Thursday , May 16 2024
Breaking News
Home / Countrywide / গভীর রাতে বন্ধুকে নিয়ে আপন বোনের ঘরে ঢুকে ভাই, অত:পর

গভীর রাতে বন্ধুকে নিয়ে আপন বোনের ঘরে ঢুকে ভাই, অত:পর

গাজীপুরের কাপাসিয়ায় ঋণের টাকা পরিশোধ করতে আপন বোনের বাসায় বন্ধুকে নিয়ে চুরি করতে গিয়েছিলেন। কিন্তু মেয়েটি বিষয়টি বুঝতে পেরে ভয়ে চিৎকার করলে ভাই তার হাত-পা বেঁধে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। এ ঘটনায় তার ভাইসহ তার বন্ধুকে গ্রেফতার করেছে গাজীপুর পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।

শুক্রবার (৫ এপ্রিল) বিকেলে গাজীপুরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাকসুদুর রহমান এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানান।

এর আগে, গত ২ এপ্রিল সকাল সাড়ে ৮টায় কাপাসিয়া উপজেলার পূর্ব ভিটিপাড়া গ্রামের দক্ষিণ কোরিয়া প্রবাসী মো. মোশারফ হোসেনের স্ত্রী শাহনাজ বেগম শিমুর মরদেহ নিজ বসতঘর থেকে উদ্ধার করা হয়।

এ ঘটনায় নিহতের পিতা সিরাজ উদ্দিন বেপারী বাদী হয়ে কাপাসিয়া থানায় অজ্ঞাত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় নিহত শাহনাজ বেগম শিমুর ছোট ভাই কামরুজ্জামান রুবেল ও শেরপুর জেলার শ্রীবরদী থানার মামদাবাড়ি গ্রামের আসকার আলীর ছেলে ছেলে মো. মিনাল ওরফে মিস্টারকে গ্রেফতার করে পিবিআই।

জানা যায়, ঋণ পরিশোধ করতে বন্ধুর সঙ্গে বোনের বাড়ি থেকে চুরির পরিকল্পনা করে রুবেল। এ সময় বোন চিৎকার করলে তার হাত-পা বেঁধে শ্বাসরোধে হত্যার পর ঘরে থাকা টাকা ও স্বর্ণালংকার লুট করে নেয় তারা। পরে মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ৮টার দিকে কাপাসিয়া উপজেলার সিংহশ্রী ইউনিয়নের নিজ বসতঘর থেকে প্রবাসীর স্ত্রী শাহনাজ বেগম শিমুর মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

গাজীপুর পিবিআইয়ের উপ-পরিদর্শক ও তদন্ত কর্মকর্তা মো. সালেহ ইমরান জানান, শিমুরের ছোট ভাই রুবেল গাজীপুরের একটি আবাসিক হোটেলে কাজ করতেন। পাঁচ মাস আগে রুবেল হোটেলের চাকরি ছেড়ে দিলে আর্থিক সংকটে পড়ে অনেকের কাছ থেকে টাকা ধার নেন। পরে ঋণ পরিশোধ করতে গিয়ে শিমুর বোনের বাড়িতে চুরির পরিকল্পনা করে। এরই ধারাবাহিকতায় অপর আসামি মো. মিনালের সঙ্গে যোগাযোগ করে।

পরবর্তীতে রুবেল ও মিনাল গভীর রাতে শাহনাজ আক্তারের ঘরের জানালা খুলে চুরির উদ্দেশে ভেতরে প্রবেশ করে। পরে তাদের সাড়াশব্দ পেয়ে শিমু চিৎকার দিলে মিনাল ছুরি দেখিয়ে ভয় দেখায় এবং রুবেল শিমুর হাত রশি দিয়ে বেঁধে ফেলে। একপর্যায়ে মিনালের সঙ্গে শিমুর ধস্তাধস্তি হলে মিনাল শিমুর মুখে আঘাত করে এবং শিমুর বুকের ওপর বসে গলা চেপে ধরে। এরপর আসামি রুবেল টেবিলের ড্রয়ার থেকে চাবি নিয়ে আলমারি খুলে স্বর্ণালংকার, টাকা ও মোবাইল নিয়ে শিমুর হাত ও পা-বেঁধে রেখে চলে যায়।

ঘটনার পরদিন সকালে রুবেল ছুরি, প্লাস ও মোবাইল সেট ভেঙ্গে ঝাজার এলাকায় সেতুর নিচে খালের পানিতে ফেলে দেয় এবং লুট করা স্বর্ণালঙ্কার দেড় লাখ টাকায় বিক্রি করে। এ ঘটনায় রুবেলকে আটকের পর স্বর্ণ বিক্রির ৫৭ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়। এরপর তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী গাজীপুর মহানগরীর ঝাজর কবরস্থান ব্রিজের নিচে খাল থেকে প্লাস, সুইচ গিয়ার নাইফ ও চুরি যাওয়া মোবাইল সেটের টুকরো টুকরো অংশ উদ্ধার করা হয়।

গাজীপুর পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাকসুদুর রহমান জানান, নিহতের ভাই রুবেল ও মিনাল স্বেচ্ছায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। স্বর্ণ বিক্রির অবশিষ্ট টাকা ও স্বর্ণ উদ্ধারে অভিযান চলছে।

About Nasimul Islam

Check Also

নতুন করে রিজার্ভ চুরির সংবাদ, যা জানাল বাংলাদেশ ব্যাংক

ভারতীয় একটি পত্রিকায় বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ফের রিজার্ভ চুরির প্রতিবেদন প্রকাশের পর বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *