকে বহিষ্কারের মতো কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ার বিপক্ষে মত দেন স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য। তবে তার বক্তব্যের সঙ্গে একমত হননি অনেকেই।