চুনারুঘাট উপজেলায় প্রতিদিন ১৮ ঘণ্টা লোডশেডিং হচ্ছে। উপজেলায় বিদ্যুতের চাহিদা পূরণ না হওয়ায় এক সপ্তাহ ধরে লোডশেডিংয়ের চাপ সহ্য করতে হচ্ছে গ্রাহকদের। হবিগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন ফেসবুকে এক ভিডিও বার্তায় শোক প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ থেকে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বিদ্যুৎ যাচ্ছে। আর আমরা হবিগঞ্জবাসী বিদ্যুৎ পাচ্ছি না। হবিগঞ্জের তিন সংসদ সদস্যকে নিয়ে মহাসমাবেশের ডাক দিবেন বলে হুঁশিয়ারি দেন সুমন।
পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির চুনারুঘাট কার্যালয় সূত্র জানায়, চুনারুঘাট উপজেলার প্রায় ৮০ হাজার গ্রাহককে দেওরগাছ ও রাজার বাজার সাবস্টেশন দিয়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়। আবাসিক, বাণিজ্যিক, শিল্প এবং কৃষি গ্রাহকদের জন্য দৈনিক বিদ্যুতের প্রয়োজন ১৫ থেকে ১৬ মেগাওয়াট। কিন্তু সাবস্টেশন দুটিতে দৈনিক মাত্র ৭ থেকে ৮ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পাওয়া যাচ্ছে। এ অবস্থায় চরম সংকটে রয়েছে বিদ্যুৎ বিভাগ। তারা কি বাসিন্দাদের বিদ্যুৎ দেবে নাকি উপজেলার চা শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে শিল্প খাতে বিদ্যুৎ দেবে। এছাড়া বাণিজ্যিক ও কৃষি বিভাগ রয়েছে। তাই বাধ্য হয়ে তারা উপজেলার ৬টি ফিডার কেটে বিদ্যুৎ সচল রাখতে বাধ্য হচ্ছেন। এতে চা বাগানে প্রতিদিন ৬ থেকে ১০ ঘণ্টা, উপজেলা সদরে প্রতিদিন ১২ থেকে ১৮ ঘণ্টা এবং গ্রামগুলোতে প্রতিদিন ৬ থেকে ৮ ঘণ্টা বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হচ্ছে। ফলে গ্রামাঞ্চলে ১৮ ঘণ্টা এবং উপজেলায় শহরে ৬ ঘণ্টা লোডশেডিং হচ্ছে। ৬ ঘণ্টা বিদ্যুৎ সরবরাহ থাকলেও তা আসা-যাওয়ার মধ্যে। এতে জনগণের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। হাসপাতাল ও স্কুলগুলো সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
চুনারুঘাটের ব্যবসায়ী আবুল কালাম আজাদ বলেন, আমাদের পার্শ্ববর্তী জেলা সদরসহ বিভিন্ন উপজেলায় লোডশেডিং সহনীয় পর্যায়ে রয়েছে। কিন্তু চুনারুঘাটে লোডশেডিংয়ের মাত্রা ভয়াবহ। ফলে ব্যবসায়ীদের জেনারেটরের ব্যবস্থা করতে হয়। একটি অতিরিক্ত খরচ আছে।
চুনারুঘাট সদর ইউনিয়নের বাসিন্দা মানিক মিয়া জানান, লোডশেডিংয়ের কারণে শিশুদের অনেক কষ্ট হচ্ছে। প্রচন্ড গরমে চার্জ ফ্যান কিনেও শান্তি পাচ্ছি না।
চুনারুঘাট পল্লী বিদ্যুৎ বিভাগের উপ-মহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) জুনাইদুর রহমান বলেন, ১৬ মেগাওয়াট চাহিদার বিপরীতে আমরা মাত্র ৭ থেকে সাড়ে ৮ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পাচ্ছি। তাই বাধ্য হয়ে ৬ থেকে ১৮ ঘণ্টা লোডশেডিং করতে হচ্ছে। আর ফিডার কেটে বারবার বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করতে হচ্ছে।