সৌদি আরবে তিন-চারবার বিক্রি হচ্ছে বাংলাদেশি নারী শ্রমিক।এজেন্সি থেকে কফিল, কফিল থেকে আবারও স্থানীয় বাসিন্দা। চলছে অমানবিক নির্যাতন, পাঠানো হচ্ছে কারাগারে। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, এতোকিছুর পরও রিয়াদে নিষ্ক্রিয় বাংলাদেশ দূতাবাস।
সৌদি আরবে নির্যাতন ও নিষ্ঠুরতার চক্রে আটকে পড়া বাংলাদেশি নারী শ্রমিকদের জীবন। যশোরের রীমা আক্তার জীবিত ফিরে এসেছেন, কিন্তু সৌদি কফিল ও রিক্রুটিং এজেন্সির হাতে এখনো ১৪-১৫ জন বাংলাদেশি নারী জিম্মি।
মানব পাচারকারী রিক্রুটিং এজেন্সি ও দালালদের কবলে সৌদি আরবে কারাগারে থাকা ছেলেকে নিয়ে উদ্বিগ্ন মা নাজিরা বেগম। বগুড়া থেকে রাজধানীতে এসে ছেলের মুক্তির জন্য দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন তিনি। হতভাগ্য মা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়েও আবেদন করেন।
নাজিরা বলেন, ‘দালালের খপ্পরে পড়ে বিদেশ যায়। আট মাস ধরে ছেলের কথা শুনি না। অনেকদিন যাবত ছেলে মা বলে ডাকে না। খুব খারাপ লাগছে।’
অভিবাসন কর্মীরা বলছেন, রিক্রুটিং এজেন্সিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না হওয়া ও নিয়োগকর্তা সৌদি নাগরিকদের কোনও জবাবদিহিতা না থাকায়, দেশটিতে বাংলাদেশি শ্রমিকদের ওপর নির্যাতন বেড়েই চলছে।
ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন ফর মাইগ্রেশনের মাইগ্রেশন নীতির প্রধান ঈশিতা শ্রুতি বলেন, নারী ও পুরুষের অভিবাসনের প্রক্রিয়া ভিন্ন। তাই তাদের প্রত্যাবর্তন ও পুনর্বাসন প্রক্রিয়াও ভিন্ন। প্রকল্পটি সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত এবং তাদের পরিবারের সাথে সংযোগ স্থাপন করবে। যাতে তাদের চারপাশের বৈষম্য চিহ্নিত করা যায়। বিশেষ করে নারী শ্রমিকরা।
ব্র্যাকের মাইগ্রেশন ওয়েলফেয়ার সেন্টারের ব্যবস্থাপক আল আমিন নয়ন বলেন, যেসব নিয়োগকর্তা আমাদের দেশে নারী গৃহকর্মীদের নির্যাতন করছেন তাদের কোনোভাবেই কালো তালিকাভুক্ত করা যাবে না।
প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী শফিকুর রহমান চৌধুরী বলেন, এ অবস্থার উন্নতি হয়েছে। সৌদি আরবে নারী শ্রমিকদের সুরক্ষার জন্য দুটি সেফ হোম রয়েছে। এ ছাড়া দেশে ফিরে আসা শ্রমিকদের পুনর্বাসনের জন্য আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করা হচ্ছে। নির্যাতিতদের পুনর্বাসনে ৩.৭ মিলিয়ন ডলারের প্রকল্প শিগগির চালু হবে। সূত্র : সময় সংবাদ