সম্প্রতি অভিনয়ে কারণে নানা ধরনের সমস্যার সন্মুখীন হতে হয় তারকাদের।যদিও অভিনয়ের প্রয়োজনে তাদের অনেক কিছু করতে হয়।তবে অনেক ক্ষেত্রে তাদের মধ্যে এক ধরনের ভয়ে কাজ করে।বিষয়টি নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন লেখিকা মিলি সুলতানা হুবহু পাঠকদের জন্য নিচে দেওয়া হলো।
ব্যাপক সমালোচিত “রুপান্তর” নাটক নিয়ে মুল অভিনেতা ফারহান আহমেদ জোভান যে ভয় পেয়েছেন সেটা তার মাফ চাওয়ার ঘটনা দেখে বোঝা গেল। ভয় পেয়েছে ওয়ালটনও। জোভানের ক্ষমা চাওয়ার বিষয়টি ভালো লাগলো না। ট্রান্সজেন্ডারের অভিনয় করে ফেসবুকের বিপ্লবীদের চোখে তিনি ম্যাসিভ ক্রাইম করে ফেলেছেন। সেই ক্রাইমের জন্য তাকে নাকে খত দিতে হবে। দুইহাতে কান ধরে দুইশো বার তাকে ওঠবস করা লাগবে। ফেসবুকের বিপ্লবীদের এই স্বপ্ন অবশ্য জোভান পূরণ করে দিয়েছেন।”রুপান্তর’ দেখার আগে কতকিছু মনে হয়েছিল। না জানি জোভান সামিরা কি কেলেংকারী ঘটিয়েছেন তারাই জানেন। কিন্তু নাটকটি দেখতে বসে খারাপ কিছু খুঁজে পেলাম না। ট্রান্সজেন্ডাররা আমাদের সমাজেরই অংশ। সমাজে সাবলীলভাবে বেঁচে থাকার অধিকার তাদের আছে। তাদের জীবনধারা নিয়ে কেউ যদি নাটক নির্মাণ করেন সেটা কেন অন্যায়ের চোখে দেখা হবে?একটা কমন ইস্যুকে বিতর্কিত করার হীন উদ্দেশ্য এভাবে প্রকাশ হয়ে পড়লো। অভিনেতা অভিনেত্রীসহ পরিচালকের বিরুদ্ধে মামলা করে দেয়া হল। আজব ব্যাপার!! যিনি মামলা করেছেন সেই আইনজীবীর শিক্ষার মান কতটা সম্মানের পর্যায়ে সেটা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। কেন সেই আইনজীবীর মনে হল ট্রান্সজেন্ডার ইস্যু আমাদের সমাজের জন্য ক্ষতিকর??হীনমন্যতার খোলস থেকে উনি বেরিয়ে আসতে পারেননি।
বাঙালি সবসময় হুজুগে মাতামাতিতে সিদ্ধহস্ত। কোনো কিছু না বুঝেই নতিজায় পৌঁছে যায়। ঘুমের ঘোরেই বিচারকের চেয়ারে বসে পড়ে বাঙালি। এই নাটকে জোভান চমৎকার অভিনয় করেছেন। তার গেটআপও যথেষ্ট সুন্দর ছিল। শাড়ি, কপালে টিপ, গলায় পুঁতির মালা, হাতে চুড়ি, নাকে নথ, কানে দুল, চোখে গাঢ় কাজল, মাথায় পরচুল, হাতে নেইলপলিশ ইত্যাদিতে জোভানকে ট্রান্সজেন্ডারের চরিত্রে ভীষণ সাবলীল মনে হয়েছে। তার ডায়লগ ডেলিভারিও চমৎকার ছিল। একটা ন্যাচারাল জিনিসকে কেন্দ্র করে তারা উগ্র আচরণ করেছে। যাইহোক পুরো নাটকটি দেখলাম। যদিও ইউটিউব থেকে এই নাটক সরিয়ে নেয়া হয়েছে। আমি মনে করি “রুপান্তর”-এ ট্রান্সজেন্ডারকে প্রমোট করা হয়নি। তৃতীয় লিঙ্গের অধিকারীরা আমাদের সমাজের অংশ। ওদের সাথে লিঙ্গ বৈষম্যমূলক আচরণ করা বন্ধ হোক। যে কারণ দেখিয়ে ইউটিউব থেকে নাটকটি নামিয়ে নেয়া হয়েছে তা কোনো মেক সেন্স করেনা।