বাংলাদেশের নির্বাচন ইস্যুতে ভারত মার্কিন হস্তক্ষেপ পছন্দ করে না বলে বাইডেন প্রশাসনকে দিল্লি স্পষ্ট করে দেওয়ার পরে, ঢাকায় মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসকে আত্মগোপনে যেতে হয়েছিল।
ভারতের সাবেক শীর্ষ কূটনীতিক ও ঢাকায় নিযুক্ত সাবেক ভারতীয় হাইকমিশনার পিনাক রঞ্জন চক্রবর্তী বৃহস্পতিবার বিকেলে দিল্লির থিংক ট্যাংক ‘অবজারভার রিসার্চ ফাউন্ডেশন’ (ওআরএফ) এ তার বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে এ মন্তব্য করেন।
অনুষ্ঠানের প্রশ্নোত্তর পর্বে এক প্রশ্নের জবাবে পিনাক রঞ্জন চক্রবর্তী বলেন, “আমি নিশ্চিত করে বলতে পারি- ভারতের দিক থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে এই জোরালো বার্তা পৌঁছে দেওয়া হয়েছিল। ফলে, মার্কিন রাষ্ট্রদূত ঢাকায় যে কয়েকদিন আগে অমুক বিএনপি নেতাকে আমন্ত্রণ দিয়ে বাড়িতে আনছিলেন বা তমুক বিএনপির নেতার বাড়িতে হাজির হচ্ছিলেন, আর ভোটের সময় তাকে দেখাই গেল না!কোথায় গা ঢাকা দেলেন তিনিই জানেন!
৭ জানুয়ারির বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ বলা যায় কি না এমন প্রশ্নের জবাবে পিনাক বলেন, কোনো দল নিজের সিদ্ধান্তে নির্বাচনে অংশ না নিলে তার জন্য বিজয়ী দলকে দায়ী করা ঠিক নয়।
পিনাক রঞ্জন চক্রবর্তী বলেন, ‘আমাদের ভারতে প্রায়ই দেখা যায় যে দল জানে যে তারা নির্বাচনে হেরে যাবে, তারা অনেক আগেই বলতে শুরু করেছে যে ইভিএম (ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন) কারচুপি করা হচ্ছে। তাই তাদের অজুহাতের অভাব হয় না।
অনুষ্ঠানে বক্তাদের মধ্যে একজন, প্রাক্তন ভারতীয় কূটনীতিক এবং ঢাকায় প্রাক্তন হাইকমিশনার বিনা সিক্রি বলেন যে তার মূল্যায়ন হল যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আসলে বাংলাদেশে জামায়াতে ইসলামীকে একটি ‘মধ্যপন্থী’ ইসলামি গোষ্ঠী হিসাবে বিবেচনা করে এবং তাদের নেই। জামায়াতের চিন্তাভাবনা ও কর্মকাণ্ড কতটা চরমপন্থী তা ধারণা করা যায়। বিনা সিক্রি মনে করেন, জামায়াত ও তাদের রাজনৈতিক সহযোগী বিএনপি এই ‘ভুল ধারণা’র ভিত্তিতে আমেরিকার পৃষ্ঠপোষকতা পেয়ে আসছে।
পিনাক রঞ্জন চক্রবর্তী এ প্রসঙ্গে দ্বিমত পোষণ করে বলেন, তিনি মনে করেন, যুক্তরাষ্ট্র আসলে জানে জামায়াতের আসল রূপ কী। কিন্তু ১৯৭১ সাল থেকে আওয়ামী লীগের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের বৈরী মনোভাব এখনো প্রতিফলিত হচ্ছে। এ কারণে ওয়াশিংটন অর্ধশতাব্দী পেরিয়ে গেলেও আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের ওপর তোল্লাই চালিয়ে যাচ্ছে।
বাংলাদেশের সাবেক পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হক এবং ওআরএফ কলকাতার পরিচালক অনুসুয়া বসুরাই চৌধুরীও আলোচনায় অংশ নেন। পরিচালনা করেছেন ওআরএফ দিল্লির সিনিয়র ফেলো এবং কৌশলগত বিশ্লেষক সুশান্ত সারিন।