রাজধানীর গুলশান-২ এ ক্যাফে সেলিব্রিটা বারের সামনে মদ খেয়ে আরেক নারীকে মারধরের ঘটনায় তিনজনকে আটক করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ।
গ্রেপ্তারের পর ডিবি বলছে, ওই তিন নারীর মদের লাইসেন্স ছিল না। তারা অবৈধভাবে অতিরিক্ত মদ পান করে মাতাল হয়ে মারামারি করে। বেআইনিভাবে মদ বিক্রির জন্য সেলিব্রিটি বারের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেবে গোয়েন্দা পুলিশ।
বারের সামনে মারামারির ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়া তিন নারী হলেন শারমিন আক্তার মিম (২৪), ফাহিমা ইসলাম তুরিন (২৬) ও নুসরাত আফরিন।
বুধবার (১৭ এপ্রিল) বিকেলে রাজধানীর মিন্টো রোডে নিজ কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশিদ।
তিনি বলেন, আমরা সবাই এই শহরে থাকি। শহরে থাকতে চাইলে কিছু নিয়ম মেনে চলতে হবে। মদের লাইসেন্স সহ একজন পুরুষ বা মহিলা আইনি ভাবে বার থেকে মদ পান করতে পারেন। এতে কোনো আইনি বাধা নেই। কিন্তু পহেলা বৈশাখের রাতে গুলশানের মতো এলাকায় যেখানে অভিজাত পরিবারের লোকজন থাকে, সেখানে তারা মদ পান করে। কারও লাইসেন্স ছিল না। বার কর্তৃপক্ষ লাইসেন্স ছাড়া কারও কাছে মদ বিক্রি করতে পারে না। তাদের উচিত ছিল এই নারীদের মদের লাইসেন্স চেক করা। এমনকি এই নারীদের কাছে অতিরিক্ত পরিমাণে মদ বিক্রি করেছে তারা। যা পান করে মাতাল ও বেসামাল হয়ে গেলেন তারা।
তিনি আরও বলেন, বারের লোকজনের উচিত ছিল অবাধ্য নারীদের নিয়ন্ত্রণ করা। এই মহিলারা বার থেকে বেরিয়ে রাস্তায় নেমে প্রকাশ্যে মারামারি করে। এই নারীরা বার থেকে বের হয়ে রাস্তায় গিয়ে প্রকাশ্যে মারামারিতে জড়ালেন। যা গুলশানের বাসিন্দারা দেখলেন। তারা ভিডিও করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছেড়ে দিলেন।
গোয়েন্দা পুলিশের প্রধান বলেন,আমি মনে করি আমাদের দেশের সাধারণ মানুষ এই ভিডিও দেখে ভাববে, শহরের রাস্তায় নারীরা মাতলামি করবে, মারামারি করবে! এটা কোনো অভিভাবক মেনে নিতে পারবেন না। এসব নারীরা কারো না কারো সন্তান। তাদের অভিভাবকদের উচিত মেয়েরা কোথায় যায়, কী করে সেদিকে খেয়াল রাখা। আজ এই নারীরা বারে গিয়ে মদ পান করে এমন কাণ্ড ঘটিয়েছেন। যে মেয়েকে তারা মেরেছেন সেই মেয়েটিও মাতাল ছিলেন।
হারুন অর রশিদ জানান, ভুক্তভোগী ওই নারী অভিযোগ করেছেন। অভিযোগের ভিত্তিতে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। লাইসেন্স ছাড়াই মদ বিক্রি করা বারের বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নেব।
এদিকে মারধরের শিকার রিতা আক্তার সুমি সাংবাদিকদের বলেন, আমি ও আমার এক বন্ধু ওই রেস্টুরেন্টে খেতে গিয়েছিলাম। খাওয়ার একপর্যায়ে টয়লেটে গিয়ে দেখি চার মেয়ে একসাথে টয়লেটে ঢুকছে। রেস্টুরেন্টের ম্যানেজারকে এ বিষয়টি বলার পর তারা ওই মেয়েদের বের করে দেয়। পরে রেস্টুরেন্ট থেকে বের হওয়ার সময় তারা আমার ওপর হামলা চালায়।
তিনি বলেন, আমাকে চড়-থাপ্পড় দিতে পারত। কিন্তু রাস্তার মধ্যে আমার কাপড় খুলে ফেলে তারা। আমাকে মারধর করে। আমি তাদের সঠিক বিচার চাই। রাস্তায় একটা মেয়ে হয়ে আরেকটা মেয়ের কাপড় খুলে ফেলতে পারে না।